বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে পায়ের রগ কাটার চেষ্টা

পাংশা (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ১৯: ৪১
আপডেট : ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ২০: ১৮

রাজবাড়ীর পাংশায় বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে এক যুবকের পায়ের রগ কাটার চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় পাংশা পৌর শহরের মৈশালা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ওই যুবক পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। 

থানা-পুলিশ বলছে, এ বিষয়ে তারা অবগত নয়। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ভুক্তভোগী যুবকের নাম মারুফ প্রামাণিক (২৪)। তিনি পৌর শহরের কুলটিয়া গ্রামের মো. মতিয়ার প্রামাণিকের ছেলে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন মো. মারুফ প্রামাণিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শনিবার ইফতারের আগমুহূর্তে মৈশালা বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পার্শ্বে (কুষ্টিয়ার দিকে) প্রস্রাব করতে যাই, এমন সময় রাজীব নামের এক লোক আমাকে ডাক দেয়। তার ডাকে শুনে এগিয়ে গেলে আলামিন নামের এক লোক পেছন থেকে চাকু দিয়ে পায়ের রগ কাটার জন্য চেষ্টা করে এবং আমার বুকের ওপর নলওয়ালা বন্দুক ঠেকিয়ে কাকে যেন ফোন করে বলে ওকে কি গুলি করে দেব নাকি? ফোনে বলেছে মেরে ফেলার দরকার নাই। বন্দুক দিয়ে আমার কানের ওপর মার দেয় এবং রাস্তায় ফেলে দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।’ 

ভুক্তভোগী মারুফ আরও বলেন, ‘আলামিন মণ্ডল ও নয়ন মণ্ডল মৌরাট ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের খান্দুয়া গ্রামের আনছার মণ্ডলের ছেলে। এ ছাড়া মৈশালা বড়গাছি গ্রামের শরিফ, মোহাম্মদ ও রাজিব লাঠিসোঁটা দিয়ে আমাকে মারধর করেছে। আমার কাছে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোনও ছিনিয়ে নিয়েছে। আমার মা-বাবা ঢাকায় আছেন। তাঁরা এলে থানায় মামলা করা হবে।’ 

পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সোমা প্রামাণিক আজকের পত্রিকাকে জানান, আহতের ডান পায়ে তিন জায়গাতে কাটা ইনজুরি ছিল। সেখানে প্রায় ২০টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর বাঁ পায়ে, বাঁ হাতে ও বাঁ কানে আঘাতে চিহ্ন পাওয়া গেছে।

মৈশালা বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হলে তাঁরা জানান, ইফতারের আগমুহূর্তে বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পার্শ্বে শোরগোল শুনেছেন। তবে সেখানে কী হয়েছে, তা কেউ জানেন না। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাজিবের সঙ্গে কথা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শুধু শুধু কেউ কাউকে মারপিট করে না। ওই ছেলে একটা চোর। সে জন্য ওকে মারা হয়েছে। আমি মারিনি। তবে কারা মেরেছে আমি দেখেছি।’ 

কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের নাম জানতে চাইলে রাজিব বলেন, ‘আমি একটু পরে আপনাকে জানাচ্ছি।’ এর পর থেকে তিনি আর কল ধরেননি। অন্য অভিযুক্তের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। 

তবে অভিযুক্ত আলামিন মণ্ডলের বাবা মো. আনছার মণ্ডলকে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, ‘আলামিন মণ্ডল আমার ছেলে। নয়ন নাম হলেই কি আমার ছেলে হয়? নয়ন আমার ছেলে না।’ তাঁর কাছে আলামিনের মোবাইল নম্বর চাইলে তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানান।

এ বিষয়ে পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এমন কোনো ঘটনার বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ হয়নি। বিষয়টি আমি অবগত না। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত