পঞ্চপল্লীর মন্দিরে আগুন: তিন সপ্তাহের তদন্তেও রহস্য উদ্‌ঘাটন হলো না

ফরিদপুর প্রতিনিধি
Thumbnail image

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে মন্দিরে আগুন দেওয়ার সঙ্গে নির্মাণ শ্রমিকদের সম্পৃক্ততা মেলেনি। এ ছাড়া দুই সহোদর ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জনপ্রতিনিধিদের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা ছিল বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। 

ঘটনার ২৪ দিন পর আজ রোববার বিকেলে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন। 

গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় পঞ্চপল্লীর কৃষ্ণনগর গ্রামে কালি মন্দিরের মূর্তিতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এরপর আগুন দেওয়ার অভিযোগ তুলে দুই ভাইকে বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পরদিন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিদ্দিক আলীকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হলেও পরে সময় বাড়ানো হয়। এ ছাড়া কমিটির সদস্য বাড়িয়ে সাতজন করা হয়। 

তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জেলা প্রশাসক জানান, প্রতিবেদনে বেশ কিছু বিষয় উঠে এসেছে। তবে যেহেতু এটি আদালতে বিচারাধীন বিষয়, তাই এ বিষয়ে আমরা বেশি কিছু বলতে পারছি না। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিসহ অনেকের সম্পৃক্ততা ছিল। বিভিন্ন ভুক্তভোগীর বক্তব্যে উঠে এসেছে। তবে মন্দিরে অগ্নিসংযোগের বিষয়ে আগুন লাগানোর সঙ্গে দুই সহোদর জড়িত কিনা সে বিষয়ে কারও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মন্দিরে কে আগুন দিয়েছে সেটি খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। দুই সহোদর কিংবা অন্য কোনো শ্রমিক আগুন লাগিয়েছে কিনা সে বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী কারও কোনো বক্তব্য না পাওয়ায় তাঁদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মেলেনি।’ 

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি অনেকগুলো অবজারভেশন (পর্যবেক্ষণ) দিয়েছে। এসব স্থানে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে যাতে সিসি ক্যামেরা থাকে এবং অগ্নি নির্বাপণের যাতে ব্যবস্থা থাকে। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ এ ধরনের কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানিয়ে বাস্তবায়ন করা হয়।’ 

তবে এ ঘটনায় চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে কারও কাছ থেকে কোনো প্রমাণ স্বরূপ বক্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানান জেলা প্রশাসক। 

এদিকে এ ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিরাজ হোসেন। 

এর মধ্যে একটি হত্যা মামলা করেন নিহত দুই সহোদর আশরাফুল খান (২০) ও আরশাদুল খানের (১৮) বাবা মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের চোপেরঘাট গ্রামের মো. শাহজাহান খান (৪৬)। দ্বিতীয় মামলা করেন মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মন্দিরের পূজারি কৃষ্ণনগর গ্রামের বাসিন্দা প্রভাস চন্দ্র মণ্ডলের স্ত্রী তপতী রানী মণ্ডল (৪৭)। এ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের আহত করা, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করা এবং অগ্নিসংযোগের অভিযোগে তৃতীয় মামলাটির বাদী মধুখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শংকর বালা। 

মধুখালী থানার ওসি বলেন, এখন পর্যন্ত তিনটি মামলায় ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত