Ajker Patrika

ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে ৪ কোটি টাকা নেন সিআইডি কর্মকর্তা: সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলন করেন ডা. মো. জোবায়দুর রহমান জনি। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলন করেন ডা. মো. জোবায়দুর রহমান জনি। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট রাজধানীর শান্তিনগরের বাসা থেকে মেডিকেল ভর্তি কোচিং প্রতিষ্ঠান ‘মেডিকো’র প্রতিষ্ঠাতা ডা. মো. জোবায়দুর রহমান জনিকে তুলে নেয় সিআইডি। পরে সিআইডি সদর দপ্তরে নিয়ে বেধড়ক মারধর করা এবং জনির স্ত্রীকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে চার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় সিআইডির কর্মকর্তারা। আর টাকা পরিশোধ করতে তাঁর পরিবারকে গাড়ি, ফ্ল্যাট ও জমি বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়। এ ছাড়া হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা, শারীরিক নির্যাতন করে মিথ্যা স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও ধারণ করে সিআইডি।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন জনি।

সংবাদ সম্মেলনে ডা. মো. জোবায়দুর রহমান জনি বলেন, ‘২০২৩ সালের ২ আগস্ট আমার ফ্ল্যাটে সাদাপোশাকে সিআইডি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমার সঙ্গে আরও সাত-আটজন পুলিশ প্রবেশ করে। এ সময় তারা আমার বাসার বিভিন্ন মালামাল লুণ্ঠন করে এবং আমাকে তুলে নিয়ে যায়। গ্রেপ্তারের সময় আমার স্ত্রী ও শিশুসন্তান ঘরেই ছিল। কোনো কথা না শুনেই পুলিশ জোর করে রুমে ঢুকে পড়ে। তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানির জন্য আমাকে বেআইনিভাবে বাসা থেকে সিআইডি কার্যালয়ে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ২৯ ঘণ্টা আমার পরিবারকে জানায়নি কোথায় আছি।’

সিআইডি কার্যালয়ে নির্যাতনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দুই চোখ গামছা দিয়ে বেঁধে এলোপাতাড়ি পেটানোর ছবি আমার স্ত্রী ও পরিবারকে পাঠানো হয়। তৎকালীন সিআইডির প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়ার নির্দেশে করা হয় এবং পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করা হয়; অন্যথায় ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়া হয়। পরে আমার পরিবার গাড়ি, ফ্ল্যাট ও জমি বিক্রি করে সিআইডির এসআই মেহেদি হাসানের গাড়িচালক সবুজের কাছে দফায় দফায় চার কোটি টাকা পরিশোধ করা হয় এবং এসআই আতিকুর রহমান টাকা দেওয়ার স্থান ও সময় জানিয়ে তদারকি করত।’

তিনি আরও বলেন, ‘রিমান্ড চলাকালীন পুলিশি নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে আমাকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কারাবাসের সময় ৪৩ দিন কারা হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে সিআইডির পুলিশ কর্মকর্তারা আরও মামলার ভয় দেখিয়ে ও আমার স্ত্রীকে মানি লন্ডারিংয়ে মামলায় সম্পৃক্ততার ভয় দেখিয়ে পরিবারের কাছ থেকে ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট ৫০ লাখ টাকা, ১৬ আগস্ট ১ কোটি টাকা, ২৩ আগস্ট ৮০ লাখ টাকা, ২৮ আগস্ট ৭০ লাখ টাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর ৫০ লাখ এবং ২০২৪ সালের ১৮ অক্টোবর ৫০ লাখ টাকাসহ মোট ৪ কোটি টাকা নেয়। তাদের অবৈধ দাবি মেটাতে ব্যক্তিগত গাড়ি, ফ্ল্যাট ও জমি বিক্রি করতে হয়েছে। টাকা নেওয়া-সংক্রান্ত একাধিক অডিও রেকর্ড আমার কাছে আছে। স্কাই সিটি হোটেল ও আগারগাঁওয়ের রাস্তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলেও জানা যাবে। আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ রাখা হয়েছে ছয় মাসের বেশি।’

মেডিকেল প্রশ্নফাঁসের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ ভুল তথ্যে আমাকে বাসা থেকে তুলে নেয়। গ্রেপ্তারের আগে সিআইডি আমাকে বলে, ২০০৬ সাল থেকে মেডিকো ফুলেফেঁপে উঠেছে, অথচ মেডিকো শুরু হয় ২০১১-১২ সাল থেকে। আমার পরিবারকে ভয় দেখানোর জন্য অস্ত্রসহ অভিযানের নাটক করেছিল সিআইডি।’

জীবনের ঝুঁকি বিবেচনায় এত দিন সিআইডির ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেননি বলেও জানান ডা. জোবায়দুর রহমান। এ সময় তিনি বলেন, ‘গত ১৫ এপ্রিল আদালতে বিভিন্ন অভিযোগে সিআইডির তৎকালীন কর্মকর্তা বর্তমানে র‍্যাব-১৪-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা, সাবেক সিআইডির প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া, তৎকালীন সিআইডিতে কর্মরত বর্তমানে বরিশাল মেট্রোপলিটনের উপপরিদর্শক (এসআই) মেহেদি হাসান এবং সিআইডির উপপরিদর্শক (এসআই) আতিকুর রহমানসহ অজ্ঞাত চার-পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

এনআইডির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের দায়িত্বে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

পদত্যাগ করব না, আলোচনা করে সমাধান করব: কুয়েট উপাচার্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত