পদ্মা সেতুতে রেল চলাচল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে পদ্মাপাড়ের শিবচর উপজেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগে নতুন পথ খুলেছে। শিবচর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে শুধু বাসেই নয়, এবার ট্রেনে করেও রাজধানী ঢাকা যেতে পারবেন এই অঞ্চলের মানুষ। তাই পদ্মা সেতুতে রেল উদ্বোধনকে ঘিরে শিবচরবাসীর মধ্যে দেখা গেছে আনন্দ আর উচ্ছ্বাস। 

আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে শিবচরের পদ্মা ও শিবচর স্টেশনে ভিড় করতে থাকেন স্থানীয়রা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্টেশন এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। স্টেশনে রেললাইনের দুপাশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষ দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। 

প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে শিবচরের রেললাইনসংলগ্ন এলাকা এবং শিবচরের দুটি স্টেশনকে সজ্জিত করা হয়। স্থানীয় নেতা-কর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন ও নৌকা দিয়ে সাজিয়ে তোলেন পুরো এলাকা।

এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাঙ্গা থেকে ঢাকার কমলাপুর পর্যন্ত রেললাইন উদ্বোধন করেন। পদ্মাপাড়ের এই এলাকা প্রথমবারের মতো রেললাইনের আওতায় এসেছে। পদ্মা সেতু হয়ে এই ট্রেন যাবে ঢাকায়। এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ ট্রেনে চড়ে সহজেই ঢাকা যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

আজ সকাল ১০টায় শিবচরের কুতুবপুরে পদ্মা স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, শিবচরের বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে শত শত নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা এসে জড়ো হচ্ছেন। নানা বয়সী নারী-পুরুষ ও বয়স্ক লোকজনও এসেছেন স্টেশনে। পদ্মা সেতু হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ট্রেন গেলে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান আগত দর্শনার্থীরা। স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে স্টেশন এলাকা। শিবচরের দুটি স্টেশনেই অসংখ্য মানুষের ভিড় ছিল। এ ছাড়া এক্সপ্রেসওয়ের আড়িয়াল খাঁ সেতুসহ সড়কের বিভিন্ন স্থানে শত শত মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। 

শিবচরের চান্দেরচর থেকে আসা বিরানব্বই বছর বয়সী আবুল কালাম আজাদ নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘আজ আমার খুবই আনন্দ লাগছে। আমার এলাকার ওপর দিয়ে ট্রেন চলবে। এর চেয়ে আনন্দের আর কিছু নাই।’ 

শিবচরের কাঁঠালবাড়ি এলাকার নূর ইসলাম ফকির জানান, ‘রেল উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে পদ্মাপাড়ের গ্রামে আজ উৎসব বইছে। হাজার হাজার মানুষ স্টেশনে আসছে। সবার মধ্যে আনন্দের জোয়ার বইছে। আনন্দে এখানে আসছি। প্রধানমন্ত্রী ট্রেনে করে এখান দিয়ে ভাঙ্গা যাবেন। তাঁরে দেখতে আসছি।’ 

জানতে চাইলে শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. সেলিম বলেন, ‘রেল উদ্বোধনকে ঘিরে শিবচর উপজেলাবাসীর মধ্যে ব্যাপক আনন্দ। সকাল থেকেই সবার মধ্যে উৎসব দেখা গেছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শিবচরের পদ্মা ও শিবচর স্টেশন, রেললাইনসংলগ্ন এলাকায় অসংখ্য ফেস্টুন দিয়ে সৌন্দর্যবর্ধন করেছি। আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মী-সমর্থক রেললাইন এলাকায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। এ যেন এক অন্য রকম উৎসব।’