Ajker Patrika

মেরামত সংলাপ-২

আগে দরকার রাজনীতির সংস্কার, পরে রাষ্ট্রের

  • চার অধিবেশনে দিনব্যাপী সংলাপের আয়োজন ভয়েস ফর রিফর্মের।
  • আলোচনায় অংশ নেন বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টজনেরা।
  • বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় সমস্যার পাশাপাশি উঠে আসে সমাধান প্রস্তাব।
ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০: ৩০
রাজধানীর বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ভয়েস ফর রিফর্মের আয়োজনে ‘মেরামত সংলাপ-২’ অনুষ্ঠিত। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ভয়েস ফর রিফর্মের আয়োজনে ‘মেরামত সংলাপ-২’ অনুষ্ঠিত। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহান বলেছেন, ‘আমরা আর স্বৈরাচার চাই না, তবে যেসব স্বৈরাচার তৈরি হয়েছে, তারা আইন ভঙ্গ করে কিংবা আইন বাদ দিয়ে তৈরি হয়েছে। এখন রাষ্ট্র সংস্কারের কথা আসছে। রাষ্ট্র সংস্কারের আগে রাজনীতির সংস্কার হওয়া দরকার।’

রাজধানীর বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে গতকাল শনিবার ‘মেরামত সংলাপ-২’ শীর্ষক আয়োজনে রওনক জাহান এসব কথা বলেন। দিনব্যাপী চারটি পর্বে এ সংলাপের আয়োজন করে ভয়েস ফর রিফর্ম।

রওনক জাহান বলেন, ’৭১ সালের পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও ’২৪ সালের পরিস্থিতির মধ্যে তফাত রয়েছে। তখন সবাই একটি বিষয়ে ঐকমত্য ছিল, কিন্তু বর্তমানে ঐকমত্য নেই। এখন নতুনভাবে অনেক সংস্কারের কথা আসছে। সে হিসেবে সুশাসন ও গণতন্ত্র গুরুত্বপূর্ণ।

সংলাপের শেষ অধিবেশনে ‘সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন: অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রের ঝুঁকি না সম্ভাবনা?’ শীর্ষক আলাপে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) আহ্বায়ক ববি হাজ্জাজ বলেন, ’৭২-এর সংবিধান এক ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছিল।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আওয়ামী আধিপত্য বিবেচনায় ’৭২ সালে সংবিধান তৈরি করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন সংবিধানের ঊর্ধ্বে, জবাবদিহির ঊর্ধ্বে তুলে ক্ষমতা কাঠামো বাকশালে পরিণত হয়। ’৭২ সালের সংবিধানের পরিবর্তিত রূপ ছিল বাকশাল। মানুষ চায় গণতন্ত্র, কিন্তু চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল একদলীয় শাসনতান্ত্রিক কাঠামো।’

কোন ধরনের নির্বাচনীব্যবস্থা জনগণ চায়, আর জনগণের জন্য কোনটা গুরুত্বপূর্ণ—সেজন্য জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে বলে মন্তব্য করেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ সিনথিয়া ফরিদ।

‘জনহয়রানি থেকে জনকল্যাণ: কীভাবে হতে পারে প্রশাসনের মৌলিক সংস্কার’বিষয়ক অধিবেশনে কথা বলেন সাবেক সচিব সৈয়দ সুজাউদ্দিন আহমেদ, আইনজীবী সৈয়দ মাহবুবুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ শাহান ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক গোলাম মর্তোজা।

বক্তারা বলেন, জনহয়রানি থেকে জনকল্যাণে রূপান্তর করতে হলে দেশপ্রেম জরুরি। অনেকে ভালো কাজ করতে চায়, কিন্তু পারে না। স্থানীয় সরকারকে তার ক্ষমতা দেওয়া, আমলার ক্ষমতা কমানোর বিষয়ে মত দেন বক্তারা। পাশাপাশি বর্তমান সরকার কথা বলার সুযোগ জারি রাখলে, সংস্কারের পথ ও পরিবেশ তৈরি করে দিলে পরবর্তী সময়েও কথা বলে যাবে বলে মনে করেন বক্তারা।

‘ঢাকার ট্রাফিক জ্যাম: কোন সমাধান এখন সম্ভব’ বিষয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষক কাজী সাইফুল নেওয়াজ, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের ডেপুটি ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানার ধ্রুব আলম ও সিগমাইডের প্রতিষ্ঠাতা আবু আনাস শুভম। বক্তারা সড়কে লেন চিহ্নত করা, লেন অমান্যকারীদের জরিমানা করাসহ বেশ কিছু প্রস্তাব রাখেন।

‘কর্মসংস্থান ও শিক্ষিত বেকার সংকট: রাষ্ট্রের করণীয়’ বিষয়ে আলোচনায় বক্তারা শিল্পের সঙ্গে শিক্ষার সম্পৃক্ততার প্রতি জোর দেন। এ বিষয়ে আলোচনা করেন বিডিজবসের প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মশরুর, ইনোভেশন কনসাল্টিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবাইয়াত সরোয়ার ও অর্থনীতিবিদ রুশিদান ইসলাম রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত