ঢাকা যেন এক থমকে যাওয়া শহর

রাহুল শর্মা, ঢাকা
আপডেট : ২৮ জুন ২০২৩, ১৫: ৪৭
Thumbnail image

মেঘলা আকাশ। থেমে থেমে ঝরছে বৃষ্টি। কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি, আবার কখনো ঝুম বৃষ্টি। ঈদের ছুটিতে শহর ফাঁকা। তাই রাস্তায় নেই যানজট। মোড়ে মোড়ে নেই সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশার জটও। নেই ট্রাফিক সিগন্যালের বিধিনিষেধ। অনেকেই মূল সড়ক দিয়ে কোরবানির পশু নিয়ে যাচ্ছেন। তবে এতেও নেই তেমন কোলাহল। বৃষ্টি আর ঈদের ছুটিতে এই শহর যেন থমকে আছে। বলা যায়, এ যেন অচেনা এক ঢাকা।

আজ বুধবার ঈদুল আজহার আগের দিন রাজধানীর মগবাজার, কাকরাইল, বিজয়নগর, সেগুনবাগিচা, মতিঝিল, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ফার্মগেটসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।

রাজধানী মূলত ফাঁকা হতে শুরু করে গত সোমবার বিকেল থেকে। অফিস শেষে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটতে থাকেন নাড়ির টানে। কেউ কেউ আবার গতকাল মঙ্গলবার সকালে বাড়ির পথে রওনা দিয়েছেন। তবে খানিকটি ভিন্ন চিত্র গরুর হাটগুলোর সামনে। এখানে মানুষ আর গাড়ির জটলা চোখে পড়েছে।

সকালের দিকে ব্যক্তিগত কিছু যানবাহন ছাড়া রাজধানীতে চলেছে একেবারে কমসংখ্যক গণপরিবহন। সড়কে মাঝেমধ্যে দুই-একটি বাস দেখা যাচ্ছে। যেসব বাস চলছে, তাতে যাত্রী নেই বললেই চলে।

রাস্তায় রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেট কারের সংখ্যাও খুব কম। মগবাজার থেকে মতিঝিলগামী একটি বাসের চালক স্বপন মিয়া বলেন, ‘যাত্রী নেই বললেই চলে, বাড়ি যামু না তাই গাড়ি নিয়া বাইর হইছি। রাস্তায় জ্যাম নাই। গাড়ি চালাইয়া ভালো লাগতাছে। এমন যদি সব সময় থাকত।’

একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন মোটরবাইকে রাইড শেয়ার করা সোলায়মান হোসেন। তিনি বলেন, ‘সাধারণত কল্যাণপুর থেকে মগবাজারে আসতে দেড় ঘণ্টার মতো লেগে যায়। আজ এ পথ এসেছি মাত্র ২০ মিনিটে।’

ব্যস্ত ঢাকার এ যেন অচেনা রূপ। রাজধানীর মতিঝিল এলাকা থেকে তোলা। ২৮ জুন ২০২৩তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল থেকেই মূলত ঢাকা ফাঁকা হতে শুরু করে। আজ আরও বেশি ফাঁকা লাগছে। সব রাস্তা একদম খালি। রাস্তায় মানুষের আনাগোনাও একদমই নাই বললে চলে।’

শুধু গাড়ির চালক নয়, ঈদের দিনে অলস সময় পার করছেন ট্রাফিক পুলিশও। রাস্তা ফাঁকা থাকায় বেশির ভাগ সিগন্যালের ট্রাফিক পুলিশের কাজ নেই। তবু তাঁদের থাকতে হচ্ছে নির্দিষ্ট পয়েন্টের পুলিশ বক্সে।

কাকরাইল মোড় সিগন্যালের পুলিশ বক্সে কথা হয় ট্রাফিক পুলিশ আশরাফ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকেই গাড়ির তেমন চাপ নেই। তাই বলা যায় একধরনের অলস সময় পার করছি।’

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় মহল্লার পাশে গুটি কয়েক কিশোরকে মূল সড়কের পাশে চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে। অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ থাকলেও কিছু কিছু মিষ্টি ও খাবারের দোকান এখনো খোলা।

বাংলামোটর মোড়ে কথা হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত খায়ের শেখের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘অফিস ডিউটি আছে, তাই এবার বাড়ি যাচ্ছি না। কিন্তু এখন কোনো গণপরিবহন পাচ্ছি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ রকম পরিবেশ ঢাকায় খুব কমই দেখা যায়। কোথাও কোনো কোলাহল নেই। ঢাকা একদমই ফাঁকা। এ যেন অন্যরকম অনুভূতি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত