Ajker Patrika

আমরা মন্দিরে আগুন দিইনি: মারধরে আহত শ্রমিক

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৮: ১৮
আমরা মন্দিরে আগুন দিইনি: মারধরে আহত শ্রমিক

ফরিদপুরের মধুখালীর কালীমন্দিরের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে স্কুলের নির্মাণশ্রমিকদের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না, নিছক সন্দেহের বশে উত্তেজিত এলাকাবাসী তাঁদের ওপর হামলা চালান বলে দাবি করেছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শ্রমিকেরা। এই আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হলো সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনো নিশ্চিত কিছু জানাতে পারেনি। 

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লির কৃষ্ণনগর গ্রামের কালীমন্দিরের মূর্তিতে আগুন লাগে। এলাকাবাসী এর জন্য পাশের পঞ্চপল্লি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টয়লেট নির্মাণের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের দোষারোপ করে রাত ৯টার দিকে তাঁদের মারধর করে। এ ঘটনায় সহোদর দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আরও কয়েকজন চিকিৎসাধীন।

তাঁদের একজন নান্নু মন্ডল ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পঞ্চমতলার সার্জারি বিভাগে ভর্তি। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, তাঁকে ঘিরে বসে আছেন বাবা আহমেদ আলী মন্ডলসহ স্বজনেরা। সকালেই খবর পেয়ে নওপাড়া ইউনিয়নের তারাপুর গ্রাম থেকে ছুটে আসেন তাঁরা।

আজ শুক্রবার দুপুরে কথা হয় নান্নু মন্ডলের সঙ্গে। মন্দিরে কীভাবে আগুন লেগেছে, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি। এই শ্রমিক বলেন, ‘মন্দিরে আগুন লাগলে আমাদের দোষারোপ করে মারধর শুরু করে এলাকার হিন্দুরা। আমরা মন্দিরে আগুন দিইনি, আমরা কেন আগুন দিতে যাব?’ 

নান্নু মন্ডলের পাশের বেডে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় মো. সিরাজ শেখ নামে অপর এক গুরুতর আহত শ্রমিককে। তিনি বোয়ালমালী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের ময়না গ্রামের বাসিন্দা। চিকিৎসকেরা জানান, তিনি এখনো শঙ্কামুক্ত নয়। তাঁর পাশে চুপচাপ বসে থাকতে দেখা গেছে স্ত্রীকে। 
 
তাঁর স্ত্রী এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘কাজে বের হয়ে আজ সে মৃত্যুমুখী। বিনা কারণে আমার স্বামীসহ অন্যদের যারা মারধর করেছে, সরকারের কাছে তাদের বিচারের দাবি জানাই। তাদের কঠিন শাস্তি চাই।’ 

পঞ্চপল্লি এলাকা পাঁচটি গ্রাম নিয়ে গঠিত। এই পঞ্চপল্লি হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা। গতকাল রাতে পঞ্চপল্লির কৃষ্ণনগর গ্রামের এই কালীমন্দিরে সন্ধ্যাবাতি দেন তপতী মন্ডল নামে এক নারী। প্রতিদিনই তিনি সন্ধ্যাবাতি দিয়ে থাকেন। 

তপতী মন্ডল রাতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রশাসনকে বলেন, ‘মায়ের ঘরে (কালীমন্দির) সন্ধ্যাবাতি দিচ্ছিলাম। তখন শ্রমিকেরা জানালা দিয়ে দেখছিল। এরপর আমি বাড়ি গিয়েছিলাম। তখন ওরা (শ্রমিকেরা) ওপরে রড ওঠাচ্ছিল আর নিজেরাই বকাবাজি করছিল। এরপর আমি চিৎকার শুনতে পাই। এগিয়ে গিয়ে দেখি মা একদম পুড়ে গেছে। মুহূর্তে লোকজন জড়ো হয়ে গেল। এরপর কী হলো দেখিনি। এ ছাড়া কারা মন্দিরে আগুন দিয়েছে তা-ও জানি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত