অ্যাম্বুলেন্সে পুড়ে মারা গেলেন শিশু রোগীসহ পরিবারের ৪ জন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
Thumbnail image
অ্যাম্বুলেন্সের সিলিন্ডার থেকে লাগা আগুনে পুড়ে যাওয়া একটি বাস। গত বুধবার সাভারের রাজ ফুলবাড়িয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইল থেকে চিকিৎসার জন্য অসুস্থ ছেলে ফুয়াদ সিদ্দিকীকে (১২) নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে রাজধানীর একটি হাসপাতালে আসছিলেন ফারুক হোসেন সিদ্দিকী ও মহসিনা সিদ্দিকী দম্পতি। সঙ্গে ছিলেন মহসিনার বড় বোন মাহফুজা আক্তার শিলা। তাঁদের বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকার অদূরে সাভারে পৌঁছালে সড়ক বিভাজকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। পরে পেছন থেকে দুটি বাস ধাক্কা দিলে অ্যাম্বুলেন্সটিতে আগুন ধরে যায়। এতে দগ্ধ হয়ে পরিবারটির চারজনই মারা যান।

গত বুধবার দিবাগত রাতে সাভারের রাজ ফুলবাড়িয়া এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকাগামী লেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আগুনে অ্যাম্বুলেন্সসহ চারটি যানবাহন ও একটি যানবাহনে থাকা ৮২টি ছাগল পুড়ে গেছে। এ ছাড়া অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন বাসের অন্তত সাত যাত্রী।

ফারুক টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ভবনদত্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তাঁর বাড়ি ওই এলাকায়।

পরিবারের সদস্যরা জানান, ফারুকের বড় ছেলে ফুয়াদ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। বুধবার রাতে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ফারুকের নিকটাত্মীয় রফিকুল ইসলাম বলেন, ফারুকের বড় ছেলে ফুয়াদ স্থানীয় ভবনদত্ত গণ উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ছোট ছেলে ফাহিম সিদ্দিকী গোপালপুর উপজেলায় সামছুদ্দিন-শামছুন্নাহার বায়তুল উলুম মাদ্রাসার হোস্টেলে থেকে হেফজ পড়ছে। ফুয়াদ হঠাৎ করেই কিছুদিন থেকে অসুস্থ। শরীরে রক্ত কমে যায়। ডাক্তারের পরামর্শেই কিছুদিন ধরে চলছিল তার চিকিৎসা। বুধবার তাকে ঢাকায় নেওয়ার পথে দুর্ঘটনায় পরিবারের চারজন শেষ।

এদিকে মা-বাবা ও বড় ভাইকে হারিয়ে নির্বাক ৯ বছরের ফাহিম সিদ্দিকী। সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়ির আঙিনায় চুপচাপ বসে আছে। তাকে ঘিরে আছেন স্বজনেরা। বাড়ির সামনে চারটি খাটিয়া সাজিয়ে রাখা হয়েছে। শোকে বিহ্বল গ্রামবাসী চারদিক থেকে ছুটে আসছে বাড়িতে।

সাভার হাইওয়ে থানার ওসি সওগাতুল আলম বলেন, ফুয়াদ এবং তার বাবা, মা ও খালাকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি বুধবার রাত ২টার দিকে সাভারের রাজ ফুলবাড়িয়া এলাকায় সড়ক বিভাজকের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে আটকে যায়। এ সময় রংপুর থেকে আসা ঝুমুর পরিবহনের একটি বাস সেটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে আগুন ধরে যায়। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে ঝুমুর পরিবহনে। এর কয়েক মিনিটের মধ্যে রংপুরের শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস ঝুমুর পরিবহনের বাসের পেছনে ধাক্কা খেয়ে আটকে যায়। এর পরপর ওই বাসটিতেও আগুন ধরে যায়। একই সময়ে খড়বোঝাই একটি ট্রাক পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সেটিতেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে অ্যাম্বুলেন্সসহ দুটি বাস ও একটি ট্রাক পুড়ে গেছে। অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে আটকে পড়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছে ফুয়াদ ও তার বাবা, মা আর খালা। এ ছাড়া ঝুমুর পরিবহনের লাগেজ রাখার স্থানে থাকা ৮২টি ছাগল পুড়ে গেছে।

হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার আ ক ম আখতারুজ্জামান বসুনিয়া বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, বাসের ধাক্কায় অ্যাম্বুলেন্সের সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত। ঘটনার পর পুড়ে যাওয়া যানবাহন চারটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক ও সহকারীরা পালিয়েছেন। মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

টিউলিপ সিদ্দিকের পতন ঘটাতে বাংলাদেশি ও ব্রিটিশ রাজনীতির আঁতাত

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

কিশোরগঞ্জে বিএনপি নেতা হত্যা: সাবেক চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ৪

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত