কালিয়াকৈর শিক্ষককে হত্যার ঘটনায় ভাই-ভাতিজাসহ গ্রেপ্তার ৪

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪: ০৩
আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪: ২০

গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার সাজনধার এলাকায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে কলেজশিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তাঁর দুই ভাই ও দুই ভাতিজাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনকে গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থানার জয়েরটেক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। এর আগে ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপর আসামিকে গ্রেপ্তার করে থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র‍্যাব। 

গত ২৮ জানুয়ারি বিকেলে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈরের ঢালজোড়া ইউনিয়নের সাজনধারা এলাকায় জমিতে আগাছা পরিষ্কারের সময় পিটিয়ে মারা হয় রেজা সাইদ আল মামুনকে (৫০)। তিনি ওই এলাকার মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে। কালিয়াকৈর থানার চন্দ্রায় অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান ছিলেন সাইদ আল মামুন।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন হত্যা মামলার প্রধান আসামি নিহতের ছোট ভাই মো. মজিবর রহমান (৫০), তাঁর ছেলে মো. সুমন (২৮) ও মো. সিজান (২০) এবং নিহতের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী।

মঙ্গলবার সকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন, র‍্যাব-১ গাজীপুর স্পেশালাইজড কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. ইয়াসির আরাফাত হোসেন। 

মো. ইয়াসির আরাফাত হোসেন বলেন, নিহত রেজা সাইদ আল মামুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজে অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ২৮ জানুয়ারি বিকেলে সাজনধারা এলাকায় নিজের ভোগদখলীয় ধানখেতে দক্ষিণ পাশে আইলের ওপর কাজ করছিলেন। এ সময় গ্রেপ্তার আসামিরা কাঠের লাঠি, দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সজোরে আঘাত করে মামুনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। 

তিনি আরও জানান, পরে আসামিরা নিহতের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করাসহ হুমকি-ধমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী হাসিনা আক্তার (৪৫) বাদী হয়ে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানায় চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ছোট ভাই মজিবুর ও তাঁর ছেলেদের মূল আসামি এবং নিহতের বড় ভাই মোহাম্মদ আলীকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।
  
র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাটি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারিত হয় এবং এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করায় এ ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারে র‍্যাব-১, গাজীপুরের স্পেশালাইজড কোম্পানি পোড়াবাড়ী ক্যাম্প আভিযানিক ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়।

তিনি আরও জানান, হত্যা মামলার হুকুমদাতা হিসেবে এজাহারনামীয় আসামি মোহাম্মদ আলীকে (৬৫) হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র‍্যাব। পরে ২৯ জানুয়ারি ভোররাত ৩টার দিকে র‍্যাব-১ তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে ও গোপন সূত্রে জানতে পারে, মামলার মূল পরিকল্পনাকারী মো. মজিবুরসহ অন্য আসামিরা জয়েরটেক এলাকায় আত্মগোপনে আছেন। র‍্যাব সদস্যরা অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে।

এই র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, র‍্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মো. মজিবুর জানান, ভিকটিমের সঙ্গে দীর্ঘদিন জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছে তাঁদের। এর জেরে গত ২৮ জানুয়ারি বিকেলে আসামিরা তাদের চাষ করা ধানি জমিতে আগাছা পরিষ্কার করতে যায়। পরে রেজা সাইদ আল মামুনও তার জমিতে যান। সেখানে মোহাম্মদ আলীর হুকুমে পূর্ব পরিকল্পনা মতো আসামিরা হাতে থাকা কাঠের লাঠি, দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। আসামিদের থানায় পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান মো. ইয়াসির আরাফাত হোসেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত