‘শিশুদের মধ্যে যক্ষ্মার সংক্রমণ বাড়ছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫: ৪৯

বিশ্বে উচ্চ যক্ষ্মা ঝুঁকিপূর্ণ ৩০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বড়দের পাশাপাশি শিশুদেরও যক্ষ্মার জীবাণু দ্বারা সংক্রমণের হার ক্রমাগত বাড়ছে। শিশুরা নিজেদের সমস্যার কথা বুঝিয়ে বলতে পারে না তাই প্রায়ই তাদের ক্ষেত্রে এই রোগ নির্ণয়ে দেরি হয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ইত্তেফাক ভবনের সম্মেলন কেন্দ্রে ‘যক্ষ্মা, সাম্প্রদায়িক অধিকার ও লিঙ্গ সম্পর্কিত তথ্য প্রচার’—বিষয়ক গোল টেবিল বৈঠকে আলোচকেরা এ সব কথা বলেন। ইউএনওপিএসের (জাতিসংঘ প্রকল্প সেবাসমূহের কার্যালয়) সহযোগিতায় বেসরকারি সংস্থা নারী মৈত্রী এ সভার আয়োজন করে।

সভায় বক্তারা বলেন, শিশুদের যক্ষ্মার লক্ষণগুলো অন্য কিছু রোগের লক্ষণের সঙ্গে মিলে যায়। তাই অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরাও শুরুতে যক্ষ্মার টেস্ট না দিয়ে একদম শেষ পর্যায়ে গিয়ে যক্ষ্মার টেস্ট করতে দেন। মায়েরাও ভাবতে চান না, তাদের সন্তান যক্ষ্মায় আক্রান্ত। ফলে শিশুদের ক্ষেত্রে যক্ষ্মা শনাক্ত হতে দেরি হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন—নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আক্তার ডলি। মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন নারী মৈত্রীর প্রকল্প সমন্বয়ক তৌহিদা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘বিশ্বে প্রতিবছর আনুমানিক ১০ দশমিক ৬ মিলিয়ন মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে, ৫ দশমিক ৮ মিলিয়ন পুরুষ, ৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন নারী এবং ১ দশমিক ৩ মিলিয়ন শিশু। বাংলাদেশে প্রতি লাখে ২২১ জন যক্ষ্মা রোগী রয়েছেন। প্রতি লাখে ২৪ জন যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন।’

অতিথি বক্তা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় টিউবারকিউলোসিস কন্ট্রোল প্রোগ্রামের ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় যক্ষ্মা বিশেষজ্ঞ ডা. ফারজানা জামান বলেন, ‘যক্ষ্মা শনাক্তকরণের গত ১০ বছরে আমাদের সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। ২০১২ সালে যক্ষ্মা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে আমাদের মাত্র ২০টি মেশিন ছিল। এখন ৮৩৩টি মেশিন দিয়ে আমরা যক্ষ্মা শনাক্ত করতে পারছি। মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে যক্ষ্মা শনাক্তের সক্ষমতা আমাদের রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতি মিনিটে আমাদের দেশে একজন যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন। ১২ মিনিটে একজন মারা যান। করোনায় এখন পর্যন্ত আমাদের দেশে ২৯ হাজার রোগী মারা গেছে। আর শুধু ২০২৩ সালে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৪ হাজার মানুষ। কাশি দিতে দিতে গলা দিয়ে রক্ত ঝরে মারা যাচ্ছে, এমন রোগী আজকাল কম পাওয়া যায়। যক্ষ্মার ধরন বদলেছে। চুল এবং নখ ছাড়া সব জায়গায় যক্ষ্মা হতে পারে। এ সব বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে।’

সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশ সরকার বিনা মূল্যে যক্ষ্মার ওষুধ দিয়ে থাকে। আগে এই ওষুধগুলো দাতা দেশ থেকে আনা হতো। কিন্তু এখন বাংলাদেশেই এই ওষুধ তৈরি হচ্ছে।

আলোচনায় আরও অংশ নেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, নারী মৈত্রীর পরিচালক (হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন) মাসুদা বেগম এবং এনজিও ও গণমাধ্যম কর্মীরা। তারা যক্ষ্মা নির্মূলে সরকার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত