মধুখালীতে দুই ভাইকে হত্যা: চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবিতে বিক্ষোভ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৮: ১১
Thumbnail image

ফরিদপুরের মধুখালীতে মন্দিরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ তুলে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ অন্য সবাইকে ১৫ দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার করে প্রকাশ্যে আনার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতারা। এ ছাড়া নিহতদের পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং দেশের প্রতিটি মন্দিরে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের দাবি জানানো হয়েছে। 

আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর ফরিদপুর শহরের ইমামউদ্দিন স্কয়ারে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে এ দাবি জানিয়েছেন দলটির নেতারা। দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার বিচার চেয়ে ও বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি বর্ষণের প্রতিবাদ জানিয়ে এ সমাবেশের আয়োজন করেন দলটির জেলা শাখা। 

এতে দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও জেলার নেতৃবৃন্দসহ কয়েক শত মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায় এবং বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করেন।

প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী। 

বক্তব্যকালে জাফরী বলেন, ‘এ দেশে আমরা হিন্দুদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়ে থাকি। এখন যদি তারা আমাদের ঘাড়ের ওপর উঠে বসে, তাহলে আমরা বসে থাকব না।’

জাফরী আরও বলেন, ‘মধুখালীতে পঞ্চপল্লীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাজে চাঁদা চেয়েছিল এক ইউপি সদস্য, আর পেছন থেকে নিয়ন্ত্রণ করেছেন ওই ইউপির চেয়ারম্যান। সেখানে নিহত আশরাফুল বাধা দিয়েছিল। যার কারণে মন্দিরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ তুলে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় দুই ভাইকে।’
 
চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ সবাইকে ১৫ দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার করে প্রকাশ্যে আনার দাবি জানিয়ে জাফরী বলেন, ‘ওই চেয়ারম্যানকে আপনারা কেন খুঁজে পাচ্ছেন না? এটা আমাদের কাছে আইওয়াশ মনে হচ্ছে। আমরা জেনেছি, ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটা যেন আইওয়াশ না হয়। ১৫ দিনের মধ্যে সকলকে গ্রেপ্তার না করলে আমরা মাঠে নামতে বাধ্য হবে।’
 
এ সময় ফরিদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মিজানুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনার এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও দৃষ্টান্তমূলক কিছু করা হয়নি। প্রশাসন কাদের পক্ষ নিয়েছে, কাদের খুশি করতেছে—আপনারা তা বুঝতে পেরেছেন। আমাদের আইওয়াশ করা হচ্ছে, দুদিন পর এটি লাপাত্তা হয়ে যাবে। এখনো চেয়ারম্যান এবং জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়নি।’

এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা শাখার সভাপতি মুফতি মোস্তফা কামাল, সহসভাপতি মাওলানা শামসুল হক, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আমজাদ হুসাইনসহ উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ। 

ফরিদপুর শহরে সতর্ক অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকাবক্তারা দেশের প্রতিটি মন্দিরে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ দরজার ব্যবস্থা করার দাবি জানান। তাঁরা বলেন, কোনো মুসলিম মন্দিরে আগুন দেন না, হামলাও করেন না। প্রতিটি মন্দিরে হিন্দুদেরই নিরাপত্তাব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলে মন্দিরে মন্দিরে আগুন কারা দিচ্ছে জানা যাবে। এ ছাড়া তারা সরকারের পক্ষ থেকে নিহতদের দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

প্রতিবাদ সমাবেশে বিজিবি ও পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা যায়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা  সমাবেশে আগতদের ঠান্ডা পানির ব্যবস্থা করেন দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত