১৯ কোটি টাকার সেতুতে হচ্ছে না সংযোগ সড়ক

রাতুল মণ্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর)
প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১: ১৬
Thumbnail image
গাজীপুরের শ্রীপুরে মাটিকাটা নদীর ওপর সংযোগ সড়ক ছাড়া সেতু। সম্প্রতি বরমী বাজার এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

গুরুত্বপূর্ণ বরমী-গফরগাঁও আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচলের জন্য গাজীপুরের শ্রীপুরে মাটিকাটা নদীতে রয়েছে সরু একটি সেতু। তবে বরমী বাজারের পাশের এ সেতুতে দুটি গাড়ি পাশাপাশি যেতে না পারায় দুই প্রান্তে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। এ ভোগান্তি দূর করতে প্রায় ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ৯৭ দশমিক ৩৪ মিটারের একটি সেতু। কিন্তু জমি অধিগ্রহণে জটিলতার কারণে এক বছর ধরে আটকে রয়েছে সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ। ফলে কোনো সুফল পাচ্ছেন না এই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে সেতুটির নির্মাণ শুরু করে শেষ হয় ২০২৩ সালে। সেতুর পাইটালবাড়ি প্রান্তে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের ১ একর ৩৭ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এসব জমিতে ১৭টি পরিবার বসবাস করছে। তাঁরা অধিগ্রহণে জটিলতার কারণে ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না, যে জন্য সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বরমী বাজার অংশে ব্যবসায়ীরা সেতুতে কাঠ মজুত করে রেখেছেন। অনেকেই সেতুর ওপর বসে আড্ডা দিচ্ছেন। অন্যদিকে পাইটালবাড়ি অংশে হেঁটে চলাচলের জন্য বেশ কিছু বালুর বস্তা সেতুর গোড়ায় ফেলা হয়েছে। সেখানে সড়ক নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণ করা জমিতে রয়েছে ঘনবসতি।

স্থানীয় বাসিন্দা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ভূমি অধিগ্রহণ কর্তৃপক্ষ স্থানীয় জমির মালিকদের কাগজপত্র ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে। সে কারণে তাঁরা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না। এ জন্য সংযোগ সড়কও নির্মাণ করা হচ্ছে না।

এ নিয়ে কথা হলে শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ের সার্ভেয়ার মো. মামুনুর রশীদ জানান, সেতুর পাইটালবাড়ি অংশের সড়কের জন্য নির্ধারিত জমি সরকারের অর্পিত সম্পত্তির ‘ক’ গেজেটের। এ জন্য সেখানে অবৈধভাবে থাকা ব্যক্তিদের অধিগ্রহণের টাকা দেওয়া হচ্ছে না। সেখানে বসতবাড়ি গড়ে তোলা ব্যক্তিরা শুধু বাড়িঘরের ক্ষতিপূরণ পাবেন।

তবে জমির বাসিন্দাদের একজন মো. লিটন মিয়া বলেন, ‘ইউনিয়ন ভূমি কর্তৃপক্ষ ভুল করে জমিটি অর্পিত হিসেবে ঘোষণা করে। আমাদের সব কাগজপত্র ঠিক থাকলেও ভূমি কর্তৃপক্ষ ভুল করছে, যে কারণে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এ জটিলতা না কাটলে, অধিগ্রহণের টাকা না পেলে মালিকেরা তাঁদের ভূমি ছেড়ে যাবেন না।’

পাইটালবাড়ি গ্রামের নবী হোসেন বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণের টাকা না পাওয়া পর্যন্ত আমরা বাড়িঘর ছেড়ে কোথাও যাব না। আমাদের জমির বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও এই অফিস থেকে ওই অফিসে ঘোরাঘুরি করতে হচ্ছে।’

সওজের গাজীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শরিফুল আলম বলেন, ‘ভূমি অধিগ্রহণের সম্পূর্ণ টাকা আমরা ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় জমা দিয়েছি। জমির মালিকদের কাগজপত্রের জটিলতার কারণে তাঁদের টাকা দেওয়া হয়নি। জটিলতা শেষ হলে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে।’

যোগাযোগ করা হলে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে জটিলতা শেষ করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে সংযোগ সড়ক নির্মাণের নির্দেশনা দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত