মেঘনায় ট্রলারডুবি: আরও ২ মরদেহ উদ্ধার, নিহত বেড়ে তিন

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২৪, ১৬: ২২
Thumbnail image

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীতে বালুভর্তি বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলার ডুবে যাওয়ার ঘটনায় আরও দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেছেন ডুবুরিরা। এ নিয়ে দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩। এখনো নিখোঁজ আছেন পাঁচজন। এদিকে নিখোঁজদের স্বজনেরা ভিড় জমিয়েছেন নদীর তীরে।

ভৈরব ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আজিজুল হক রাজন বলেন, ‘আমরা বেলা ২টা পর্যন্ত দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। তারা হলেন পুলিশ সদস্যের স্ত্রী মৌসুমী ও আরাধ্য নামের এক বালিকা। অন্য নিখোঁজদের উদ্ধারে চেষ্টা চলছে। কিশোরগঞ্জ ও ভৈরবের পাঁচ সদস্যের ডুবুরি দল উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে। সকাল ৮টা থেকে আমাদের ডুবুরিরা উদ্ধারকাজ করে যাচ্ছেন।’

এর আগে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভৈরব সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর নিচে বালুভর্তি বাল্কহেডের ধাক্কায় একটি যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জীবিত ১২ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর লাশ উদ্ধার করেন। পরে শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ওই নারীর পরিচয় পাওয়া যায়। তাঁর নাম সুবর্ণা আক্তার (২০)। তিনি পৌর শহরের কমলপুর এলাকার স্বপন মিয়ার মেয়ে।

ভৈরব নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য সুবর্ণার লাশ কিশোরগঞ্জ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বালুভর্তি বাল্কহেডে থাকা তিন শ্রমিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

নিখোঁজ পুলিশ সদস্য সোহেল রানা, তাঁর স্ত্রী মৌসুমী বেগম ও দুই সন্তান ইভা বেগম ও রাইসুল ইসলামনিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন ভৈরব হাইওয়ে থানার কনস্টেবল সোহেল রানা। তিনি স্ত্রী, দুই সন্তান ও এক ভাগনিকে নিয়ে ওই নৌকায় ঘুরতে গিয়েছিলেন। নৌকাডুবির পর ভাগনি মারিয়া ভূঁইয়া বেঁচে ফিরতে পারলেও স্ত্রী মৌসুমী বেগম, দুই সন্তান ইভা বেগম ও রাইসুল ইসলামসহ নিখোঁজ হন সোহেল রানা।

এদিকে নরসিংদীর বেলাব উপজেলার দড়িগাঁও গ্রামের কলেজপড়ুয়া দুই বান্ধবী সুবর্ণা বেগম ও আনিকা বেগম ওই নৌকার আরোহী ছিলেন। সুবর্ণা তীরে ফিরতে পেরেছেন। তবে আনিকা এখনো নিখোঁজ। সুবর্ণা বেগম বললেন, তাঁদের ভ্রমণ শেষে ফিরে আসার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। বাল্কহেডটি ধাক্কা দেওয়ার পর তাঁরা দুজন ছিটকে নদীতে পড়ে যান।

মেঘনার তীরে নিখোঁজদের সন্ধানে স্বজনদের ভিড়এদিকে ট্রলারডুবির ঘটনায় আরও নিখোঁজ হন রুপা দে, তাঁর ভাইয়ের মেয়ে আরাধ্য ও ভগ্নিপতি বেলন দে। এদের মধ্যে আরাধ্যর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে আজ।

কনস্টেবল সোহেল রানার বাড়ি কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ গ্রামে। ভৈরব হাইওয়ে থানায় সাত মাস আগে যোগ দেন সোহেল রানা। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভৈরবেই থাকতেন। রাতে দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে স্বজনেরা ভৈরবে আসেন। তাঁর বাবা আব্দুল আলিম বলেন, ‘আমার সব শেষ হয়ে গেল। আমার ছেলে, ছেলের বউ, নাতি, নাতনি ঘুরতে গিয়ে পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়। এর মধ্যে ছেলের বউয়ের লাশ পাওয়া গেল আজ।’ 

রুপা দে, তাঁর ভাইয়ের মেয়ে আরাধ্য ও ভগ্নিপতি বেলনবাল্কহেডের ধাক্কায় মেঘনায় ট্রলার ডুবে একজন নিহত, নিখোঁজ ৮ বাল্কহেডের ধাক্কায় মেঘনায় ট্রলার ডুবে একজন নিহত, নিখোঁজ ৮ 

নিখোঁজ বেলন দে’র দুলাভাই প্রবীর দে বলেন, ‘আমাদের সাতজন আত্মীয় ডুবে যাওয়া নৌকায় ছিল। তাদের মধ্যে চারজনকে উদ্ধার করা হয়েছে গতকাল। একজনের মৃতদেহ পাওয়া গেল আজ। আরও দুজনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত