মাদারীপুরে মোটরসাইকেল চালককে হত্যা, ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৩, ১৭: ৫৮
আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২৩, ১৯: ১৬

মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুরে মোটরসাইকেল চালক শাহাদাত ঘরামিকে (১৮) হত্যার ঘটনায় তিন জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ সোমবার দুপুরে তাদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস।

তবে আসামিরা পলাতক থাকায় রায় ঘোষণার সময় কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

মৃত্যুদপ্রাপ্তরা হলেন বরিশালের গৌরনদী উপজেলার রামনগর এলাকার সুলতান শরিফের ছেলে সেন্টু শরীফ (৩৫), কমলাপুর এলাকার মান্নান ফকিরের ছেলে মিরাজ ফকির (৩০) ও মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুরের ফজেল শেখ (৫০)।

মামলার বিবরণ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার বড় দুলালী এলাকার মোকসেদ ঘরামীর ছেলে শাহাদাত ঘরামি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

২০১৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর প্রতিবেশী মিরাজ ও সেন্টু সন্ধ্যা ৬টার দিকে বরিশালের বার্থী যাওয়ার কথা বলে শাহাদাত ঘরামীকে ভাড়ায় নেন। তারা মোটরসাইকেলে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করেন। একপর্যায় মোটরসাইকেলটি নেওয়ার জন্য শাহাদাতকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের সিকি-নওহাটা এলাকায় লাশ পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় দুদিন পর নিহতের বাবা মোকসেদ ঘরামী বাদী হয়ে মিরাজ ফকির ও সেন্টু শরীফসহ অজ্ঞাতনামা আরও বেশ কয়েকজনকে আসামি করে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ওই সময়ের মাদারীপুর সদর থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক শ্যামলেন্দু ঘোষ তদন্ত শুরু করেন। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ফেব্রয়ারি মাসে ৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপর আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। দশ বছর যুক্তিতর্ক শেষে সাক্ষী প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে ৩ জন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে আসামিরা পলাতক রয়েছে।

মামলার বাদী মোকসেদ ঘরামী বলেন, আমার ছেলে প্রতিদিন আড়াইশো টাকা ভাড়া দেওয়ার চুক্তিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে পরিবারের হাল ধরেছিলো। সেন্টু, মিরাজ আর ফজেল মোটরসাইকেল নেওয়ার জন্য আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আজ আদালত ওদের ফাঁসির রায় দিয়েছেন, আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট। তবে একটাই দাবি, এই রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়। যাতে করে আমার ছেলের আত্মা শান্তি পায়।

মাদারীপুরের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, একটি গরিব পরিবারের সন্তানের ভাড়ায় চালানো মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে এ ঘটনা ঘটায় আসামিরা। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আসামিদের মধ্য থেকে মিরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে আদালতে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছিলেন। পরে সে জামিন নেওয়ার পর থেকে পলাতক আছেন। দীর্ঘ ১০ বছর যুক্তিতর্ক শেষে আদালত এই মামলার ৩ জন অভিযুক্তকে ফাঁসির আদেশ দেন। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ে সন্তুষ্ট।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত