মিটফোর্ড হাসপাতালে সার্ভার বিকল থাকায় ভোগান্তিতে রোগীরা

প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২১, ২২: ২৯

মিটফোর্ড (ঢাকা): স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে গত এক সপ্তাহ ধরে সার্ভার বিকল থাকায় সেবা বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ডাক্তার দেখানোর টিকিট, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার অর্থ জমাসহ যাবতীয় লেনদেন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে রোগীদের। এতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোগী সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। সরেজমিনে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত ২০শে জুন রোববার থেকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের টিকিট ও পরীক্ষা নিরীক্ষার টাকা জমা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত ৭টি কাউন্টারের মধ্যে ৬টি বন্ধ রয়েছে। ওই সব কাউন্টারে রোগীরা কয়েক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। অন্তবিভাগের ভর্তি হওয়া রোগীর স্বজনরাও জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর টাকা জমা দিতে ভোগান্তিতে পড়ছে। এ সুযোগে দালালেরা রোগীদের প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যাচ্ছে। 

হাসপাতাল সূত্র বলছে, হাসপাতালটিতে সার্ভার সচল থাকাকালীন ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার রোগী টিকিট নিতে পারলেও গত ১ সপ্তাহ থেকে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫ শত রোগীকে টিকিট দেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার ১ হাজার ৪৫ জন ও আজ বুধবার ২ হাজার ১ শত ৩৭ জনকে টিকিট দেওয়া হয়েছে। ওই হিসেবে প্রতিদিন গড়ে ২ থেকে ২ হাজার ৫ শত রোগী সেবা বঞ্চিত হচ্ছে। এ ছাড়া টিকিট পাওয়া রোগীরা প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার টাকা জমা দিতে পারছে না। ফলে তাদেরও কাঙ্ক্ষিত সেবা পেতে তিন থেকে চার দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। 

কেরানীগঞ্জ থেকে আগত সেলিম, আব্দুস সাত্তার, শাহআলমসহ কয়েকজন রোগীর স্বজন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে পারিনি। আবার ১টা না বাজতেই টিকিট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। গত কয়েক দিন থেকে তাঁদের পরিচিত অনেকে সারা দিন লাইন ধরেও টিকিট পাননি বলে জানান তাঁরা।

হাসপাতালে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর একজন স্বজন জাহাঙ্গীর আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডাক্তার জরুরি ভিত্তিতে এক্স-রে, সিবিসি, আরবিএস ও ইলেকট্রো লাইট নামে কয়েকটি পরীক্ষা করিয়ে আনতে বলে। কিন্তু গত দুই দিন থেকে লাইন ধরে টাকা জমা দিতে না পেরে বাধ্য হয়ে দালালের মাধ্যমে প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কয়েকগুণ বেশি টাকা দিয়ে পরীক্ষাগুলো করিয়ে এনেছি। কাউন্টার একটা খোলা, লাইনে দাঁড়ানো কয়েকশত লোক। তার ওপর দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা ১ শত টাকার বিনিময়ে পেছনের লোককে সামনে নিয়ে এসে টাকা জমা দেওয়াচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই ওই আনসার সদস্যরা মারধর করছে বলে জানান তিনি। 

টিকিট কাউন্টারে দায়িত্বরত রনি নামের একজন কর্মী জানান, হাতে লিখে টিকিট দিতে হচ্ছে, এ কারণে বিলম্ব হচ্ছে। ৭টি কাউন্টার থাকার পরও আপনি একা কাজ করছেন কেন-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অন্য কর্মীরা বেলা ১২টা পর্যন্ত ছিল। এরপর থেকে আমি একাই চালাচ্ছি। প্রতিদিন দুপুর ১টা থেকে একটি কাউন্টার খোলা থাকে বলেও জানান তিনি।

মিটফোর্ড হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মো. রাশিদ উন নবী বলেন, গত শুক্রবার থেকে সার্ভার বিকল থাকায় রোগীদের কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। তারপরও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কোম্পানিকে আজও নগদ ৬৫ হাজার টাকা দিয়েছি। আগামী শনিবারের মধ্যে সার্ভার ঠিক হয়ে যাবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত