Ajker Patrika

মানুষকে বঞ্চিত করার প্রক্রিয়া চলমান থাকলে সংস্কার কোথায় হচ্ছে: আনু মুহাম্মদ

অনলাইন ডেস্ক
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আনু মুহাম্মদসহ অতিথিরা। ছবি: সংগৃহীত
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আনু মুহাম্মদসহ অতিথিরা। ছবি: সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেছেন, বিগত সরকারের সময়ে মানুষের কথা শোনা হতো না, দমন–পীড়নের মাধ্যমে মানুষকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল। এই প্রক্রিয়া এখনো চলমান রয়েছে।

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে গ্রামীণ ব্যাংক (চতুর্থ শ্রেণি) কর্মচারী পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বর্তমান সরকার সংস্কার করছে বলছে। কিন্তু, মানুষকে বঞ্চিত করার প্রক্রিয়া যদি চলমান থাকে, তাহলে সংস্কার কোথায় হচ্ছে?’

তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে একটা বড় ধরনের গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের সব ধরনের মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন। যাঁরা গ্রামীণ ব্যাংকে কাজ করেন তাঁরাও অংশগ্রহণ করেছেন। সে অংশগ্রহণের মাধ্যমে যে পরিবর্তনটা হয়েছে, সে পরিবর্তনের প্রধান আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে এমন একটা রাজনৈতিক–অর্থনৈতিক ব্যবস্থা করা, যেটা বৈষম্যহীন এবং গণতান্ত্রিক হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত গত ছয় মাসে আমরা এই যে আকাঙ্ক্ষা বা প্রত্যাশা তার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ কোনো পদক্ষেপ লক্ষ করিনি। এখানে একটা বড় ধরনের ঘাটতি দেখছি। তার একটা বড় উদাহরণ হচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংক।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের অনিয়ম ও বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে ৩২ বছর ধরে, যা কোনো সরকারই সমাধান করেনি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, বর্তমান সরকারপ্রধান যখন গ্রামীণ ব্যাংকের অংশীদার, তখন কেন এসব কর্মচারী ন্যায্য অধিকার দেওয়া হয়নি?’

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেছেন, ‘আইন আছে, কোনো ব্যক্তি যদি তিন বছর একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন, তাহলে তাঁর সে চাকরি স্থায়ী হিসেবে গণ্য করা হয়। তাহলে ৩২ বছর কোনো আইনে অস্থায়ী চাকরি করেন একজন ব্যক্তি? গ্রামীণ ব্যাংকের নিজেদের নীতিমালাতেই আছে নয় মাসের বেশি অস্থায়ী চাকরি করা যাবে না। তাহলে নিজেরা নিজেদের আইনই মানছেন না।’

বর্তমান গুম কমিশনের প্রধান বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে থাকা মামলা চলমান থাকবে।’

আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংকের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করলেও চাকরি স্থায়ীকরণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সরকারি ছুটি, সাপ্তাহিক ছুটি, বেতন–ভাতা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, পেনশন, সামাজিক নিরাপত্তার কোনো সুবিধা দেওয়া হয় না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিট রিপোর্টে গ্রামীণ ব্যাংকের নিয়োগ–সংক্রান্ত অনিয়ম উল্লেখ থাকলেও সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাঁরা গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই বৈষম্যের অবসান চেয়ে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি জানান। এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে পাঁচটি দাবি পেশ করা হয়।

গ্রামীণ ব্যাংক চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি আলাউদ্দিন আল মামুনের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শ্রমিক–কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মানস নন্দী, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সভাপতি সীমা দত্ত, বাসদ (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত