গাজীপুর প্রতিনিধি
জন ভোগান্তিতে কমাতে বহুল প্রত্যাশিত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প বিভিন্ন সমস্যার সমাধান না করে এবং কাজ অসমাপ্ত রেখে বাস চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। দ্রুততম এই লেন নির্মাণকাজ শুরুর এক যুগ পর আজ রোববার সকালে বাস সার্ভিস উদ্বোধন করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
গাজীপুর মহানগরীর শিববাড়ী বিআরটি প্রকল্পের বাস ডিপোতে উপস্থিত হয়ে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বাস চলাচল সেবার উদ্বোধন করেন। বিআরটির এই বিশেষ লেনে সরকারের পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) ১০টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) বাস আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে চলাচল করবে।
এদিকে বিআরটি প্রকল্পের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গত ২৭ মার্চ গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গণশুনানিতে এলাকাবাসী বিভিন্ন অভিযোগ ও অসংগতি তুলে ধরেন। সমস্যা সমাধান না করে বিআরটি প্রকল্প চালু করায় এলাকাবাসীর মধ্যে অসন্তুষ্টি দেখা দিয়েছে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠান
উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বক্তব্যের সময় প্রকল্পের বিভিন্ন সমস্যার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, প্রকল্পটির কাজ শুরুর পরে নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি। এটি একটি রুগ্ণ প্রকল্প সেটা আমরা আগে থেকেই জানি। অনেকবার সময় বাড়ানো হয়েছে, এরপরও কাজ শেষ করতে পারেনি। এই প্রকল্প মানুষের কোনো উপকারে আসছিল না। তাই পরীক্ষামূলকভাবে বিআরটি লেনে ১০টি বিআরটিসি বাস দিয়ে বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। এ সার্ভিস চলার সময়ে যে সব সমস্যা দেখা যাবে, সেগুলো ধারাবাহিকভাবে সমাধান করা হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. এহছানুল হক। বক্তব্য দেন বিআরটিসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, বিআরটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান। উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন, গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. ইব্রাহিম খানসহ মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ইতিপূর্বে বিআরটি প্রকল্প নিয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে যেসব সমস্যা চিহ্নিত করা হয় সেসব কবে নাগাদ সমাধান করা হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি গণশুনানির বিষয় নিয়ে কিছুই জানি না।’ পরে গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে গণশুনানির বিষয়ে অবগত হয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বিষয়গুলো দেখব। গণ শুনানিতে যেসব সমস্যা উঠে এসেছিল সেগুলো দেখে বাস্তবায়নযোগ্য বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান করা হবে।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন আগামী জুনে এ প্রকল্পের সব কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
উদ্বোধন হওয়া ব্যস্ততম মহাসড়কের দুপাশে বিভিন্ন পোশাক কারখানা রয়েছে। সেখানে কর্মরত লাখ লাখ শ্রমিক কীভাবে মহাসড়ক পারাপার হবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করায় মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে বিমান বন্দর থেকে চান্দনা চৌরাস্তা অংশে ১০টি নতুন ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিআরটি লেনে বিশেষ বাস আমদানির জন্য ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। সেগুলো এলে আরও বেশি যাত্রী চলাচল করতে পারবে।’
ফাওজুল কবির খান বলেন, ভবিষ্যতে বিআরটি লেনের বাস এবং জয়দেবপুর থেকে ঢাকা রুটের ট্রেন চট্টগ্রামের মতো ইলেকট্রিক লাইনে চলাচলের ব্যবস্থা করব। বর্তমানে বাসগুলো শিববাড়ী থেকে বিআরটি লেন দিয়ে বিমান বন্দর পর্যন্ত যাবে। তারপর বাসগুলো এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে দিয়ে ফার্মগেট নেমে সেখান থেকে বিভিন্ন বাসের ন্যায় এসব বাস গুলিস্তান পর্যন্ত যাতায়াত করবে।
বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ১০ এসি বাস চালু করেছি। প্রয়োজনে বা চাহিদা বাড়লে আরও বাড়ানো হবে। বিআরটিসির এসি বাসগুলো শিববাড়ী টার্মিনাল থেকে বিআরটি লেনে বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০ দশমিক ৫ কিলোমিটার এবং বিমানবন্দর থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার পথে চলাচল করবে। শিববাড়ী থেকে গুলিস্তানের ভাড়া ১৪০ টাকা। তারমধ্যে শিববাড়ী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ভাড়া ৭০ টাকা। বিমানবন্দর থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত ভাড়াও ৭০ টাকা। ঢাকার ওপর চাপ কমাতে চার জোড়া কমিউটার ট্রেনও চালু করা হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিআরটি লেন দিয়ে শুধু বাসই চলাচল করার কথা। কিন্তু শুরুতে বিআরটিসির ১০টি বাস দিয়ে পুরো বিআরটি লেন আটকে রাখা ঠিক হবে না। এ জন্য ব্যক্তিগত গড়ি ও মাইক্রোবাস বিআরটি লেন দিয়ে চলাচল করতে দেওয়া হবে। এর ফলে সাধারণ লেনগুলোতে চাপ কমে যাবে।
বিআরটি প্রকল্পের ব্যয় ও ঠিকাদার
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বিআরটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকারের চারটি বিভাগ। প্রকল্পে অর্থায়ন করছে বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি এডিবি, এএফডি ও ডিইএফ। প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চায়না গেজহুবা গ্রুপ, জিয়াংশু প্রভিন্সিয়াল ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ এবং ওয়েহেই ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেটিভ।
প্রকল্পে সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রকল্পের শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। দফায় দফায় প্রকল্পের সময় বাড়িয়ে বাড়ানো হয় প্রকল্প ব্যয়, বেড়েছে মানুষের দুর্ভোগ। সবশেষ ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২৬৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, বাস সেবা চালু হয়েছে কিন্তু নির্মাণ করা ২০টা স্টেশনের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এখনো স্থাপন করা হয়নি। ১০ ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সড়ক বিভাজক, পদচারী-সেতু নির্মাণসহ বেশ কিছু কাজ এখনো বাকি আছে। মানুষের দুর্ভোগ কমাতে সরকার বাস চলাচলের ফাঁকে ফাঁকে বাকি কাজ শেষ করতে চায়।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গণশুনানি
গত ২৭ মার্চ অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে এলাকাবাসী বলেন, প্রকল্পের শুরুতে কথা ছিল মহাসড়কের দুই পাশের হকারদের জন্য ১০টি হকার্স মার্কেট নির্মাণ করা হবে, দুই পাশে ড্রেনের পানি অপসারণের জন্য মহাসড়কের দুই পাশের পাঁচটি খাল খনন করা হবে। কিন্তু এর কিছুই করা হয়নি। ভোগড়া এলাকার ফ্লাইওভারের উচ্চতা কম থাকায়, পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলে অসুবিধা হবে। ড্রেন অত্যন্ত সরু হওয়ায় মহাসড়কের পানি অপসারিত হবে না। বিআরটি স্টেশনে আসা যাওয়ার জন্য ৭২ ফুট উঁচু সিঁড়ি নির্মাণ করা হয়েছে, ফলে বয়স্ক মানুষ, মহিলা ও শিশুরা এই সিঁড়ি অতিক্রম করে যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়বেন। আগে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) ১০০ ফুট চওড়া মহাসড়ক ছিল। অথচ অনেক স্থানে বিআরটি সড়কের বাইরে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলার যানবাহন চলাচলের মহাসড়ক অত্যন্ত সরু হয়ে পড়েছে।
প্রকল্পটির চান্দনা চৌরাস্তা থেকে শিববাড়ি মোড় পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়কের কোথাও এক ইঞ্চিও ফুটপাত রাখা হয়নি। এমনকি এই দীর্ঘ পথের কোথাও কোনো ইউ টার্ন নেই। দীর্ঘ মহাসড়কে বিআরটি লেনের বাইরে অনেক জায়গায় বিআরটি স্টেশনে যাত্রী আসা যাওয়ার জন্য ফুটপাত বন্ধ করে সিঁড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। যাত্রী পারাপারের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এ ছাড়া গাজীপুরের লাখ লাখ পোশাক শ্রমিক পারাপারের জন্য কোনো ফুটওভার ব্রিজ অথবা একপাশের যানবাহন অন্যপাশে যাওয়ার জন্য কোনো ইউ টার্ন রাখা হয়নি। যে ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে, সেটি অপ্রশস্ত হওয়ায় এবং এসব ড্রেনের পানি নির্দিষ্ট কোনো গন্তব্য নির্ধারণ করা হয়নি বলে গণশুনানিতে উঠে আসে।
জন ভোগান্তিতে কমাতে বহুল প্রত্যাশিত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প বিভিন্ন সমস্যার সমাধান না করে এবং কাজ অসমাপ্ত রেখে বাস চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। দ্রুততম এই লেন নির্মাণকাজ শুরুর এক যুগ পর আজ রোববার সকালে বাস সার্ভিস উদ্বোধন করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
গাজীপুর মহানগরীর শিববাড়ী বিআরটি প্রকল্পের বাস ডিপোতে উপস্থিত হয়ে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বাস চলাচল সেবার উদ্বোধন করেন। বিআরটির এই বিশেষ লেনে সরকারের পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) ১০টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) বাস আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে চলাচল করবে।
এদিকে বিআরটি প্রকল্পের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গত ২৭ মার্চ গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গণশুনানিতে এলাকাবাসী বিভিন্ন অভিযোগ ও অসংগতি তুলে ধরেন। সমস্যা সমাধান না করে বিআরটি প্রকল্প চালু করায় এলাকাবাসীর মধ্যে অসন্তুষ্টি দেখা দিয়েছে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠান
উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বক্তব্যের সময় প্রকল্পের বিভিন্ন সমস্যার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, প্রকল্পটির কাজ শুরুর পরে নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি। এটি একটি রুগ্ণ প্রকল্প সেটা আমরা আগে থেকেই জানি। অনেকবার সময় বাড়ানো হয়েছে, এরপরও কাজ শেষ করতে পারেনি। এই প্রকল্প মানুষের কোনো উপকারে আসছিল না। তাই পরীক্ষামূলকভাবে বিআরটি লেনে ১০টি বিআরটিসি বাস দিয়ে বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। এ সার্ভিস চলার সময়ে যে সব সমস্যা দেখা যাবে, সেগুলো ধারাবাহিকভাবে সমাধান করা হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. এহছানুল হক। বক্তব্য দেন বিআরটিসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, বিআরটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান। উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন, গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. ইব্রাহিম খানসহ মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ইতিপূর্বে বিআরটি প্রকল্প নিয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে যেসব সমস্যা চিহ্নিত করা হয় সেসব কবে নাগাদ সমাধান করা হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি গণশুনানির বিষয় নিয়ে কিছুই জানি না।’ পরে গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে গণশুনানির বিষয়ে অবগত হয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বিষয়গুলো দেখব। গণ শুনানিতে যেসব সমস্যা উঠে এসেছিল সেগুলো দেখে বাস্তবায়নযোগ্য বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান করা হবে।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন আগামী জুনে এ প্রকল্পের সব কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
উদ্বোধন হওয়া ব্যস্ততম মহাসড়কের দুপাশে বিভিন্ন পোশাক কারখানা রয়েছে। সেখানে কর্মরত লাখ লাখ শ্রমিক কীভাবে মহাসড়ক পারাপার হবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করায় মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে বিমান বন্দর থেকে চান্দনা চৌরাস্তা অংশে ১০টি নতুন ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিআরটি লেনে বিশেষ বাস আমদানির জন্য ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। সেগুলো এলে আরও বেশি যাত্রী চলাচল করতে পারবে।’
ফাওজুল কবির খান বলেন, ভবিষ্যতে বিআরটি লেনের বাস এবং জয়দেবপুর থেকে ঢাকা রুটের ট্রেন চট্টগ্রামের মতো ইলেকট্রিক লাইনে চলাচলের ব্যবস্থা করব। বর্তমানে বাসগুলো শিববাড়ী থেকে বিআরটি লেন দিয়ে বিমান বন্দর পর্যন্ত যাবে। তারপর বাসগুলো এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে দিয়ে ফার্মগেট নেমে সেখান থেকে বিভিন্ন বাসের ন্যায় এসব বাস গুলিস্তান পর্যন্ত যাতায়াত করবে।
বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ১০ এসি বাস চালু করেছি। প্রয়োজনে বা চাহিদা বাড়লে আরও বাড়ানো হবে। বিআরটিসির এসি বাসগুলো শিববাড়ী টার্মিনাল থেকে বিআরটি লেনে বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০ দশমিক ৫ কিলোমিটার এবং বিমানবন্দর থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার পথে চলাচল করবে। শিববাড়ী থেকে গুলিস্তানের ভাড়া ১৪০ টাকা। তারমধ্যে শিববাড়ী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ভাড়া ৭০ টাকা। বিমানবন্দর থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত ভাড়াও ৭০ টাকা। ঢাকার ওপর চাপ কমাতে চার জোড়া কমিউটার ট্রেনও চালু করা হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিআরটি লেন দিয়ে শুধু বাসই চলাচল করার কথা। কিন্তু শুরুতে বিআরটিসির ১০টি বাস দিয়ে পুরো বিআরটি লেন আটকে রাখা ঠিক হবে না। এ জন্য ব্যক্তিগত গড়ি ও মাইক্রোবাস বিআরটি লেন দিয়ে চলাচল করতে দেওয়া হবে। এর ফলে সাধারণ লেনগুলোতে চাপ কমে যাবে।
বিআরটি প্রকল্পের ব্যয় ও ঠিকাদার
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বিআরটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকারের চারটি বিভাগ। প্রকল্পে অর্থায়ন করছে বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি এডিবি, এএফডি ও ডিইএফ। প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চায়না গেজহুবা গ্রুপ, জিয়াংশু প্রভিন্সিয়াল ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ এবং ওয়েহেই ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেটিভ।
প্রকল্পে সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রকল্পের শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। দফায় দফায় প্রকল্পের সময় বাড়িয়ে বাড়ানো হয় প্রকল্প ব্যয়, বেড়েছে মানুষের দুর্ভোগ। সবশেষ ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২৬৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, বাস সেবা চালু হয়েছে কিন্তু নির্মাণ করা ২০টা স্টেশনের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এখনো স্থাপন করা হয়নি। ১০ ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সড়ক বিভাজক, পদচারী-সেতু নির্মাণসহ বেশ কিছু কাজ এখনো বাকি আছে। মানুষের দুর্ভোগ কমাতে সরকার বাস চলাচলের ফাঁকে ফাঁকে বাকি কাজ শেষ করতে চায়।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গণশুনানি
গত ২৭ মার্চ অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে এলাকাবাসী বলেন, প্রকল্পের শুরুতে কথা ছিল মহাসড়কের দুই পাশের হকারদের জন্য ১০টি হকার্স মার্কেট নির্মাণ করা হবে, দুই পাশে ড্রেনের পানি অপসারণের জন্য মহাসড়কের দুই পাশের পাঁচটি খাল খনন করা হবে। কিন্তু এর কিছুই করা হয়নি। ভোগড়া এলাকার ফ্লাইওভারের উচ্চতা কম থাকায়, পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলে অসুবিধা হবে। ড্রেন অত্যন্ত সরু হওয়ায় মহাসড়কের পানি অপসারিত হবে না। বিআরটি স্টেশনে আসা যাওয়ার জন্য ৭২ ফুট উঁচু সিঁড়ি নির্মাণ করা হয়েছে, ফলে বয়স্ক মানুষ, মহিলা ও শিশুরা এই সিঁড়ি অতিক্রম করে যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়বেন। আগে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) ১০০ ফুট চওড়া মহাসড়ক ছিল। অথচ অনেক স্থানে বিআরটি সড়কের বাইরে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলার যানবাহন চলাচলের মহাসড়ক অত্যন্ত সরু হয়ে পড়েছে।
প্রকল্পটির চান্দনা চৌরাস্তা থেকে শিববাড়ি মোড় পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়কের কোথাও এক ইঞ্চিও ফুটপাত রাখা হয়নি। এমনকি এই দীর্ঘ পথের কোথাও কোনো ইউ টার্ন নেই। দীর্ঘ মহাসড়কে বিআরটি লেনের বাইরে অনেক জায়গায় বিআরটি স্টেশনে যাত্রী আসা যাওয়ার জন্য ফুটপাত বন্ধ করে সিঁড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। যাত্রী পারাপারের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এ ছাড়া গাজীপুরের লাখ লাখ পোশাক শ্রমিক পারাপারের জন্য কোনো ফুটওভার ব্রিজ অথবা একপাশের যানবাহন অন্যপাশে যাওয়ার জন্য কোনো ইউ টার্ন রাখা হয়নি। যে ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে, সেটি অপ্রশস্ত হওয়ায় এবং এসব ড্রেনের পানি নির্দিষ্ট কোনো গন্তব্য নির্ধারণ করা হয়নি বলে গণশুনানিতে উঠে আসে।
হাওরের বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের কাজের জন্য নীতিমালা অনুযায়ী জরিপ, গণশুনানি, প্রকল্প স্থান নির্ধারণ, প্রাক্কলন তৈরি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠন ৩০ নভেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
৫ ঘণ্টা আগেশরীয়তপুরের জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলায় রাত নামতেই শুরু হয় পদ্মা নদীর বালু লুটের মহোৎসব। প্রতিদিন প্রায় ৫০টি খননযন্ত্র (ড্রেজার) সক্রিয় থাকে ভোর পর্যন্ত। এতে ঝুঁকির মুখে পড়েছে পদ্মা সেতু রক্ষা বাঁধসহ দুই উপজেলার ডান তীর রক্ষা বাঁধ। প্রশাসন বলছে, আটক-জরিমানা করেও অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের থামানো যাচ্ছে না।
৬ ঘণ্টা আগেবৃষ্টি দেখে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের আলুচাষিরা। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলায় ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পড়তে দেখা যায়। এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরও বলছে, ঢাকাসহ দেশের পাঁচ বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনার রয়েছে। কৃষকেরা বলছেন, ভারী বৃষ্টি হলে আলুর জমির অনেক ক্ষতি হবে। আলুখেতে অতিরিক্ত পান
৬ ঘণ্টা আগেমায়ের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিয়েছেন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বড়চওনা গ্রামের প্রবাসী আয়নাল হক। বৃদ্ধ মাকে বিদেশে ঘুরিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে বাড়ি এনেছেন তিনি। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাকে হেলিকপ্টারে নিয়ে উপজেলার বড়চওনা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করেন তিনি।
৬ ঘণ্টা আগে