Ajker Patrika

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের ওপর ধানের বস্তা রাখায় মুদিদোকানিকে পেটালেন অধ্যক্ষ

আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮: ৪৮
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের ওপর ধানের বস্তা রাখায় মুদিদোকানিকে পেটালেন অধ্যক্ষ

যশোরের মনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ বাজারে হাসুতোষ পাল নামের এক মুদিদোকানিকে দোকানে ঢুকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে রাজগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে। মারধরের একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। 

আব্দুল লতিফ রাজগঞ্জ বাজার উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক। ক্ষমতাসীন দলের অনুসারী হওয়ায় ওই বাজারে তাঁর আধিপত্য রয়েছে।  

রাজগঞ্জ বাজারে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের জায়গায় একটি ধানের বস্তা রাখায় আব্দুল লতিফ হাসুতোষ পালকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ। মারধরের ঘটনা হাসুতোষ পালের দোকানে থাকা ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। ঘটনাটি চলতি মাসের ২৪ ডিসেম্বর সকালের হলেও গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ফেসবুকে ভিডিওটি ঘুরপাক খাচ্ছে।

ভিডিওতে দেখা গেছে, চলতি মাসের ২৪ ডিসেম্বর সকাল ৯টা ১৮ মিনিটে হাসুতোষ পালের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে তাঁকে গালমন্দ করছেন অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ। চিৎকার শুনে হাসুতোষ দোকান থেকে বেরিয়ে এলে অধ্যক্ষ তাঁকে চড়থাপ্পড় মারা শুরু করেন। মারতে মারতে তিনি হাসুতোষকে দোকানের মধ্যে ঢুকেও কিলঘুষি মারতে থাকেন। ঘটনার ছয় দিন পার হলেও অধ্যক্ষর ভয়ে কোথাও অভিযোগ করেননি হাসুতোষ পাল।

হাসুতোষ পাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার দোকানের সামনে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য। গত শনিবার দোকানে থাকা আধা বস্তা ধান আমি ভাস্কর্যের পাকার ওপর রেখে ভুল করে বাড়ি চলে যাই। রোববার সকালে দোকানে আসার পর আমাকে মারধর শুরু করে আব্দুল লতিফ।’ 

হাসুতোষ পাল বলেন, ‘গেলবার নৌকা পাস করার পর সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্যের হাত ধরে রাজগঞ্জ বাজার কমিটির সেক্রেটারি হয় আব্দুল লতিফ। আমরা দোকানদার কেউ তাকে ভোট দিইনি। আব্দুল লতিফ ক্ষমতার জোরে বাজারে যাকে তাকে মারধর করে। কয়দিন আগে আমার পাশের এক মুরগি দোকানদারকে মারতে চড়াও হয় সে।’ 

হাসুতোষ বলেন, ‘আমি কোথাও অভিযোগ করিনি। যাঁরা ঘটনা জেনেছেন; তাঁরা বলেছেন, সংসদ ভোটের পরে বিষয়টি দেখবেন।’ 

জানতে চাইল অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ মুদিদোকানি হাসুতোষ পালকে মারধরের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আগেও হাসুতোষ দোকানের বস্তা এনে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের জায়গায় রেখেছেন। তাঁকে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে। গেল ১৬ ডিসেম্বর পুলিশ এসে বস্তা সরিয়ে ভাস্কর্যের জায়গা পরিষ্কার করেছে। এরপরও একই কাজ করায় হাসুতোষকে দুই থেকে তিনটি চড় মেরেছি।’ 

রাজগঞ্জ বাজার কমিটির সভাপতি চালুয়াহাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ বলেন, ‘ঘটনা শুনে আমি দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। আব্দুল লতিফ ঠিক কাজ করেননি। সংসদ নির্বাচনের পর বিষয়টি নিয়ে বসব।’ 

রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক বাণী ইসরাইল বলেন, ‘ঘটনা শুনেছি। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি। কেউ আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেননি।’

মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন বলেন, ‘ভিডিও দেখিনি। ঘটনা লোকমুখে শুনেছি। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত