মামলা দিলে এক নম্বর আসামি, ১৮০ জনের মধ্যে ৯৪ নম্বর কেন: জেড আই খান পান্না

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০০: ০৪
Thumbnail image

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি ও মারধরের মাধ্যমে হত্যাচেষ্টার মামলায় আসামি করার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী, মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারপারসন জেড আই খান পান্না।

আহাদুল ইসলাম নামে একজনকে গুলির ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানীর খিলগাঁও থানায় আহাদুলের বাবা মো. বাকের মামলাটি করেন বলেন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাউদ হোসেন।

ওই মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ ১৮০ জনকে আসামি করা হয়। জেড আই খান পান্না নামে পরিচিত জহিরুল ইসলাম খানকে মামলার ৯৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে। 

মামলার বিষয়ে আজ রোববার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন জেড আই খান পান্না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে সক্রিয় থাকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এটা কোনো না কোনো প্রভাবশালীর ইন্ধনেই হয়েছে, তা নিয়ে আমার সন্দেহ নেই। মামলা দিলে এক নম্বর আসামি করে দেবেন, ১৮০ জন আসামির মধ্যে ৯৪ নম্বরে কেন আমার নাম দিলেন? আমি এটা নিয়ে অসন্তুষ্ট।’ 

জেড আই খান পান্না বলেন, ‘১৯ জুলাইয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে ১৭ অক্টোবর এবং ১৮০ জনের মধ্যে আমি ৯৪ নম্বর। যে স্থানের কথা বলা হয়েছে, সেই মেরাদিয়ায় আমি কখনো গেছি বলেও তো মনে হয় না।’

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৯ জুলাই খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়া বাজারের পশ্চিমে শুক্কুর আলী গার্মেন্টস মোড়ে ছাত্র–জনতার আন্দোলনে অংশ নেন বাদী মো. বাকেরের ছেলে মো. আহাদুল ইসলাম। এ সময় পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাবসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন এবং ১৪ দলীয় জোটের নেতা–কর্মীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ ককটেল ও সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটান এবং আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালান। 

আরও উল্লেখ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে নসাৎ করার জন্য হত্যার উদ্দেশ্যে এ গুলি চালানো হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। সেখানে আহাদুল ইসলাম বাঁ পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে যান। সন্ত্রাসীরা তাঁকে পরে আরও লাঠিপেটা করেন। আহাদুলকে প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খিলগাঁও থানার ওসি দাউদ হোসেন বলেন, ‘আহতের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন, আমরা মামলা নিয়েছি। মামলাটি তদন্ত করে দেখা হবে যে এর সত্যতা রয়েছে কি না।’

গত জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে সে আইনজীবীরা রিট আবেদন করেছিলেন, তাঁদের অন্যতম ছিলেন জেড আই খান পান্না। সে বিষয় আসকের বার্তায় বিষয়টি উঠে আসে। 

সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, জেড আই খান পান্না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই ছাত্রদের ন্যায়সংগত দাবি এবং তাঁদের নেতৃবৃন্দকে আটকের ঘটনায় আইনি লড়াইয়ে সম্পৃক্ত থেকেছেন। তাঁর নীতি এবং আদর্শের জায়গায় তিনি সরব ছিলেন। 

আসকের বার্তায় বলা হয়, মানবাধিকারকর্মী জেড আই খান পান্না জীবনভর মানুষের অধিকারের কথা বলেছেন এবং বলছেন। কখনো তিনি ক্রসফায়ার, গুম, নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে কোনো পক্ষের অসন্তুষ্টিতে পড়েছেন, আবার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং ধর্মীয়, জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে কাজ করতে গিয়ে বিশেষ কোনো পক্ষের অসন্তুষ্টিতে পড়েছেন। 

সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘রিসেট বাটন’ বিষয়ে বক্তব্যের সমালোচনা করে বক্তব্য দেন জেড আই খান পান্না। সংবিধানে হাত দেওয়ার চেষ্টা, বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে আগুন, মুক্তিযুদ্ধের অবমাননা নিয়ে জোরালো বক্তব্য দেন তিনি। একই সঙ্গে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত বরখাস্তকৃত লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মিকে আইনি সহায়তা দেওয়ার কথাও জানান। 

হত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতাদের নামে মামলা দায়ের নিয়ে সমালোচনা করেছেন জেড আই খান পান্না। তিনি বলেন, এসব মামলার উদ্দেশ্য মানুষকে হয়রানি করা, যার ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে।

আরও পড়ৃন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত