Ajker Patrika

ঈদের বাজার

জুতার দোকানে ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৫, ০৮: ৪২
ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় কাটছে রাজধানীবাসীর। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের শপিং। গতকাল এলিফ্যান্ট রোডের একটি জুতার দোকানে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় কাটছে রাজধানীবাসীর। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের শপিং। গতকাল এলিফ্যান্ট রোডের একটি জুতার দোকানে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঈদুল ফিতরের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। ফলে বিভিন্ন বিপণিবিতানে জুতার দোকানেগুলোয় ভিড় বাড়ছে। চৈত্র মাসে ঈদ হওয়ায় বেশির ভাগ ক্রেতাই পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে আরামদায়ক জুতা বা স্যান্ডেল খুঁজছেন। অনেকে আবার বছরজুড়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান বা কর্মক্ষেত্রে পরার উপযোগী ফরমাল শু-ও কিনে রাখছেন।

বুধবার বিকেলে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে জুতা কিনতে এসেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত কলেজশিক্ষক মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘চৈত্রের ঈদে জুতা (শু) পরলে কষ্ট। ব্যাক বেল্টের স্যান্ডেলেই আরাম।’ একই রকম কথা বললেন তাঁর স্ত্রী তাসলিমা আক্তার। তাসলিমা বলেন, ‘ডায়াবেটিসের রোগী হওয়ায় সাধারণত পা-ঢাকা জুতাই পরা হয়। কিন্তু গরমের মধ্যে পা-ঢাকা জুতায় সমস্যা। তাই স্যান্ডেল টাইপ জুতা নিচ্ছি।’

তবে সবাই যে শুধু ঈদের সময়টা মাথায় রেখে জুতা কিনছেন, তা নয়। সারা বছরের কথা বিবেচনা করেও জুতা কিনে রাখছেন অনেকে। এলিফ্যান্ট রোডে জুতা কিনতে আসা তরুণ তাহমিদুল ইসলাম বলেন, ‘বছরে এক-দু জোড়ার বেশি জুতা কেনা হয় না। ঈদে যেটা কিনব সেটা তো শুধু ঈদের দিনের জন্য না, অফিসেও ওটাই পরব। তাই ফরমাল শু কিনব।’

প্রতি ঈদেই নতুন নকশার জুতা নিয়ে আসে বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও জুতার ব্যবসায়ীরা। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। বাটা, এপেক্স, ভাইব্রেন্টসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ড নারীদের জন্য নিয়ে এসেছে ট্রেন্ডিং হিল, ফ্ল্যাট শু, স্যান্ডেল। আর পুরুষদের জন্য ড্রেস শু, মোকাসিন, লোফার, সামার স্যান্ডেল, হাফ লোফারসহ বেশ কিছু কালেকশন এনেছে।

বসুন্ধরা সিটিতে বাটার শোরুমে পুরুষদের জুতা পাওয়া যাচ্ছে ৫০০ থেকে ১৭ হাজার টাকার মধ্যে। নারীদের জুতা রয়েছে ৫০০ থেকে ৬ হাজার টাকার মধ্যে। আর শিশুদের জুতা পাওয়া যাচ্ছে ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকায়।

বিক্রেতারা জানান, রমজানের শেষ ১০ দিনেই মূলত জুতা বিক্রি হয়।

এবার শেষ ১০ দিনেও ক্রেতা তুলনামূলক কম। যাঁরা কিনছেন, তাঁদেরও বাজেট কম। ৭০০ থেকে ২ হাজারের জুতাগুলো বেশি চলছে।

বসুন্ধরা সিটির রিসেন্ট শুজের দোকানি মোহাম্মদ ইয়াসিন বলেন, ‘শেষের দিকে এসে আমাদের বিক্রিটা একটু বাড়ছে। গরম বলে শু এবং কেডস কম চলছে।’

একই রকম কথা জানান শু গ্যালারির দোকানি মোহাম্মদ নাঈম। তিনি বলেন, ‘লেডিস, জেন্টস বা কিডস—ক্যাজুয়াল কালেকশনগুলোই বেশি চলছে।’

জুতার দোকান ঘুরে দেখা যায় চামড়া, রেক্সিন, পলিফাইবারসহ বিভিন্ন উপাদানের জুতা রয়েছে। উপকরণের ভিন্নতার সুযোগ নিয়ে প্রতারণার অভিযোগও করছেন ক্রেতারা। জুতা কিনতে আসা শিক্ষার্থী মোরসালিন ইসলাম বলেন, ‘চামড়ার জুতা বলে রেক্সিনের জুতা গছিয়ে দিচ্ছে অনেকে। আমি না-হয় পার্থক্যটা বুঝি। তাই ঠকিনি। কিন্তু অনেকেই না বুঝে দুই নম্বর জিনিসটা কিনবে।’

ক্রেতাদের অভিযোগ, ছোটদের জুতার দাম তুলনামূলক বেশি চাওয়া হচ্ছে। আর বিক্রেতারা বলছেন, আমদানি মূল্য ও ভ্যাট, ট্যাক্সের কারণে ছোটদের জুতার দাম তুলনামূলক বেশিই হয়ে থাকে।

বিপণিবিতান ছাড়াও রমজানের শেষ পর্যায়ে এসে ফুটপাতের জুতার দোকানগুলোতেও রয়েছে ক্রেতার ভিড়। সায়েন্স ল্যাব এলাকার জুতা বিক্রেতা রাজ্জাক মিয়া বলেন, ‘অনেক মানুষ কেনাকাটা শেষ কইরা ঢাকা ছাড়ছে। ঢাকা শহর এহন অনেক ফাঁকা। তারপরেও এহনো আমরা মোটামুটি ভালোই কাস্টমার পাইতেছি।’ তাঁর কাছে ছেলে ও মেয়েদের ৮০ থেকে শুরু করে ৭০০ টাকা পর্যন্ত দামের জুতা রয়েছে বলে জানান রাজ্জাক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত