Ajker Patrika

৩৩ বছর আলমারিতে রাখা তাজা গ্রেনেড দিয়ে খেলত শিশুরা, অবশেষে ধ্বংস করল পুলিশ

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২৩, ১৮: ২১
৩৩ বছর আলমারিতে রাখা তাজা গ্রেনেড দিয়ে খেলত শিশুরা, অবশেষে ধ্বংস করল পুলিশ

১৯৯০ সালে বাড়ির পাশে পুকুর খননের সময় অপরিচিত একটি বস্তু পান জয়নাল আবেদিনের বাবা। কৌতূহলবশত সেটি যত্ন করে রেখে দেন আলমারিতে। কখনো আবার শিশুরা কান্নাকাটি করলে সেটি বের করে খেলতে দেওয়া হতো। জয়নাল আবেদিনের ছেলেও সেটি নিয়ে খেলেছে। তাঁদের ধারণাই ছিল না বস্তুটি আসলে একটি তাজা গ্রেনেড! খুবই নাটকীয়ভাবে বিষয়টি বুঝতে পারে জয়নালের পরিবার। অবশেষে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট গ্রেনেডটির বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।

আজ শিবচর থানার সামনের মাঠে তিন ফুট গর্ত করে বিশেষ কৌশলে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ সময় বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে চারপাশ। বিস্ফোরণের আগে আশপাশের মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া হয়।

জয়নাল আবেদিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁর বাবা ১৯৯০ সালের দিকে পুকুর খননের সময় এটি পেয়েছিলেন। বস্তুটি অদ্ভুত লেগেছিল, তাই ঘরে রেখে দিয়েছিলেন। মাঝেমধ্যে আলমারি থেকে বের করে শিশুদের খেলতে দিতেন। জয়নালের ছেলে যুবায়ের মুন্সিও ছোটকালে এটি নিয়ে খেলেছে। এখন তার বয়স ১৫ বছর। সম্প্রতি মামার বাড়ি বেড়াতে যায় যুবায়ের। সেখানে টেলিভিশনে সিনেমা দেখছিল। সিনেমায় গ্রেনেড বিস্ফোরণ দেখে বাড়ির সেই বস্তুটির কথা মনে পড়ে যুবায়েরের। সে মামাকে জানায়, এমন একটি বস্তু তাদের বাড়িতে আছে। ছোটকালে সেও এটি নিয়ে খেলেছে।

জয়নাল আবেদিন জানান, তখন তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। চারদিকে জানাজানি হয়। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে সেটি নিয়ে যায়। তখন জানানো হয়েছিল, আদালতের অনুমতি নিয়ে এটি ধ্বংস করতে হবে। গতকাল বুধবার আদালত অনুমতি দেওয়ার পর আজ ধ্বংস করল পুলিশ।

গত ৩ জুলাই আলমারি থেকে তাজা গ্রেনেড উদ্ধার করে পুলিশ।  ছবি: আজকের পত্রিকাপুলিশ জানায়, উপজেলার সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের রাজারচর গ্রামের জয়নাল আবেদিনের ছেলে মামা বাবু মোল্লার সঙ্গে সিনেমা দেখছিল। সিনেমার একটি দৃশ্যে গ্রেনেড দেখে মামাকে জানায়—তাদের বাড়িতেও এই ধরনের একটি বস্তু আছে। গত ৩ জুলাই রাতে বাবু মোল্লা স্থানীয় সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান। সাংবাদিকেরা শিবচর থানায় জানালে ওই দিনই পুলিশ জয়নালের ঘরের কাঠের আলমারি থেকে গ্রেনেডটি নিয়ে যায়।

পুলিশ আরও জানায়, গ্রেনেডটি পুরোনো, জং ধরা। তবে পিন অক্ষত ছিল। জয়নালের বাবা জহেরউদ্দিন মুন্সী ১৯৯০ সালে নিজের পুকুর খননের সময় এটি পান। এ তদিন সেটি তাঁর বাড়িতেই ছিল।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা গ্রেনেডটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। আদালতের নির্দেশে আজ দুপুরে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট এটির বিস্ফোরণ ঘটায়। এটি সক্রিয় একটি শক্তিশালী গ্রেনেড ছিল। বিস্ফোরণে বিকট শব্দ ও আশপাশের এলাকা কেঁপে ওঠে। আমরা জনগণকে অনুরোধ করব—এ ধরনের বিস্ফোরক পেলে তাৎক্ষণিক যেন পুলিশকে জানায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত