রাজধানীর গণপরিবহন
সৌগত বসু, ঢাকা
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে টঙ্গী—এই বাস রুটের দূরত্ব প্রায় ৩২ কিলোমিটার। বাসে যাত্রাবাড়ী থেকে টঙ্গী যেতে সময় লাগে প্রায় তিন ঘণ্টা। এই রুটে সব সময় স্থানভেদে যাত্রী থাকে। সকালে অফিস শুরুতে ও বিকেলে ছুটির পর এই রুটের বাসগুলোতে প্রচণ্ড ভিড় থাকে।
গত ২৮ অক্টোবর মালিবাগ থেকে বাড্ডা পর্যন্ত এই রুটে চলাচলকারী তুরাগ পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন এই প্রতিবেদক। মালিবাগ মোড়ে ঢোকার আগের মোড়ে একটি বাস এসে দাঁড়ায়। এ সময় বেশ কিছু যাত্রী বাসে ওঠেন। বাসটির স্টিলের অবকাঠামোতে করা রং উঠে গেছে। পেছনের অংশে কোনো বাতি নেই। পেছনের দিকের ওপরের অংশে থাকা বাতির অংশ ভাঙা। হেডলাইটের অবস্থাও করুণ। নেই কোনো দিকনির্দেশক বাতি। চালকের পাশে একটি আয়না থাকলেও সেটির অর্ধেক ভাঙা।
বাসের ভেতরের অবস্থা আরও করুণ
তুরাগ পরিবহনের এই বাসের ভেতরে আয়তন প্রায় ২৫ ফুট। দরজা দিয়ে প্রবেশ করলে হাতের বাঁ পাশে তিনজনের বসার আসন। এক পাশে ইঞ্জিন বক্স এবং তার পাশেই চালকের আসন। চালকের মাথার ওপর ভাঙা ছোট একটা ফ্যান। সেটির কোনো নিরাপত্তাবেষ্টনী নেই। দুপাশে দুজন করে বসা যায় এমন আসন আছে ৪০টি। সিটগুলোর আয়তন খুবই ছোট। এই সিট নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগের শেষ নেই। এই আসনে একজন মানুষ বসলে পা ঠিকমতো রাখা যায় না। আসনের কাপড়ের কভারগুলো তেল চিটচিটে হয়ে পড়েছে। দুপুরে যখন বাসটি মালিবাগ পার হয়, তখন যাত্রীভর্তি থাকলেও নতুন করে ওঠানোর জন্য মরিয়া হতে দেখা যায় চালক ও তাঁর সহকারীকে। হিসাব করে দেখা যায়, ১২ ফুট চওড়া আর ২৫ ফুট লম্বা বাসে যাত্রী প্রায় ৬০ জন।
বাসের সহকারী বললেন, ‘ভাই, আপনে দেখেন যাত্রী। আমরা দেখি টাকা। সামনে রামপুরা গেলেই বাস ফাঁকা হয়ে যাইবো। এক ট্রিপে হাজারের ওপরে জমা দিতে হয়। যাত্রী না হইলে আমি আর ওস্তাদের (চালক) টাকা আসবো না।’
বাসের যাত্রী ছায়েদুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন তিনি প্রায় নিরুপায় হয়ে এই বাসে ওঠেন। সাদা জামা পরে এই বাসের আসনে বসলে সেটি আর সাদা থাকে না। বৃষ্টি এলে জানালার কাচ আটকানো যায় না।
মালিবাগ থেকে বাসটি ছাড়ার পর রামপুরা ব্রিজ এলাকায় আসতে পাঁচ থেকে ছয় জায়গায় যাত্রী ওঠানো হয়। রামপুরা পর্যন্ত আসতে আরও পাঁচ জায়গায় বিরতি নেয় বাসটি। আড়াই কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিতেই পৃথক দুটি বাসের সঙ্গে কিছুটা ঘেঁষাঘেঁষিও হয় তুরাগ পরিবহনের বাসটির।
অভিযোগ আছে, কয়েক বছর ধরে বারবার রং করে এসব বাস পুনরায় রাস্তায় নামানো হচ্ছে। এসব বাস বন্ধে অভিযান পরিচালনা করলে রাজধানী গণপরিবহন শূন্য হয়ে পড়ে। সড়কসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এসব অভিযান নিয়ে তাঁদের অপারগতা স্বীকার করেছেন বারবার।
পরিবহন মালিক সমিতির হিসাবমতে, রাজধানীর ২৯০টির বেশি রুটে চলাচল করা প্রায় ৬ হাজার বাসের বেশির ভাগই রংচটা। অনেক বাসের মেয়াদ শেষ হলেও বন্ধ হয়নি যাত্রী পরিবহন। এর মধ্যে সহস্রাধিক বাস ২০ বছরের পুরোনো।
চালক-সহকারীর অধিকাংশই ধূমপায়ী
রামপুরা ব্রিজের কাছে বাসের একটি চেকিং পয়েন্ট রয়েছে। একই দিন অছিম পরিবহনের একটি বাস এখানে এসে থামার পর চালকের সহকারী নেমে একটি সিগারেট কেনেন। এরপর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ফুঁকতে থাকেন। বাস চালু হলে সিগারেটটি চালককে দিয়ে দেন। আয়েশি ভঙ্গিতে চালক সিগারেট মুখে নিয়েই বাস আগাতে থাকেন।
লক্কড়ঝক্কড় বাসে ভরা ঢাকার গণপরিবহন
শুধু যাত্রাবাড়ী-টঙ্গী রুট নয়, বরং ঢাকার সব কটি রুটেই যাত্রীসেবার নামে নৈরাজ্য চলছে। পুরান ঢাকার বাবুবাজার থেকে কেরানীগঞ্জ, নয়াবাজার-গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে কাঁচপুর সেতুর ওপার পর্যন্ত রুটের বাসগুলোর বেশির ভাগই ফিটনেসবিহীন। রামপুরা থেকে গাজীপুরগামী অনাবিল, ছালছাবিল, মোহাম্মদপুর থেকে বনশ্রী রুটের তরঙ্গ পরিবহন, গাজীপুর থেকে গুলিস্তান রুটে বলাকা, গাজীপুর পরিবহন, প্রভাতি বনশ্রী পরিবহন, মোহাম্মদপুর থেকে বনশ্রীতে চলাচলকারী রমজান পরিবহন, মিরপুর থেকে যাত্রাবাড়ী রুটে চলাচলকারী শিকড়, প্রজাপতি পরিবহনেরও একই অবস্থা। বিশেষ করে ঢাকার প্রবেশদ্বারগুলো থেকে আশপাশের জেলাগুলোতে চলাচলকারী বাস-মিনিবাসের অধিকাংশই লক্কড়ঝক্কড়।
এদিকে সিটিং সার্ভিস নাম দিয়েও এসব বাস থেকে গলাকাটা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। যাত্রীদের অভিযোগ, ভাঙাচোরা বাস থাকলেও ভাড়ার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় নেই; বরং সময়-সুযোগ বুঝেই আদায় করছে বাড়তি ভাড়া।
বিআরটিএর তথ্যে, দেশে বর্তমানে ফিটনেসবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি। বাস্তবে এ সংখ্যা আরও বেশি।
সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সিটি সার্ভিসের ৮৯ দশমিক ২ শতাংশ শ্রমিকের মতে, তাঁদের কোম্পানির বাস নিয়ম অনুযায়ী বাসের টায়ার, ইঞ্জিন অয়েল, ব্রেক-সংক্রান্ত সরঞ্জামাদি পরিবর্তন ও রক্ষণাবেক্ষণ করে না। ৪০ দশমিক ৪ শতাংশ কর্মীর মতে, মূল নকশা পরিবর্তন করে অতিরিক্ত আসন সংযোজন করা হয়েছে।
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) সূত্র বলছে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ঢাকার রাস্তায় ফিটনেস ও লক্কড়ঝক্কড় বাসের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। ডিটিসিএর তথ্য বলছে, ঢাকার শাহবাগ, আজিমপুর, যাত্রাবাড়ী, মহাখালী, রামপুরা, ফার্মগেট, মিরপুর ও মতিঝিল দিয়ে চলাচলকারী ৪ হাজার ৬০৯টি বাসের মধ্যে ৩ হাজার ২৫০টিই অবৈধ। এদিকে ঢাকার বাসগুলোকে কোম্পানির আওতায় এনে বাস রুট রেশনালাইজেশন কোম্পানি গঠন করার কাজ করছে ডিটিসিএ। এই প্রকল্পে ২০২১ সাল থেকে বাস চালু হলেও সেটি বেশি দূর এগোয়নি। প্রকল্পের পরিচালক ধ্রুব আলম বলেন, তাঁরা আবার ৪২টি রুট চালু করার চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে সভাও হচ্ছে।
কী বলছে মালিক সমিতি
বাসের এসব দুরবস্থার পরেও ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির আহ্বায়ক সাইফুল আলম লোকাল সার্ভিসের দায় যাত্রীদের কাঁধেই দিলেন। তিনি বলেন, ‘যাত্রীরা সড়কে সিটিং, গেটলক সার্ভিস চান না। আর ঢাকার যাত্রীরা সর্বোচ্চ ৬-৭ কিলোমিটার দূরত্বে যাতায়াত করেন। তাঁরা লোকাল সার্ভিস রাখার পক্ষেই মত দেন।’
কোম্পানি করার মত বিশেষজ্ঞদের
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক হাদিউজ্জামান বলেন, সরকারকে একটি কোম্পানি গঠন করতে হবে। ঢাকা শহরে এই কোম্পানির বাইরে কোনো বাস চলতে পারবে না। এখন বেসরকারি যেসব বাস রয়েছে, তারা হয় এই কোম্পানির কাছে বাস দিয়ে অংশীজন হবে, নয়তো কোম্পানির কাছে বাস বিক্রি করে দেবে।
বিআরটিএর রোড সেফটি শাখার পরিচালক শেখ মাহবুব-ই-রব্বানী বলেন, ঢাকার বায়ুমান উন্নত করতে সড়ক থেকে ২০ বছরের পুরোনো বাস তুলে দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে এনফোর্সমেন্ট বিভাগ ও ট্রাফিক বিভাগ সম্মিলিতভাবে সক্রিয় রয়েছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে টঙ্গী—এই বাস রুটের দূরত্ব প্রায় ৩২ কিলোমিটার। বাসে যাত্রাবাড়ী থেকে টঙ্গী যেতে সময় লাগে প্রায় তিন ঘণ্টা। এই রুটে সব সময় স্থানভেদে যাত্রী থাকে। সকালে অফিস শুরুতে ও বিকেলে ছুটির পর এই রুটের বাসগুলোতে প্রচণ্ড ভিড় থাকে।
গত ২৮ অক্টোবর মালিবাগ থেকে বাড্ডা পর্যন্ত এই রুটে চলাচলকারী তুরাগ পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন এই প্রতিবেদক। মালিবাগ মোড়ে ঢোকার আগের মোড়ে একটি বাস এসে দাঁড়ায়। এ সময় বেশ কিছু যাত্রী বাসে ওঠেন। বাসটির স্টিলের অবকাঠামোতে করা রং উঠে গেছে। পেছনের অংশে কোনো বাতি নেই। পেছনের দিকের ওপরের অংশে থাকা বাতির অংশ ভাঙা। হেডলাইটের অবস্থাও করুণ। নেই কোনো দিকনির্দেশক বাতি। চালকের পাশে একটি আয়না থাকলেও সেটির অর্ধেক ভাঙা।
বাসের ভেতরের অবস্থা আরও করুণ
তুরাগ পরিবহনের এই বাসের ভেতরে আয়তন প্রায় ২৫ ফুট। দরজা দিয়ে প্রবেশ করলে হাতের বাঁ পাশে তিনজনের বসার আসন। এক পাশে ইঞ্জিন বক্স এবং তার পাশেই চালকের আসন। চালকের মাথার ওপর ভাঙা ছোট একটা ফ্যান। সেটির কোনো নিরাপত্তাবেষ্টনী নেই। দুপাশে দুজন করে বসা যায় এমন আসন আছে ৪০টি। সিটগুলোর আয়তন খুবই ছোট। এই সিট নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগের শেষ নেই। এই আসনে একজন মানুষ বসলে পা ঠিকমতো রাখা যায় না। আসনের কাপড়ের কভারগুলো তেল চিটচিটে হয়ে পড়েছে। দুপুরে যখন বাসটি মালিবাগ পার হয়, তখন যাত্রীভর্তি থাকলেও নতুন করে ওঠানোর জন্য মরিয়া হতে দেখা যায় চালক ও তাঁর সহকারীকে। হিসাব করে দেখা যায়, ১২ ফুট চওড়া আর ২৫ ফুট লম্বা বাসে যাত্রী প্রায় ৬০ জন।
বাসের সহকারী বললেন, ‘ভাই, আপনে দেখেন যাত্রী। আমরা দেখি টাকা। সামনে রামপুরা গেলেই বাস ফাঁকা হয়ে যাইবো। এক ট্রিপে হাজারের ওপরে জমা দিতে হয়। যাত্রী না হইলে আমি আর ওস্তাদের (চালক) টাকা আসবো না।’
বাসের যাত্রী ছায়েদুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন তিনি প্রায় নিরুপায় হয়ে এই বাসে ওঠেন। সাদা জামা পরে এই বাসের আসনে বসলে সেটি আর সাদা থাকে না। বৃষ্টি এলে জানালার কাচ আটকানো যায় না।
মালিবাগ থেকে বাসটি ছাড়ার পর রামপুরা ব্রিজ এলাকায় আসতে পাঁচ থেকে ছয় জায়গায় যাত্রী ওঠানো হয়। রামপুরা পর্যন্ত আসতে আরও পাঁচ জায়গায় বিরতি নেয় বাসটি। আড়াই কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিতেই পৃথক দুটি বাসের সঙ্গে কিছুটা ঘেঁষাঘেঁষিও হয় তুরাগ পরিবহনের বাসটির।
অভিযোগ আছে, কয়েক বছর ধরে বারবার রং করে এসব বাস পুনরায় রাস্তায় নামানো হচ্ছে। এসব বাস বন্ধে অভিযান পরিচালনা করলে রাজধানী গণপরিবহন শূন্য হয়ে পড়ে। সড়কসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এসব অভিযান নিয়ে তাঁদের অপারগতা স্বীকার করেছেন বারবার।
পরিবহন মালিক সমিতির হিসাবমতে, রাজধানীর ২৯০টির বেশি রুটে চলাচল করা প্রায় ৬ হাজার বাসের বেশির ভাগই রংচটা। অনেক বাসের মেয়াদ শেষ হলেও বন্ধ হয়নি যাত্রী পরিবহন। এর মধ্যে সহস্রাধিক বাস ২০ বছরের পুরোনো।
চালক-সহকারীর অধিকাংশই ধূমপায়ী
রামপুরা ব্রিজের কাছে বাসের একটি চেকিং পয়েন্ট রয়েছে। একই দিন অছিম পরিবহনের একটি বাস এখানে এসে থামার পর চালকের সহকারী নেমে একটি সিগারেট কেনেন। এরপর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ফুঁকতে থাকেন। বাস চালু হলে সিগারেটটি চালককে দিয়ে দেন। আয়েশি ভঙ্গিতে চালক সিগারেট মুখে নিয়েই বাস আগাতে থাকেন।
লক্কড়ঝক্কড় বাসে ভরা ঢাকার গণপরিবহন
শুধু যাত্রাবাড়ী-টঙ্গী রুট নয়, বরং ঢাকার সব কটি রুটেই যাত্রীসেবার নামে নৈরাজ্য চলছে। পুরান ঢাকার বাবুবাজার থেকে কেরানীগঞ্জ, নয়াবাজার-গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে কাঁচপুর সেতুর ওপার পর্যন্ত রুটের বাসগুলোর বেশির ভাগই ফিটনেসবিহীন। রামপুরা থেকে গাজীপুরগামী অনাবিল, ছালছাবিল, মোহাম্মদপুর থেকে বনশ্রী রুটের তরঙ্গ পরিবহন, গাজীপুর থেকে গুলিস্তান রুটে বলাকা, গাজীপুর পরিবহন, প্রভাতি বনশ্রী পরিবহন, মোহাম্মদপুর থেকে বনশ্রীতে চলাচলকারী রমজান পরিবহন, মিরপুর থেকে যাত্রাবাড়ী রুটে চলাচলকারী শিকড়, প্রজাপতি পরিবহনেরও একই অবস্থা। বিশেষ করে ঢাকার প্রবেশদ্বারগুলো থেকে আশপাশের জেলাগুলোতে চলাচলকারী বাস-মিনিবাসের অধিকাংশই লক্কড়ঝক্কড়।
এদিকে সিটিং সার্ভিস নাম দিয়েও এসব বাস থেকে গলাকাটা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। যাত্রীদের অভিযোগ, ভাঙাচোরা বাস থাকলেও ভাড়ার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় নেই; বরং সময়-সুযোগ বুঝেই আদায় করছে বাড়তি ভাড়া।
বিআরটিএর তথ্যে, দেশে বর্তমানে ফিটনেসবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি। বাস্তবে এ সংখ্যা আরও বেশি।
সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সিটি সার্ভিসের ৮৯ দশমিক ২ শতাংশ শ্রমিকের মতে, তাঁদের কোম্পানির বাস নিয়ম অনুযায়ী বাসের টায়ার, ইঞ্জিন অয়েল, ব্রেক-সংক্রান্ত সরঞ্জামাদি পরিবর্তন ও রক্ষণাবেক্ষণ করে না। ৪০ দশমিক ৪ শতাংশ কর্মীর মতে, মূল নকশা পরিবর্তন করে অতিরিক্ত আসন সংযোজন করা হয়েছে।
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) সূত্র বলছে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ঢাকার রাস্তায় ফিটনেস ও লক্কড়ঝক্কড় বাসের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। ডিটিসিএর তথ্য বলছে, ঢাকার শাহবাগ, আজিমপুর, যাত্রাবাড়ী, মহাখালী, রামপুরা, ফার্মগেট, মিরপুর ও মতিঝিল দিয়ে চলাচলকারী ৪ হাজার ৬০৯টি বাসের মধ্যে ৩ হাজার ২৫০টিই অবৈধ। এদিকে ঢাকার বাসগুলোকে কোম্পানির আওতায় এনে বাস রুট রেশনালাইজেশন কোম্পানি গঠন করার কাজ করছে ডিটিসিএ। এই প্রকল্পে ২০২১ সাল থেকে বাস চালু হলেও সেটি বেশি দূর এগোয়নি। প্রকল্পের পরিচালক ধ্রুব আলম বলেন, তাঁরা আবার ৪২টি রুট চালু করার চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে সভাও হচ্ছে।
কী বলছে মালিক সমিতি
বাসের এসব দুরবস্থার পরেও ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির আহ্বায়ক সাইফুল আলম লোকাল সার্ভিসের দায় যাত্রীদের কাঁধেই দিলেন। তিনি বলেন, ‘যাত্রীরা সড়কে সিটিং, গেটলক সার্ভিস চান না। আর ঢাকার যাত্রীরা সর্বোচ্চ ৬-৭ কিলোমিটার দূরত্বে যাতায়াত করেন। তাঁরা লোকাল সার্ভিস রাখার পক্ষেই মত দেন।’
কোম্পানি করার মত বিশেষজ্ঞদের
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক হাদিউজ্জামান বলেন, সরকারকে একটি কোম্পানি গঠন করতে হবে। ঢাকা শহরে এই কোম্পানির বাইরে কোনো বাস চলতে পারবে না। এখন বেসরকারি যেসব বাস রয়েছে, তারা হয় এই কোম্পানির কাছে বাস দিয়ে অংশীজন হবে, নয়তো কোম্পানির কাছে বাস বিক্রি করে দেবে।
বিআরটিএর রোড সেফটি শাখার পরিচালক শেখ মাহবুব-ই-রব্বানী বলেন, ঢাকার বায়ুমান উন্নত করতে সড়ক থেকে ২০ বছরের পুরোনো বাস তুলে দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে এনফোর্সমেন্ট বিভাগ ও ট্রাফিক বিভাগ সম্মিলিতভাবে সক্রিয় রয়েছে।
ময়মনসিংহ নগরীর রহমতপুর এলাকার একটি ফিলিং স্টেশনে আগুনের ঘটনায় আব্দুল মালেক (৫০) নামের আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ছয়জনে দাঁড়িয়েছে।
২ মিনিট আগেময়মনসিংহে যাত্রীবাহী একটি বাস উল্টে সড়কের পাশে পুকুরে পড়ে গেছে। ঘটনাস্থল থেকে অজ্ঞাতনামা একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।
৮ মিনিট আগেসিলেটের শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিন হত্যার ঘটনায় দুই মূলহোতা শামীমা বেগম মার্জিয়ার নানি ও আলিফজান বেগমের মা কুতুবজান বিবি (৮৫) মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটের কানাইঘাট সদর ইউনিয়নের ছাউরা গ্রামে ছোটভাইয়ের বাড়িতে মারা যান তিনি।
৪০ মিনিট আগে৫ আগস্ট কক্সবাজারের মহেশখালীতে পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র–গুলিসহ দুজনকে আটক করেছে কোস্টগার্ড। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশি–বিদেশি দুইটি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও ২২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার উপজেলার কালারমারছড়ার মোহাম্মদ শাহ ঘোনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
৪৪ মিনিট আগে