এ কে আজাদকে বয়কটের ডাক দিলেন পরাজিত প্রার্থী শামীমসহ আ.লীগের একাংশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২৪, ১৮: ৩৬
Thumbnail image

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে চলমান পরিস্থিতির জন্য ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কাদের আজাদকে দোষারোপ করে বয়কট ও প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। তাঁরা এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে মিডিয়ার মাধ্যমে উসকানি ও টাকা ছড়ানোর অভিযোগও করেন।

আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর শহরের জনতা ব্যাংক মোড়ে এক সমাবেশে এসব কথা বলেন ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর চৌধুরীসহ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতা। 

এদিন এই এলাকায় একই সময়ে সারা দেশে গণহত্যা ও গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দোয়া প্রার্থনা ও গণমিছিলের ঘোষণা দেয় ফরিদপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। কিন্তু সেখানে আগে থেকেই অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। 

পুলিশ একপর্যায়ে আশপাশে থাকা সাধারণ মানুষকেও সরিয়ে দেয়। পরে সেখানে নিহতদের জন্য দোয়া ও সমাবেশ করা হয় জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে। 

ফরিদপুর শহরের জনতা ব্যাংক মোড়ে আওয়ামী লীগের সভা। ছবি: আজকের পত্রিকাএতে যোগ দেন ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা) আসনের সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর চৌধুরী। তিনি এ কে আজাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা যাঁর পেছনে আছেন, তাঁর পত্রিকা সমকাল ও চ্যানেল ২৪ সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার করছে। যে সংসদ সদস্য সরকারের বিরুদ্ধে লাগে, সে আওয়ামী লীগের লোক হতে পারে না, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের লোক হতে পারে না। আপনাদের আহ্বান করব, এই লোকের পেছনে থাকবেন না।’ 

এ সময় এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের মধ্যে টাকা ছড়ানোর অভিযোগ তোলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ। তিনি বলেন, ‘ফরিদপুরের সংসদ সদস্য তাঁর মিডিয়া দিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনকে উসকিয়ে দিচ্ছে, যত রকমের অরাজকতা হচ্ছে, তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আছে, এই সংসদ সদস্য এই আন্দোলনে এবং ছাত্রসমাজকে প্রচুর টাকা দিচ্ছেন। এই আন্দোলন চলার পেছনে উনার ভূমিকা রয়েছে। অতএব, ফরিদপুরের জনগণ উনার থেকে সাবধান, উনাকে বয়কট করেন। প্রয়োজনে সামনে উনাকে আমরা প্রতিহত করব।’ 

সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক। তিনিও সংসদ সদস্য এ কে আজাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করে বলেন, ‘৭ জানুয়ারি নির্বাচনের সময় বিএনপি-জামায়াতের লোক নিয়ে আপনি বড় বড় কথা বলেছেন। একটা ওয়াদাও আপনি পূরণ করেন নাই। আপনি মিথ্যাবাদী, আপনি মুনাফেক। এই লোকের আশপাশে যাঁরা আছেন, তাঁরা উনার সঙ্গ ত্যাগ করেন। উনার চেহারা আজ উন্মোচিত হয়েছে।’ 

এই তিনজনের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সমাবেশ শেষ করা হয়। পরে সারা দেশে নিহতদের জন্য দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এ সময় জেলা যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

এ বিষয়ে জানতে সংসদ সদস্য এ কে আজাদের মোবাইল ফোনে কল দিলে কেটে দেন। এরপর কয়েক দফায় চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 
 
এর আগে গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এর একটি গ্রুপ সংসদ সদস্য এ কে আজাদপন্থী এবং অপর পক্ষ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীমপন্থী। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে হেরে গিয়ে বিভিন্ন সময় বিষোদ্‌গার করতে দেখা গেছে শামীম হককে। এমনকি বিভিন্ন সময় দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে এই দুটি গ্রুপ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত