Ajker Patrika

পুকুরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর লাশ, শরীরে আঘাতের চিহ্ন, সহপাঠী আটক

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি 
নিহত সাফওয়ান ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
নিহত সাফওয়ান ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার শিকারপুর গ্রামের পুকুর থেকে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তার এক সহপাঠীকে আটক করেছে পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার শিকারপুর গ্রামের গুরোর ভিটা পুকুর থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত শিশুর নাম সাফওয়ান ইসলাম (৬)। সে শিকারপুর গ্রামের জামমিম হোসেন সবুজের ছেলে এবং স্থানীয় ফাতেমা মিজান হাফেজি মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র ছিল। চার মাস আগে সে মাদ্রাসাটিতে ভর্তি হয়েছিল। তার বাম চোখের নিচে এবং ডান কানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।

এ ঘটনায় জড়িত ওই মাদরাসার হিফজ বিভাগের অপর ছাত্রকে (১৬) আটক করেছে পুলিশ।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দুপুরের পর সাফওয়ানকে ডেকে নিয়ে যায় ওই সহপাঠী। এরপর সন্ধ্যায় বাড়ি না ফিরলে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রামের পার্শ্ববর্তী গুরোর ভিটা পুকুরের পানিতে সাফ উয়ানের দেহ ভাসতে দেখে পরিবার ও স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিহতের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শরিফুল ইসলাম শরিফ জানান, প্রাথমিক তদন্তে শিশুটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর আরও বিস্তারিত জানা যাবে।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় জনতার মাধ্যমে ওই গ্রাম থেকেই একজনকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করেছে বিভিন্ন স্থানে সাইকেলে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সন্ধ্যার দিকে ধাক্কা দিয়ে সাফওয়ানকে সে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়।

সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জেসমিন সুলতানা বলেন, ‘সাফওয়ানকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। পানিতে পড়ে মৃত্যুর প্রাথমিক ইতিহাস থাকলেও ময়নাতদন্তের পর শিশুটির মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’

নিহত শিশুর বাবা জামমিম হোসেন সবুজ বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরেই ছেলেটি মাদ্রাসা থেকে বাড়ি এসে আমাকে বলত বাবা, কয়েকটা ছেলে খুব ভয় দেখায়। আকাশে কি হচ্ছে, পানিতে ডুবেসহ কীভাবে মরলে কি হয় এমন নানা বিষয়। আমরা ছোট মানুষ ভেবে সেসময় গুরুত্ব দেইনি। এখন দেখি সত্যিই ওরা আমার সন্তানকে মেরে ফেলল। এর সঠিক বিচার চাই আমরা।’

সাফওয়ানের ফুপু বুলবুলি বেগম বলেন, ‘দুপুরের পর বাড়িতে এসে সাফওয়ানকে ডেকে নিয়ে যায়। এক মাদ্রাসায় পড়ে এ জন্য আমরাও কিছু বলিনি। পরে সে ওকে সাইকেলে গ্রামের বিভিন্ন স্থানে কয়েক ঘণ্টা ঘুরিয়ে পুকুরে ফেলে হত্যা করে। আমাদের সন্তান ও কেড়ে নিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত