ঢাবির টিএসসিতে চাকরি: পরীক্ষার ফল ঘোষণার পর কারণ ছাড়াই পুনর্নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

ফারুক ছিদ্দিক, ঢাবি 
প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০: ৪৬
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯: ৫৭

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদের জন্য দুটি জাতীয় দৈনিকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এরপর নির্ধারিত সময়ে লিখিত ও ব্যবহারিক পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়। কিন্তু ফলাফলে প্রথম স্থান অধিকারকারী প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। কোনো কারণ না দেখিয়ে আবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে প্রশাসন।

আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে জানা গেছে, পদটির জন্য ২২টি দরখাস্ত জমা পড়ে। এর মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে ১১ জন প্রার্থীর লিখিত ও ব্যবহারিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। দুই পরীক্ষার সমন্বয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন এস এম পারভেজ নামে এক প্রার্থী। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেন যথাক্রমে সুনন্দা রায় কাজল ও আখতারুজ্জামান। একই সময়ে লিখিত ও ব্যবহারিক পরীক্ষা নিয়ে টিএসসির কেয়ারটেকার পদে নিয়োগ পান নজরুল ইসলাম পাটোয়ারী। নজরুল ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট কাজে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে নিয়োগ না দিয়ে আবার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে টিএসসির একাধিক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানান, টিএসসির তৎকালীন পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সৈয়দ আলী আকবরের পছন্দের প্রার্থী না থাকায় নিয়োগ দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে গড়িমসি করা হয়। এখন নতুন পরিচালক খোরশেদ আলম তাঁর পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। গত ২০ অক্টোবর ওই পদে নতুন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক এবং কেয়ারটেকার পদে নিয়োগের জন্য গঠিত সিলেকশন বোর্ডের আহ্বায়ক ছিলেন টিএসসির তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সৈয়দ আলী আকবর। সদস্য ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, হিসাব পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং টিএসসির উপপরিচালক ফারজানা বাসার। এ ছাড়া পর্যবেক্ষক হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতির সভাপতি শেখ মোহাম্মদ সরোয়ার মোর্শেদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল আমিন।

পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীকে নিয়োগ না দিয়ে আবার বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে টিএসসির তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সৈয়দ আলী আকবর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লিখিত ও ব্যবহারিক পরীক্ষার পরে উপাচার্যের (আখতারুজ্জামান) কাছে নোট পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি চূড়ান্ত করেননি। এরপর তো আমার মেয়াদ শেষ হয়। তবে এখন কী হয়েছে বলতে পারব না।’

টিএসসির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত পরিচালক খোরশেদ আলমের কাছে বিষয়টির কারণ জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেহেতু নিয়োগ দেওয়া হয়নি, তাই উপাচার্য আখতারুজ্জামান স্যার নোট দিতে বলছিলেন। নোট দেওয়ার পরে রেজিস্ট্রার ও জনসংযোগ দপ্তর হয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে।

অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের তালিকায় সিলেকশন বোর্ডের কারও স্বাক্ষর নেই বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাকসুদ কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আগের উপাচার্যের (আখতারুজ্জামান) সময়ে হয়েছে। আপনার (প্রতিবেদক) কাছে যে ডকুমেন্টগুলো রয়েছে, সেগুলো আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান, খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত