১০ দিন পর সেই পারিশার মোবাইল ফোন উদ্ধার করে দিল পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২২, ১৫: ৫৩
আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২২, ১৬: ০৬

সম্প্রতি রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ছিনতাইকারী ধরে ফেসবুকে আলোচনায় আসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী পারিশা আক্তারের (২৫) মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও থানার পুলিশ। তাঁর ফোন ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত রাশেদুল ইসলাম (১৭) ও মূল অভিযুক্ত মো. রিপন ওরফে আকাশ নামে দুই ছিনতাইকারীকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

আজ বুধবার রাজধানীর তেজগাঁও থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) রুবাইয়াত জামান। 

ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধারের বিষয়ে এডিসি রুবাইয়াত জামান বলেন, ‘গত ২১ জুলাই মাস্টার্সের থিসিসের কাজ শেষে বাসে করে বাসায় ফিরছিলেন পারিশা আক্তার। সন্ধ্যা ৬টার দিকে কারওয়ান বাজারের ওয়াসা ভবনের সামনে ট্রাফিক সিগন্যালে থামে বাসটি। এ সময় বাসের জানালা দিয়ে পারিশার হাত থেকে মোবাইল ফোনটি টান দিয়ে নিয়ে যায় এক ছিনতাইকারী। পারিশা এ সময় দ্রুত বাস থেকে নেমে সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে এক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ধরে ফেলতে সক্ষম হন। পারিশার সঙ্গে থাকা তাঁর বন্ধুরা ঘটনাস্থল থেকে অপর একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ধরে ফেলেন। সন্দেহভাজন ব্যক্তি বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকলেও, পারিশার মোবাইল চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’ 

এডিসি রুবাইয়াত জামান বলেন, ‘ঘটনার পর প্রথমে তেজগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন পারিশা আক্তার। পরে আইনি বিষয় ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতে পুলিশের অনুরোধে একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ এবং অপরাধীর বিষয়ে পারিশার মৌখিক বর্ণনা অনুযায়ী কাজ শুরু করে তেজগাঁও থানার পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে রাশেদুল ইসলামকে (১৭) প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে একপর্যায়ে ঘটনার সঙ্গে মূল অভিযুক্ত মো. রিপন ওরফে আকাশের (২৪) জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সে। 

পুলিশ জানায়, ইতিমধ্যে অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া মো. রিপন আকাশকে জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে আদালতে রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেন এবং চুরি করা মোবাইল ফোনটি মাত্র ৪ হাজার টাকার বিনিময়ে কারওয়ান বাজারের চোরাই মোবাইল ক্রেতা মো. শফিকের (২১) কাছে বিক্রি করেছেন বলে জানান। অভিযুক্তের বক্তব্য অনুযায়ী, কারওয়ান বাজারে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় শফিককে এবং তার কাছ থেকে জব্দ করা হয় চোরাই মোবাইলটি। 

অভিযুক্ত মো. রিপন ওরফে আকাশের নামে বিভিন্ন থানায় ছয়টি মামলা, কিশোর রাশেদের বিরুদ্ধে চারটি এবং চোরাই মোবাইল ফোন ক্রেতা শফিকের নামে দুটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তেজগাঁও থানার পুলিশও বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনাপূর্বক অপরাধ দমন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতে মামলার তদন্ত কার্যক্রম দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করেছে। 

মামলা রুজু হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে, অর্থাৎ আজ মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষে উল্লিখিত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র প্রদান করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। 

পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা পারিশা নিজের মোবাইল ফোন ফিরে পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে জানান, ‘আমার মোবাইলে মাস্টার্সের থিসিসের ডেটা ছিল। এগুলো হারিয়ে আমি দিশেহারা হয়ে গিয়েছিলাম। ফোনটা আমার খুব দরকার ছিল। অবশেষে ফিরে পেয়ে ভালো লাগছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত