লঞ্চে ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী বহন, কর্তৃপক্ষ বলছে ঈদের মধ্যে স্বাভাবিক

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২২, ১৭: ৪৬

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। প্রতিটি লঞ্চে ধারণ ক্ষমতার প্রায় তিন গুন বেশি যাত্রী পরিবহন করা হলেও কর্তৃপক্ষ বলছে ঈদের মধ্যে এগুলো স্বাভাবিক। 

আজ শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল পর্যন্ত দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাট থেকে পাটুরিয়া ঘাটে ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি লঞ্চ ফাঁকা যাচ্ছে। অপরদিকে পাটুরিয়া ঘাট থেকে ধারণক্ষমতার চেয়ে প্রায় তিন গুণসংখ্যক বেশি যাত্রী বহন করে লঞ্চগুলো দৌলতদিয়া ঘাটে এসে ভিড়ছে। লঞ্চ ঘাটে ভেড়ার সময় সবাই একসঙ্গে নামতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। লঞ্চের ডেকে সবাই গাদাগাদি করে বসা। এ সময় বেশির ভাগ মানুষের মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি। কারও কারও মুখে মাস্ক থাকলেও তা থুতনির নিচে। 

এ সময় ঘাটে দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) প্রতিনিধি ও লঞ্চ মালিক সমিতির লোকজন সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে বারবার তাগিদ দিতে থাকে। 

পাটুরিয়া থেকে আসা লঞ্চ এমভি সলিমাবাদ-১–এর যাত্রী সাদেকুল ইসলাম গাজীপুর থেকে ফরিদপুর যাচ্ছিলেন। লঞ্চ থেকে নামার পর তিনি বলেন, খুব সকালে রওনা করে পাটুরিয়া ঘাটে আসি। এখানে এসে লঞ্চে উঠতেই দেখি লঞ্চে জায়গা নেই। কিন্তু তারপরও মানুষ দৌড়ে উঠছে। লঞ্চে লেখা ১৫৮ জন যাত্রীর ধারণ ক্ষমতা। কিন্তু লঞ্চে কমপক্ষে ৩০০ যাত্রী হবে। 

ঢাকা থেকে আসা মাদারীপুরগামী বৃদ্ধ আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমাদের মত বুড়া লোকের খুব কষ্ট হয় এভাবে আসতে। লঞ্চের মধ্যে একেবারেই তিল ধারণের জায়গা নেই।’ 

লঞ্চ এমভি সলিমাবাদ-১–এর ধারণক্ষমতা ১৫৮ জন। আসন অনুযায়ী যাত্রী বহনের কথা। অথচ ধারণ ক্ষমতার প্রায় তিনগুণ যাত্রী বহন করা হচ্ছে। 

লঞ্চের প্রধান মাস্টার জিয়াউল হক মুন্সি বলেন, ধারণক্ষমতার চেয়ে একটু বেশি যাত্রী এসেছে। সব মিলে প্রায় ২০০ জনের মতো হবে। যদিও বাস্তবে আরও বেশি যাত্রী ছিল। এত যাত্রী নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে জিয়াউল হক বলেন, পাটুরিয়া থেকে ধারণক্ষমতা হিসাব করেই যাত্রী আনা হয়েছে। অনেক সময় কিছু লোকাল যাত্রী জোর করে লঞ্চে উঠে পরে, এ জন্য কিছু বেশি যাত্রী হয়ে যায়। 

আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির দৌলতদিয়া ঘাট তত্ত্বাবধায়ক নুরুল আনোয়ার বলেন, ‘সরকারি ঘোষণা মোতাবেক ধারণক্ষমতা অনুযায়ী যাত্রী বহন করছেন। এ ছাড়া যাত্রীদের মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিচ্ছেন। তবে যাত্রীরা নিজ থেকে যদি সচেতন না হন, তাহলে কী করার আছে?’ 

লঞ্চঘাটে কর্তব্যরত বিআইডব্লিউটিএর ট্রাফিক সুপার ভাইজার মো. শিমুল মিয়া বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রীদের লঞ্চে ওঠার ক্ষেত্রে তাঁরা সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। ধারণক্ষমতার চেয়ে যাতে বেশি যাত্রী বহন না করে, সেদিকও খেয়াল রাখছেন। মাঝেমধ্যে কিছুসংখ্যক যাত্রী বেশি উঠে পড়ে। তবে ঈদের মধ্যে তা স্বাভাবিক বলে বিশেষ ছাড় দিয়ে থাকেন। কিন্তু অতিরিক্ত কোনো কিছুর সুযোগ নেই।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত