কাজ হলে আগুন লাগতেই পারে: আবুল হাশেম

শাহরিয়ার হাসান, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে
প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২১, ১৬: ৫৩
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২১, ১৮: ৪৪

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকার সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সেজান জুসের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে নিতান্তই একটি দুর্ঘটনা বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবুল হাশেম। এ ঘটনার কোনো দায় তাঁর প্রতিষ্ঠান নেবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে আবুল হাশেম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগুনের ঘটনার দায় নেব না। এটা নিতান্তই একটি দুর্ঘটনা।’ তিনি বলেন, ‘এখানে একই সারিতে ছয়টি ভবনে ছয়টি ফ্যাক্টরি আছে। যে ভবনে আগুন লেগেছে, সেখানে পাঁচ–ছয় শ শ্রমিক কাজ করত। জীবনে বড় ভুল করেছি ইন্ডাস্ট্রি করে। ইন্ডাস্ট্রি করলে শ্রমিক থাকবে। শ্রমিক থাকলে কাজ হবে। কাজ হলে আগুন লাগতেই পারে। এর দায় কি আমার? আমি তো আর গিয়ে আগুন লাগাই নাই। এই দায় আমার না।’

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ৪২ মিনিটে রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকার ওই কারখানায় আগুন লাগে। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫২ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে একই ফ্লোর থেকে ৪৯ শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আগুনের এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে উদ্ধার কার্যক্রম চলার সময়েই বহু মানুষ মারা গেছে—এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পুলিশের সঙ্গে তাদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল আজকের পত্রিকাকে জানান, ভবনটিতে আগুন লাগার পর ভেতরে কর্মরত শ্রমিকদের বের হওয়ার জন্য কোনো সিঁড়ি ছিল না এবং নিচের প্রধান গেট আটকে দেওয়া হয়েছিল।

অগ্নিদগ্ধ কারখানাটির পঞ্চম তলায় সেমাই, সেমাই ভাজার তেল, পলিথিন; অন্য পাশে কারখানার গুদাম ছিল বলে শ্রমিকেরা জানিয়েছেন। কিছু কেমিক্যালও ছিল বলে তাঁরা জানান। এ ছাড়া কারখানাটির নিচতলায় পলিথিন তৈরির কারখানা, দ্বিতীয় তলায় টোস্ট-বিস্কুট, তৃতীয় তলায় জুস-লাচ্ছি, চতুর্থ তলায় ললিপপ ও চকলেট তৈরির কারখানা ছিল। কীভাবে এতে আগুন লাগল, তা এখনো জানা যায়নি। কারখানা এলাকায় এখনো উদ্ধারকাজ চলছে। কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট। 

তবে সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে বলছেন, ‘কোনো শ্রমিক সিগারেট খেয়ে ফেলে দিয়েছে। সেখান থেকে আগুন লাগতে পারে। যেহেতু নিচের তলায় কার্টন রাখা ছিল এবং বিভিন্ন ধরনের দাহ্য পদার্থ ছিল, তাই হয়তো আগুনের এই ভয়াবহতা।’

এক প্রশ্নের জবাবে আবুল হাশেম বলেন, ‘আমি এখনো ঘটনাস্থলে যাইনি। তবে আমার লোকজন সেখানে রয়েছে। যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁরা তো আমারই ছেলেমেয়ে। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত