ছাত্র ইউনিয়ন ক্ষমা না চাইলে বড় ঘটনা ঘটতে পারে, ছাত্রলীগ নেতা সৈকতের হুমকি

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯: ৪৬
Thumbnail image

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীদের ওপর দুই দফায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। হামলার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করা হলেও অস্বীকার করেছেন ঢাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।

সৈকতের অভিযোগ, গত মঙ্গলবার ছাত্র ইউনিয়ন রাজু ভাস্কর্যে শেখ হাসিনার ছবিসংবলিত ব্যানার ছিঁড়েছে। এ সময় তিনি ছাত্র ইউনিয়ন প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে ‘আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারে’ বলে হুমকি দেন। 

তানভীর হাসান সৈকত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মারধর করেছে—এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসংবলিত ব্যানার ছিঁড়ে ফেলায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত রয়েছে। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীরা ছাত্র ইউনিয়নকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। তারা (ছাত্র ইউনিয়ন) প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে আরও বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানি। যদি ছাত্র ইউনিয়ন আমাদের কাছে নিরাপত্তা চায়, সেটাও আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে—যে জায়গায় আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবির নিরাপত্তা দিতে পারিনি।’ 

আজ বৃহস্পতিবার ঢাবিতে ফের ছাত্র ইউনিয়নের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) ঢাবি সংসদের সভাপতিসহ আহত হন চারজন। ঢাবি সংসদের সাবেক সভাপতি শিমুল কুম্ভকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, টিএসসিতে বসে তাঁরা (আহতরা) আড্ডা দিচ্ছিলেন। পরে মেঘমল্লার ও শুভ্র রিকশায় শাহবাগের দিকে গেলে মোটরসাইকেল আরোহী ৮-১০ জন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী গতিরোধ করে মারধর করেন। মাঈন আহমেদ তাঁর হল মুহসীন হলের দিকে চলে যাওয়ার সময় তাঁকে মারধর করা হয়। আর শিহাবকে ভিসি চত্বর এলাকাতে একই কায়দায় মারধর করা হয়। 

এর আগে মঙ্গলবার ইউপিডিএফের চার নেতা হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রজোটের মশাল মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটে। সে সময় সৈকত বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি আবেগের নাম, উনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দেওয়া ব্যানারে ছিঁড়ে ফেলার কারণে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্রজোটের নেতা-কর্মীদের মারধর করেছে। শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়েছে, আমাকেও ফোন দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করতে। তাঁদের কন্ট্রোল করা যাচ্ছে না। ছাত্রজোটের নেতা-কর্মীরা যদি ক্ষমা না চায়, তাহলে যেকোনো কিছু ঘটতে পারে।’ 

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সভাপতি সালামান সিদ্দিকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কেউ ব্যানার ছিঁড়ে নাই। যারা মনে করেছে রাজু ভাস্কর্যের সামনে ব্যানারটি বেমানান, তারা ছিঁড়েছে।’ 

এদিকে মঙ্গলবারের মশাল মিছিল ও শেখ হাসিনার ছবিসংবলিত ব্যানার ছেড়ার ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ আখ্যা দিয়ে পরদিন বুধবার ঢাবি রাজু ভাস্কর্যের মুখ কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীরা। 

সামগ্রিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান আজ বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, সকালে বাম দল (ছাত্র ইউনিয়ন) ফোন করে জানায় রাজু ভাস্কর্যের কালো কাপড় যেন সরিয়ে ফেলা হয়। যদি না সরানো হয় তাহলে যেকোনো কিছু ঘটতে পারে। তখন বলেছি, ‘যারা বেঁধেছে তাদের সঙ্গে কথা বলে দেখব। তবে আজকের মারধরের ঘটনা সম্পর্কে কোনো অভিযোগ পাইনি। প্রক্টর অফিস থেকে জানতে পেরে মোবাইল টিমকে ঢামেকে পাঠানো হলে সেখান থেকে জানানো হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ মারধরের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত