Ajker Patrika

মুন্সিগঞ্জে হত্যার হুমকি পেয়ে দুই শিশু নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে পরিবার

সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি  
মুন্সিগঞ্জ সদর থানা। ছবি: সংগৃহীত
মুন্সিগঞ্জ সদর থানা। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জ সদরে অবৈধ কারেন্ট জাল ও জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এক পরিবারের চার সদস্য ৪ দিন ধরে গ্রাম ছাড়া। ঘটনাটি ঘটেছে সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের পশ্চিম কাজী কসবা বদরপাড়া গ্রামে।

এতে ভুক্তভোগী অটোরিকশা চালক মো. রানা (৩৮), তাঁর ছেলে আমির হামজা (৬), মেয়ে খাদিজা (৪) ও স্ত্রী হামিদা বেগমকে (২৫) নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

এ ঘটনায় গতকাল শনিবার (২ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী মো. রানার মা নাসিমা বেগম।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলা রামপালের পশ্চিম কাজী কসবা বদলপাড়া নাসিমা বেগমের আত্মীয় তাঁরা মিয়ার তিন ছেলে মো. রতন মিয়া (৪০), আরমান (৩২), ইকবাল (২৪), ইমরান (২৮)। দুই পরিবারের মধ্যে আগে থেকেই জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। এর মধ্যে রতন মিয়ার মালিকানাধীন অবৈধ কারেন্ট জাল ফ্যাক্টরি আছে বদলপাড়া গ্রামে। জালের ফ্যাক্টরিতে গত ৩০ অক্টোবর দুপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালায়।

এতে নাসিমা বেগমের বড় ছেলে মো. রানাকে পুলিশের এজেন্ট বলে অভিযোগ করে তাঁরা মিয়ার পরিবার। একই দিন রাত ৯টার দিকে পরিকল্পিতভাবে রানাকে জালের ফ্যাক্টরির সামনে নিয়ে গালিগালাজ, এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও লাথি মেরে জখম করে। পরে বড় ছেলেকে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মারতে আসে। এতে ওই দিন রাতেই প্রাণ রক্ষার্থে নাসিমা বেগমসহ তাঁর দুই ছেলে নিশাদ ও সাফাদ বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। বর্তমানে বাড়িতে নাসিমা বেগমের বড় ছেলে মো. রানা, তাঁর স্ত্রী ও তাঁদের দুই সন্তান নিয়ে আছেন।

এদিকে রামপাল ইউনিয়নে একাধিক বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রতন মিয়ার একটি অবৈধ কারেন্ট জালের কারখানা রয়েছে। তাঁর ভাই ইমরান জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য হওয়ায় এলাকায় তাঁদের প্রভাব রয়েছে। ইমরান ছাত্রলীগ করার সুবাদে সাবেক সংসদ সদস্য ও রামপাল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সঙ্গে তাঁর পরিবারের সখ্য রয়েছে। তাই তাঁদের এলাকায় কেউ বিচার সালিস করতে সাহস পায় না।

অভিযোগকারী নাসিমা বেগম (৫৫) বলেন, ‘জমি নিয়ে তাঁরা আমাদের বিরুদ্ধে তিন বছর আগে একটি মামলা দায়ের করে। আমার বড় ছেলেকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। শুক্রবার আমার ছেলেকে বাসায় না পেয়ে বাড়িতে ভাঙচুর, ছাদের গাছপালা ভেঙে পানির লাইন কেটে দেয় ও ঘরে তালা লাগিয়ে দেয় তাঁরা।

আরও বলেন, ‘তাঁরা মোবাইল ফোনে আমার বড় ছেলেকে হুমকি দিয়ে বলে, ‘‘যদি তুই বা তোর পরিবারের কেউ বাড়িতে আসোছ, তাহলে তোদের সবাইকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলব।’ ভয়ে আমিসহ আমার ছেলে ও তাদের পরিবারের কেউই বাড়িতে যেতে পারছি না।’’

এ বিষয়ে মো. রানার স্ত্রী হামিদা বেগম (২৫) বলেন, ‘ওদের ভয়ে আমরা বাড়িঘর ছাড়া। আমার দুটি শিশু সন্তান নিয়ে চার দিন ধরে কষ্টে আছি। আমার স্বামীর কি অপরাধ করছে যে ওরা মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এর বিচার চাই।’

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মো. রতন মিয়া (৪০) বলেন, ‘আমি কেন ওদের বাড়ি থাকতে দেব না। আমি কাউকে হুমকি দিইনি। আমার ১২ বছরের ছেলেকে ওরা মারছে। এলাকাবাসী সবাই দেখছে।’

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

এনআইডির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের দায়িত্বে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

পদত্যাগ করব না, আলোচনা করে সমাধান করব: কুয়েট উপাচার্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত