রূপগঞ্জ অগ্নিকাণ্ড: ইয়াসিনকে ফিরে পেতে মায়ের আর্তনাদ

রবিউল আলম
প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২১, ০৩: ৫৭
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২১, ১০: ৫৩

হঠাৎ দুর্ঘটনায় যেন সবকিছু তছনছ হয়ে গেল। সংসারের হাল ধরেছিল যে ছেলেটি, সেই–ই এখন বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে, কেউ জানে না। মায়ের কাছ থেকে দুপুর ২টায় বিদায় নিয়ে ডিউটিতে এসেছিল ইয়াসিন (১৬)। সবে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সে। পরিবারের হাল ধরতেই তার কাজে যোগ দেওয়া। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, এক মুহূর্তের দুর্ঘটনায় সবকিছু যেন এলোমেলো হয়ে গেল। ইয়াসিনের সন্ধানে মা নাজমা আক্তার কারখানার বাইরে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।

আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিকে কাছে পেয়ে তিনি বলেন, ‘কাল সন্ধ্যায় আমার জন্য ৩০ টাকার হালিম কিনা আনছে। কেন আনছস জিজ্ঞেস করলে বলে, মা তোমার লাইগা আনছি। ও ইয়াসিন এখন কই তুই বাবা? ও আল্লাহ, তুমি ছাড়া এখন কেউ নাই। আমার বাড়িঘর দরকার নাই, আমি আমার ইয়াসিনকে চাই।’

নাজমা আক্তার কেঁদে কেঁদে প্রার্থনা করে বলেন, তাঁর ছেলে যেন ডিউটিতে আসার কথা বলে অন্য কোথাও যায়। ডিউটিতে যাওয়ার কথা থাকলেও সেজানের ডিউটিতে আজ যেন সে না যায়।

নাজমা আক্তারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরে। গ্রামের বাড়ি নদীতে ভেঙে যাওয়ায় সেজানের পাশের ৫ ক্যানেল এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন তিনি। তিন ছেলের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ইয়াসিন। দেড় বছর বয়সে ইয়াসিন তাঁর বাবাকে হারায়। এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হয়েছিল সে। সংসারের হাল ধরতে ৫ হাজার ৭০০ টাকা বেতনে চাকরি নেয়।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা এলাকায় সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত তিনজন নিহতের সংবাদ পাওয়া গেছে। ভেতরে আটকা আছেন অনেকেই।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত