Ajker Patrika

মাইগ্রেশনের দাবিতে নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা অনশনে

উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
মাইগ্রেশনের দাবিতে নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা অনশনে

রাজধানীর উত্তরায় মাইগ্রেশনের দাবিতে ও প্রতারণা করে শিক্ষার্থীর ভর্তির অভিযোগে আমরণ অনশনে বসেছেন ‘নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের’ শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের ১৪/বি সড়কের ৭ নম্বর ভবনের নাউটিংগেল মেডিকেল কলেজটির চেয়ারম্যান ও এমডি হুমায়ন জামান চৌধুরীর বাসার সামনে এ অনশনে বসেছেন ৪৫ শিক্ষার্থী। 

এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘আশুলিয়ার নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এমডির প্রতারণা আর না, আর না’, ‘নাইটিংগেলের প্রতারণা আর না, আর না’, ‘নাইটিংগেল নামক কারাগার থেকে মুক্তি চাই, মুক্তি চাই’ সহ নানা শ্লোগান দেন। 

হাসপাতালটির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রোকেয়া আক্তার লিজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের এমডি হুমায়ন জামান চৌধুরী প্রতারক। উনি আমাদের ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে আমাদের ৫২ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করেছেন। পরে জানতে পেরেছি, হাসপাতালটি ভুয়া। এটির বিএমডিসি অনুমোদন নেই। যার কারণে আমরা বার বার মাইগ্রেশনের জন্য বলছি। কিন্তু তবুও তাঁরা মাইগ্রেশন দিচ্ছে না।’ 

লিজা আরও বলেন, ‘পরবর্তীতে আমরা হাইকোর্ট থেকে মাইগ্রেশনের রায় নিয়ে আসছি। পরে জানতে পারলাম, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে কর্তৃপক্ষ একটি রিট করেছে। রিট উঠানো ছাড়া তারা মাইগ্রেশন দিতে পারবে না। এখন আমরা চাই, দ্রুত রিটটি তুলে আমাদেরকে মাইগ্রেশন দেওয়া হোক।’ 

মাইগ্রেশনের দাবিতে আজ মঙ্গলবার নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান ও এমডি হুমায়ন জামান চৌধুরীর বাসার সামনে শিক্ষার্থীদের অনশনআরেক ছাত্র আরিফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজটি স্থগিত করা হয়েছে। ওনারা আমাদেরকে একটি রিটের মাধ্যমে ভর্তি করেছে। এটি তারা আমাদের জানায়নি। পরে আমরা জানতে পারি।’ 

আরিফ আরও বলেন, ‘আমরা প্রতারিত হয়েছি। আমরা চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। অথচ নাইটিংগেলে কোনো ডাক্তার নেই। শতকরা এক শতাংশ মেডিকেল যন্ত্রাংশও নেই। এ ছাড়া কোনো রোগী নেই। যার কারণে চাচ্ছি অন্য মেডিকেলে আমাদের মাইগ্রেশন করা হোক।’ 

নাইটিংগেল মেডিকেলের শিক্ষার্থী ইমরান খান ইমন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভর্তির সময় আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বিএমডিসির সব কাগজপত্র দেখানো হয়। গ্রাম থেকে এসেছি বিধায় তাঁদের এত কিছু বুঝতে পারিনি। আমরা আজ আড়াই বছর ধরে তাঁদের প্রতারণার শিকার হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি। আর আমরা কত ঘুরব। এখন আমরা এর সমাধান চাই।’ 

শিক্ষার্থী ইমন আরও বলেন, ‘আমাদের জীবন এখন ধ্বংসের পথে। আর এদিকে এমডি অনেক চালাকি-বাটপারি করছে। বিনাশর্তে আমরা মাইগ্রেশন চাই। আমাদের এক দফা এক দাবি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা অনশন ভাঙব না।’

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আসা অভিভাবক অভিভাবক মাশফুর হায়াত ভূইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক কলেজের কোনো ভিত্তি নেই। ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সংসদে বলেছেন- নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজ বন্ধ। এখন ছাত্ররা কোথায় যাবে? মেডিকেল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশন করে দিচ্ছে, সরকারও কিছু বলছে না।’ 

মাশফুর হায়াত বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আড়াই বছর যাবৎ ঘুরছে। কিন্তু মাইগ্রেশন দিচ্ছে না। বলছে কোর্টে রিট করেছে। রিট তোলা ছাড়া মাইগ্রেশন দেয়া সম্ভব না। যার কারণে প্রতিকারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে।’ 

সর্বশেষ বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত হাসপাতালটি চেয়ারম্যান ও এমডির বাস ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। এদিকে সকল প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত