স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকে ৩ চিকিৎসককে মারধর

বাগেরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২৪, ২২: ১২
Thumbnail image

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকে তিন চিকিৎসককে মারধর করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে ২০-২৫ জনের একটি দল হাসপাতালে ঢুকে এই হামলা চালায় বলে জানা গেছে। এ সময় উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা (স্যাকমো) চন্দন দাসের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে হামলাকারীরা হাসপাতালে ঢুকে জরুরি বিভাগ থেকে চন্দন দাসকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নেয়। পরে বিভাগের সামনেই তাঁকে বেধড়ক মারধর করতে থাকে তারা। এ সময় জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তনুশ্রী ডাকুয়া ও চিকিৎসা কর্মকর্তা রেজোয়ানা মেহজাবিন বন্যা ঠেকাতে গেলে তাঁদেরও মারধর করে হামলাকারীরা।

রেজোয়ানা মেহজাবিন বন্যা বলেন, ‘স্থানীয় মো. শিমুল শেখ নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে একদল মানুষ জরুরি বিভাগ থেকে চন্দন দাসকে বের করে বেধড়ক মারধর করতে থাকে। আমি এবং জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তনুশ্রী ডাকুয়া ঠেকাতে গেলে হামলাকারীরা আমাদেরও মারধর করে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. শর্মী রায়কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। শিমুলের সঙ্গে ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করা শাহিন ও রাব্বিও হামলায় অংশগ্রহণ করেন।’

তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার পর আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা হামলাকারীদের বিচার চাই।’

চন্দন দাস বলেন, ‘জরুরি বিভাগে রোগীদের সেবা দিচ্ছিলাম। আমাকে টেনেহিঁচড়ে বের করে জরুরি বিভাগের সামনে বসেই মারধর করতে থাকে হামলাকারীরা। তারা আমার মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।’

মারধরের কারণ সম্পর্কে স্যাকমো চন্দন দাস বলেন, ‘মো. শিমুল শেখ এর আগেও বিভিন্ন সময় হাসপাতালে প্রবেশ করে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। আমার কাছে তারা তিনজন মিলে এক লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছিল। এটা না দেওয়ার কারণে এই হামলা করেছে।’

এদিকে হামলাকারীরা গ্রেপ্তার না হলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শর্মী রায় বলেন, বিষয়টি স্থানীয় সেনাক্যাম্পে জানানো হয়েছে। থানায় অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

শর্মী রায় আরও বলেন, শিমুলের বাড়িতে মোরেলগঞ্জ উপজেলার সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুফতি কামাল হোসেন একটি বেসরকারি ক্লিনিক করেছেন। তিনিই এই হামলার নেপথ্যে রয়েছেন।

মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুদ্দিন বলেন, চিকিৎসকদের মারধরের বিষয়টি জানতে পেরে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। চিকিৎসকদের অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য শিমুল শেখের মোবাইলে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

আর বিকেলে ডা. মুফতি কামাল হোসেনের মোবাইল ফোনে কল দিলে অন্য এক ব্যক্তি বলেন, ‘স্যার এখন আর এই নম্বর ব্যবহার করেন না।’

রাত সোয়া ৮টার দিকে ওই নম্বরে আবার কল দেওয়া হলে এক ব্যক্তি ফোন রিসিভ করে বলেন, ‘কোথা শোনা যাচ্ছে না।’ এই বলে ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, এটা চিকিৎসকদের জন্য খুবই হতাশাজনক একটা ব্যাপার। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এ ছাড়া হামলার কারণ এবং হামলাকারীদের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে অবহিত করা হবে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত