উত্তরের ঈদ যাত্রা স্বস্তিদায়ক ও নিরাপদ হবে: সড়ক বিভাগের সচিব

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ২৩: ১৩

ঈদুল ফিতরে দেশের বৃহত্তম ময়মনসিংহ ও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের ৩২টি জেলার ঘরমুখী মানুষের ঈদযাত্রা নিরাপদ, নির্বিঘ্ন ও স্বস্তিদায়ক হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী। 

আজ শুক্রবার বিকেলে গাজীপুরে ঈদযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে জেলার বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভাওয়াল সম্মেলন কক্ষে বিকেল ৩টায় সভা শুরু হয়। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন—সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মঈনুল হোসেন, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি মাহফুজুর রহমান, সড়ক জনপদ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক মো. সাইফ উদ্দিন, গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আহমার উজ্জামান, গাজীপুর জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম, গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) আলমগীর হোসেন, সড়ক ও জনপদ বিভাগের গাজীপুরে নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার শরিফুল আলম, গাজীপুরের পোড়াবাড়ী র‍্যাব কমান্ডার মেজর জুন্নুরাইন বিন আলম, ডিজিএফআই, এনএসআইসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানগণ। সাংবাদিকদের মধ্যে মুজিবুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান টিটু ও এম. আসাদুজ্জামান সাদ বক্তব্য রাখেন। 

এছাড়াও সভায় বিআরটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো. মনিরুজ্জামান, জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ, পরিবহন ও মালিক সমিতি নেতৃবৃন্দ ও সুধীবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন। 

সভায় উত্তরাঞ্চলের ৩২টি জেলার মানুষের ঈদ যাত্রাকে নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে বিভিন্ন প্রস্তুতির কথা তুলে ধরা হয়। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই সভায় তাঁদের প্রস্তুতির বিশদ বিবরণ তুলে ধরে এবারের যাত্রা নিরাপদ করার জন্য সব সার্বক্ষণিক কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন। 

সভায় হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি বলেন, এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে মানুষের পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তি, ড্রোন, বডি ওন ক্যামেরা ব্যবহার করাসহ বিভিন্ন রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। 

জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ঈদযাত্রাকে সামনে নিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের জেলার কালিয়াকৈররে চন্দ্রা, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের শ্রীপুর মাওনাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যানজট নিরসন ও নিরাপদ যাত্রার জন্য সব রকম প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অবৈধ দখল উচ্ছেদ, ফুটপাত দখলমুক্ত করা হয়েছে, অবৈধ যান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে এবং এসব করতে পুলিশ সার্বক্ষণিক কাজ করছে। 

জিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়, বিআরটি প্রকল্পের সাতটি উড়াল সেতু চালু হওয়ার ফলে এবং মহাসড়কের সংস্কার ও মেরামত কাজ সম্পন্ন হওয়ায় এবারের ঈদযাত্রা অনেক স্বস্তিদায়ক হবে। অর্ধ সহস্র পুলিশ সদস্য, রেকারসহ পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করবেন। 

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক বলেন, ‘ঈদযাত্রাকে সামনে নিয়ে ৫ এপ্রিল থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে মোট আটজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। আইন অমান্য করলেই ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়া হবে। আমরা সকল বিভাগের সঙ্গে কাজের সমন্বয় সাধন করছি। আমরা এবারের ঈদযাত্রা নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক করব।’ 

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঈদযাত্রা নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক করার ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। তিনি এসব বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন। যেখানে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সচেতন, সেখানে আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। তাই ছুটির দিনেও সরেজমিনে খোঁজখবর নিতে এসেছি।’ 

এ সময় তিনি ঈদযাত্রার বিভিন্ন প্রস্তুতির বিভিন্ন বিষয়ে শুনে বলেন, ঈদের সময় রেকার, অ্যাম্বুলেন্স এবং ফায়ার সার্ভিসকে সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। মহাসড়কের অবৈধ যান চলাচল বন্ধ, ফুটপাত দখল এবং বাজার যেকোনো মূল্যে উচ্ছেদ করতে হবে। ঢাকা এবং গাজীপুরের লাখ লাখ মানুষ যেন নির্বিঘ্নে এবং নিরাপদে আপনজনদের কাছে যেতে পারেন সেটা নিশ্চিত করতে হবে। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গেল কয়েক বছর আমাদের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক ছিল। অন্য যেকোনো বাড়ির তুলনায় এবার আমাদের প্রস্তুতি অনেক ভালো। মহাসড়ক এবং সড়কের অবস্থাও অনেক উন্নত হয়েছে। ব্যবস্থাপনায় অনেক আধুনিকায়ন করা হয়েছে। এসব কারণে এবারের ঈদযাত্রা যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি স্বস্তিদায়ক ও নিরাপদ হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত