Ajker Patrika

কিশোরগঞ্জে আ.লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, সাবেক ৪ রাষ্ট্রপতির ম্যুরাল ভাঙচুর

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩: ৩৭
ভাঙচুর করা হচ্ছে সাবেক ৪ রাষ্ট্রপতির মুর‍্যাল। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভাঙচুর করা হচ্ছে সাবেক ৪ রাষ্ট্রপতির মুর‍্যাল। ছবি: আজকের পত্রিকা

কিশোরগঞ্জ শহরের স্টেশন রোডে আওয়ামী লীগের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এ ছাড়া শহরের খরমপট্টি এলাকায় সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বাসভবনে অগ্নিসংযোগ করেন তাঁরা। আজ বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে গতকাল বুধবার রাতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়টিতে আগুন ধরিয়ে দেয় ছাত্র-জনতা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শেখ হাসিনা ভারত থেকে ভাষণ দেবেন—এমন খবর শুনে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা হাতুড়ি-শাবল নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। ভাষণ শুরুর খবরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনের দেয়াল ভাঙচুর শুরু করে তারা। পরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ভবনটির ভাঙা ও ঝুলে থাকা দেয়ালের অংশে রাতেই ‘পাবলিক টয়লেট’ লিখে দেওয়া হয়।

এরপর খড়মপট্টি এলাকায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের দেয়ালে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে আজ (বৃহস্পতিবার) রাতে ভেকু নিয়ে এসে কার্যালয় ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বিক্ষুব্ধ জনতা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দুই দফা হামলা-ভাঙচুর করে আগুন দিয়েছিল।

এদিকে গতকাল রাত থেকে আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার ভৈরব, বাজিতপুর ও পাকুন্দিয়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গত রাতে ভৈরব আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর এবং উপজেলা পরিষদে শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভেঙে দেয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।

বাজিতপুর বাজারে ভাঙচুর করা হচ্ছে সাবেক ৪ রাষ্ট্রপতির মুর‍্যাল। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাজিতপুর বাজারে ভাঙচুর করা হচ্ছে সাবেক ৪ রাষ্ট্রপতির মুর‍্যাল। ছবি: আজকের পত্রিকা

আজ সকালে পাকুন্দিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে থাকা শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভাঙা হয়। শত শত মানুষ এসব ম্যুরাল ভাঙচুরে অংশ নেন। দুপুরের দিকে সদরের বিন্নাটি মোড়ে স্থাপন করা ভাস্কর্যটি এক্সকাভেটর দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।

অন্যদিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মো. জিল্লুর রহমান ও মো. আবদুল হামিদের পাশাপাশি শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিসংবলিত একটি ম্যুরাল নির্মাণ করা হয় বাজিতপুর বাজারে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ম্যুরালটিতে ভাঙচুর চালানো হয়।

আজ দুপুরে কয়েক শ মানুষ ম্যুরালের সামনে অবস্থান নেন। পরে জনতা শেখ মুজিবের ছবিটিতে আঘাতের চেষ্টা করে। বিক্ষুব্ধ জনতা বেলা ২টা পর্যন্ত ম্যুরালের সামনে অবস্থান করে।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জের অন্যতম সংগঠক আশরাফ আলী সোহান জানান, শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গিয়ে বাংলাদেশে আবার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পাঁয়তারা করছেন। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ করছে। হাসিনা ভারত থেকে বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এরই ধারাবাহিকতায় কিশোরগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা জেলা আওয়ামী কার্যালয়ে ‘পাবলিক টয়লেট’ লিখে দিয়েছে এবং শেখ মুজিবের ম্যুরালও ভাঙচুর করেছে। সর্বশেষ ভেকু দিয়ে ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত