জাহিদ হাসান, যশোর প্রতিনিধি
১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর বেলা ৩টা। বিভিন্ন বয়সী মানুষের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ যশোর ইনস্টিটিউটের মাঠ। প্রস্তুত মাঠের ভেতরের মঞ্চটিও। এমন সময় লাল-সবুজের পতাকাবাহী কালো রঙের শেভ্রোলেট সিডেন কারে চড়ে এলেন মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। সঙ্গে ছিলেন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা।
প্রধানমন্ত্রীসহ নেতারা যখন মঞ্চে উঠলেন, উপস্থিত জনসাধারণ দাঁড়িয়ে পতাকা নাড়িয়ে মুহুর্মুহু জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে তাঁদের স্বাগত জানায়। জনসভায় তাজউদ্দীন আহমদ প্রায় ২০ মিনিটের বক্তব্যে সবাইকে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলামকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার সেই দিনের জনসভা শেষ করে বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে আবার কলকাতায় ফিরে যান তাজউদ্দীন আহমদসহ নেতারা। স্বাধীন বাংলার প্রথম জনসভার সেদিনের সেই মাঠে দাঁড়িয়ে দৈনিক আজকের পত্রিকাকে সেই স্মৃতি রোমন্থন করেন জনসভার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন দোদুল।
বাংলাদেশের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধে ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর একটি স্মরণীয় দিন। এই দিনে হানাদার বাহিনীর কবলমুক্ত যশোরে স্বাধীন বাংলার প্রথম জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। জনসভায় প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ সমবেত জনতার উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আর ধ্বংস নয়, যুদ্ধ নয়। এ মুহূর্তে কাজ হলো যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলা।’ সেদিন তিনি সর্বস্তরের মানুষকে স্বাধীনতাযুদ্ধের চেতনায় দেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জনসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ফণীভূষণ মজুমদার, রওশন আলী, মোশাররফ হোসেন, তবিবর রহমান সরদার, এম আর আকতার মুকুল, জহির রায়হান প্রমুখ।
সেদিন মঞ্চের পাশে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আফজাল হোসেন দোদুল। তিনি সেই দিনের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর দুপুরের পর থেকে যশোরসহ বিভিন্ন জেলার মানুষেরা এই জনসভায় আসতে থাকে। কারও কারও হাতে ছিল সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। আড়াইটার দিকে কালো রঙের শেভ্রোলেট সিডেন কারে চড়ে কলকাতা থেকে যশোরে আসেন তাজউদ্দীন আহমদ। তাঁর আগে ছিল কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীর বিক্রমের খোলা জিপ গাড়িটি। পেছনে ছিল মিত্র বাহিনীর বহর। প্রথম সেদিন তাঁদের গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। বেলা ৩টার দিকে মাঠে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও যশোরের নেতারা। ৩টা থেকে শুরু হওয়া এই জনসভা শেষ হয় সন্ধ্যায়। তারপর যশোর থেকে আবার বেনাপোল দিয়ে কলকাতা চলে যান তাঁরা।
তাজউদ্দীন আহমদ সেদিন বক্তব্যে বলেন, এই দেশ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হবে। ইসলামিক ও স্বাধীনতাবিরোধী দলগুলো রাজনীতি করতে পারবে না। তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। এই জনসভার মাধ্যমে যশোরের তৎকালীন ডিসি ওয়ালি উল ইসলাম এবং কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাঞ্চন ঘোষালকে নির্দেশ দেন, আইনশৃঙ্খলার যেন কোনো অবনতি না হয়। ১৫ থেকে ২০ মিনিট বক্তব্য দেন তিনি।
তাজউদ্দীন যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন হঠাৎ খুলনার দিক থেকে কামানের শব্দ ভেসে আসে বলে জানান দোদুল। এ জনসভায় শুধু যশোর নয়; দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তাজউদ্দীন দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা নেন এই জনসভা থেকে। এরপর নজরুল ইসলাম, মোশারফ হোসেন বক্তব্য দেন। দোদুল বলেন, জনসভার কথা বেশি প্রচার না হওয়ার কারণে লোকজন কম এসেছিল।
স্বাধীনতার পর যশোর ইনস্টিটিউট মাঠে যে মঞ্চে জনসভা হয়েছিল, পরবর্তী সময়ে সেটির নামকরণ হয় ‘স্বাধীনতা উন্মুক্ত মঞ্চ’। দীর্ঘদিন ধরে এই মঞ্চটি অযত্ন অবহেলায় পড়ে থাকার পর স্বাধীনতার ৫০ বছর পর ২০২২ সালে যশোর জেলা পরিষদ মঞ্চটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে পুনর্নির্মাণ করে। বর্তমানে সেটি দৃষ্টিনন্দন হয়েছে। এ বিষয়ে আফজাল হোসেন দোদুল বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল মঞ্চটি। মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এখন এটি দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে। তাতে আমরা খুশি।’ তবে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, দিনটি বাঙালি জাতির একটি স্মরণীয় দিন। আর যশোরবাসীর জন্য দিনটি গৌরব ও অহংকারের। তবে সেই ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার কোনো উদ্যোগ নেই সরকার বা জেলা প্রশাসনের।
মুক্ত স্বদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত প্রথম এ জনসভার খবর সংগ্রহের জন্য উপস্থিত ছিলেন লন্ডনের ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকার সাংবাদিক পিটার গিল, নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার সিডনি এস এইচ সানবার্গ, ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিনিধিসহ বহু বিদেশি সাংবাদিক। সেই বহরে ছিলেন কুষ্টিয়ার সাংবাদিক আব্দুল হামিদ রায়হান। সমাবেশের তিন দিন আগেই কলকাতা থেকে ক্যামেরাসহ সরঞ্জামাদি নিয়ে চলে আসেন যশোরে। বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় যশোর শহরের বারান্দীপাড়ায় মেয়ের বাসায় রয়েছেন তিনি।
সেদিনের ঐতিহাসিক জনসভার কথা মনে করে ফটোগ্রাফার মুক্তিযোদ্ধা হামিদ বলেন, ‘মুজিবনগর সরকারের হেডকোয়ার্টার্স ছিল কলকাতার থিয়েটার রোডে। ১১ ডিসেম্বর যশোর টাউন হল মাঠের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মনসুর আলী, কামারুজ্জামান, জহির রায়হানদের আসার খবরে দুপুর থেকে মাঠে লোকজন আসতে শুরু করে। মাঠ ছিল ছোট, জনসভায় সহস্রাধিক মানুষের উপস্থিতি ঘটে। তারা ভাষণ দিলেন, মানুষ সেগুলো শুনল। সেই জনসভায় বিদেশি কয়েকজন সাংবাদিক এবং বাংলাদেশের একমাত্র আমিই উপস্থিত ছিলাম।’
মুক্তিযোদ্ধা হামিদ আরও বলেন, ‘ভাষণ শেষে তাঁরা যখন চলে গেলেন, তাঁদের সঙ্গে আমিও যাই। কলকাতার ধর্মতলায় একটি স্টুডিও থেকে ছবিগুলো ওয়াশ করাই। পরদিন জয়বাংলা পত্রিকায় ছবি ছাপা হয়। আমি সেই কাগজ নিয়ে দেশে ফিরে আসি। এরপর ১৩ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ায় এবং ২০ ডিসেম্বর খুলনার সমাবেশে যোগ দিই।’
মুক্তিযোদ্ধা হামিদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে (আগে-পরে) পাঁচ শতাধিক ছবি তুলি। যার নেগেটিভ এখনো আমার স্টুডিওতে (কুষ্টিয়ার রূপান্তর ফটো স্টুডিও) সংরক্ষণ করা আছে। সেই সময়কার ছবি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সামরিক জাদুঘর, দৃক গ্যালারি, বেঙ্গল গ্যালারি এবং লন্ডনেও রয়েছে।’
এদিকে দিনটি উপলক্ষে যশোর জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ঐতিহাসিক টাউন হল ময়দানে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর বেলা ৩টা। বিভিন্ন বয়সী মানুষের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ যশোর ইনস্টিটিউটের মাঠ। প্রস্তুত মাঠের ভেতরের মঞ্চটিও। এমন সময় লাল-সবুজের পতাকাবাহী কালো রঙের শেভ্রোলেট সিডেন কারে চড়ে এলেন মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। সঙ্গে ছিলেন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা।
প্রধানমন্ত্রীসহ নেতারা যখন মঞ্চে উঠলেন, উপস্থিত জনসাধারণ দাঁড়িয়ে পতাকা নাড়িয়ে মুহুর্মুহু জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে তাঁদের স্বাগত জানায়। জনসভায় তাজউদ্দীন আহমদ প্রায় ২০ মিনিটের বক্তব্যে সবাইকে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলামকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার সেই দিনের জনসভা শেষ করে বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে আবার কলকাতায় ফিরে যান তাজউদ্দীন আহমদসহ নেতারা। স্বাধীন বাংলার প্রথম জনসভার সেদিনের সেই মাঠে দাঁড়িয়ে দৈনিক আজকের পত্রিকাকে সেই স্মৃতি রোমন্থন করেন জনসভার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন দোদুল।
বাংলাদেশের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধে ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর একটি স্মরণীয় দিন। এই দিনে হানাদার বাহিনীর কবলমুক্ত যশোরে স্বাধীন বাংলার প্রথম জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। জনসভায় প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ সমবেত জনতার উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আর ধ্বংস নয়, যুদ্ধ নয়। এ মুহূর্তে কাজ হলো যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলা।’ সেদিন তিনি সর্বস্তরের মানুষকে স্বাধীনতাযুদ্ধের চেতনায় দেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জনসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ফণীভূষণ মজুমদার, রওশন আলী, মোশাররফ হোসেন, তবিবর রহমান সরদার, এম আর আকতার মুকুল, জহির রায়হান প্রমুখ।
সেদিন মঞ্চের পাশে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আফজাল হোসেন দোদুল। তিনি সেই দিনের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর দুপুরের পর থেকে যশোরসহ বিভিন্ন জেলার মানুষেরা এই জনসভায় আসতে থাকে। কারও কারও হাতে ছিল সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। আড়াইটার দিকে কালো রঙের শেভ্রোলেট সিডেন কারে চড়ে কলকাতা থেকে যশোরে আসেন তাজউদ্দীন আহমদ। তাঁর আগে ছিল কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীর বিক্রমের খোলা জিপ গাড়িটি। পেছনে ছিল মিত্র বাহিনীর বহর। প্রথম সেদিন তাঁদের গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। বেলা ৩টার দিকে মাঠে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও যশোরের নেতারা। ৩টা থেকে শুরু হওয়া এই জনসভা শেষ হয় সন্ধ্যায়। তারপর যশোর থেকে আবার বেনাপোল দিয়ে কলকাতা চলে যান তাঁরা।
তাজউদ্দীন আহমদ সেদিন বক্তব্যে বলেন, এই দেশ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হবে। ইসলামিক ও স্বাধীনতাবিরোধী দলগুলো রাজনীতি করতে পারবে না। তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। এই জনসভার মাধ্যমে যশোরের তৎকালীন ডিসি ওয়ালি উল ইসলাম এবং কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাঞ্চন ঘোষালকে নির্দেশ দেন, আইনশৃঙ্খলার যেন কোনো অবনতি না হয়। ১৫ থেকে ২০ মিনিট বক্তব্য দেন তিনি।
তাজউদ্দীন যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন হঠাৎ খুলনার দিক থেকে কামানের শব্দ ভেসে আসে বলে জানান দোদুল। এ জনসভায় শুধু যশোর নয়; দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তাজউদ্দীন দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা নেন এই জনসভা থেকে। এরপর নজরুল ইসলাম, মোশারফ হোসেন বক্তব্য দেন। দোদুল বলেন, জনসভার কথা বেশি প্রচার না হওয়ার কারণে লোকজন কম এসেছিল।
স্বাধীনতার পর যশোর ইনস্টিটিউট মাঠে যে মঞ্চে জনসভা হয়েছিল, পরবর্তী সময়ে সেটির নামকরণ হয় ‘স্বাধীনতা উন্মুক্ত মঞ্চ’। দীর্ঘদিন ধরে এই মঞ্চটি অযত্ন অবহেলায় পড়ে থাকার পর স্বাধীনতার ৫০ বছর পর ২০২২ সালে যশোর জেলা পরিষদ মঞ্চটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে পুনর্নির্মাণ করে। বর্তমানে সেটি দৃষ্টিনন্দন হয়েছে। এ বিষয়ে আফজাল হোসেন দোদুল বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল মঞ্চটি। মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এখন এটি দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে। তাতে আমরা খুশি।’ তবে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, দিনটি বাঙালি জাতির একটি স্মরণীয় দিন। আর যশোরবাসীর জন্য দিনটি গৌরব ও অহংকারের। তবে সেই ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার কোনো উদ্যোগ নেই সরকার বা জেলা প্রশাসনের।
মুক্ত স্বদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত প্রথম এ জনসভার খবর সংগ্রহের জন্য উপস্থিত ছিলেন লন্ডনের ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকার সাংবাদিক পিটার গিল, নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার সিডনি এস এইচ সানবার্গ, ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিনিধিসহ বহু বিদেশি সাংবাদিক। সেই বহরে ছিলেন কুষ্টিয়ার সাংবাদিক আব্দুল হামিদ রায়হান। সমাবেশের তিন দিন আগেই কলকাতা থেকে ক্যামেরাসহ সরঞ্জামাদি নিয়ে চলে আসেন যশোরে। বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় যশোর শহরের বারান্দীপাড়ায় মেয়ের বাসায় রয়েছেন তিনি।
সেদিনের ঐতিহাসিক জনসভার কথা মনে করে ফটোগ্রাফার মুক্তিযোদ্ধা হামিদ বলেন, ‘মুজিবনগর সরকারের হেডকোয়ার্টার্স ছিল কলকাতার থিয়েটার রোডে। ১১ ডিসেম্বর যশোর টাউন হল মাঠের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মনসুর আলী, কামারুজ্জামান, জহির রায়হানদের আসার খবরে দুপুর থেকে মাঠে লোকজন আসতে শুরু করে। মাঠ ছিল ছোট, জনসভায় সহস্রাধিক মানুষের উপস্থিতি ঘটে। তারা ভাষণ দিলেন, মানুষ সেগুলো শুনল। সেই জনসভায় বিদেশি কয়েকজন সাংবাদিক এবং বাংলাদেশের একমাত্র আমিই উপস্থিত ছিলাম।’
মুক্তিযোদ্ধা হামিদ আরও বলেন, ‘ভাষণ শেষে তাঁরা যখন চলে গেলেন, তাঁদের সঙ্গে আমিও যাই। কলকাতার ধর্মতলায় একটি স্টুডিও থেকে ছবিগুলো ওয়াশ করাই। পরদিন জয়বাংলা পত্রিকায় ছবি ছাপা হয়। আমি সেই কাগজ নিয়ে দেশে ফিরে আসি। এরপর ১৩ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ায় এবং ২০ ডিসেম্বর খুলনার সমাবেশে যোগ দিই।’
মুক্তিযোদ্ধা হামিদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে (আগে-পরে) পাঁচ শতাধিক ছবি তুলি। যার নেগেটিভ এখনো আমার স্টুডিওতে (কুষ্টিয়ার রূপান্তর ফটো স্টুডিও) সংরক্ষণ করা আছে। সেই সময়কার ছবি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সামরিক জাদুঘর, দৃক গ্যালারি, বেঙ্গল গ্যালারি এবং লন্ডনেও রয়েছে।’
এদিকে দিনটি উপলক্ষে যশোর জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ঐতিহাসিক টাউন হল ময়দানে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় লিটন হোসেন (৩০) নামের এক বাংলাদেশি যুবককে আটকের পর বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ। বিজিবি গতকাল বুধবার বিকেলে থানায় সোপর্দ করলে তাঁকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
১৫ মিনিট আগেচট্টগ্রাম বন্দরে কাজের গতি বাড়াতে ২২ বছরের জন্য পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সৌদি আরবের ‘রাজকীয়’ অপারেটর রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনালকে (আরএসজিটিআই)।
২৯ মিনিট আগেনারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গ্যাস লাইন লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে একই পরিবারের ছয়জন দগ্ধের ঘটনায় দুই ভাই ও বোনের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবা বাবুল মিয়া (৪০) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা গেছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজন মারা গেলেন।
১ ঘণ্টা আগেনিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শরীয়তপুরের পদ্মা নদীতে ইলিশ শিকারের অপরাধে ২৬ জেলেকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া চারটি মাছ ধরার নৌকা ও ২ লাখ মিটার অবৈধ জাল জব্দ করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে