মহিউদ্দিন রানা, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ)
দুপুর প্রায় ১২টা বাজে। তখনো দেখা নেই সূর্যের। কনকনে শীত। হাত-পায়ে মোজা আর গায়ে চাদর মুড়িয়ে বেঞ্চের ওপর জবুথবু হয়ে বসে আছেন রিকশাচালক ফরিদ মিয়া। পাশেই রিকশাটি দাঁড় করানো। কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
রাস্তাঘাটে তো তেমন মানুষ নেই। খুব জরুরি ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না, বেশি দূরত্বে যাচ্ছেন না। এর মধ্যে কেন রিকশা নিয়ে বেরিয়েছেন—জানতে চাইলে ফরিদ মিয়া বলেন, ‘এমুন শীত আর ঠান্ডা! বাতাসের লগে মনে অয় বরফ মিশাইল। মানুষজন তো ঘরতোই বাইর অয়না। দুপুর অইয়া যাইতাছে অহনও উষ (কুয়াশা) পড়তেই আছে। হাইনয্যার (সন্ধ্যা) পরে তো দুই আত (হাত) রাস্তাও দেহা যায় না। তয় কী করবাম! পেট কি আর শীত মানে!’
টানা কয়েক দিন ধরেই ময়মনসিংহ অঞ্চলে বেড়েছে শীত ও কুয়াশার তীব্রতা। ঈশ্বরগঞ্জে দিনের বেশির ভাগ সময় পথ-ঘাট-মাঠ কুয়াশাচ্ছন্ন থাকছে। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা, বিপাকে পড়েছেন দিনমজুরসহ খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
আজ শনিবার সকালে পৌর এলাকার দত্তপাড়া গ্রামে বোরো ধানের চারা রোপণ করতে এসেছিলেন দিনমজুর বাদশা মিয়া। সকাল সকাল বীজতলা থেকে চারা তোলা শুরু করেন বাদশা। কিন্তু তীব্র ঠান্ডায় বেশিক্ষণ টিকতে না পেরে একটু পর বাড়ির পথে হাঁটা ধরেন। আলাপকালে বাদশা বলেন, ‘এমুন শীত! কামই করতে পারতাছি না। ঠান্ডায় আত-পাও টোন্ডা (অবশ) অইয়া আইতাছে।’
একই এলাকার আরেক দিনমজুর হবি মিয়া, বোরোখেতে পানি দেওয়ার জন্য কোদাল দিয়ে নালা কাটতে এসেছিলেন। হবি মিয়া বলেন, ‘বাঁইচ্চ্যা থাকলে কাম করতারবাম। ইস! যে ঠান্ডা! কোদালই ধরতে পারি না। আর কতক্ষণ থাকলে মরণ ছাড়া গতি নাই!’ এ কথা বলেই বাড়ির দিকে হাঁটা ধরেন তিনি।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের ওপর দেখা যায় বাস। হেডলাইট জ্বালিয়ে সাবধানে চলছে ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন। এ সময় কথা হয় বিআরটিসি বাসের চালক মো. উজ্জ্বল মিয়ার সঙ্গে। উজ্জ্বল বলেন, ‘রাতের বেলায় প্রচণ্ড কুয়াশা পড়ে। গত দুই-তিন দিন যাবৎ দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা কাটে না। এ অবস্থায় কোনো ধরনের দুর্ঘটনা যেন না ঘটে, তাই লাইট জ্বালিয়ে রাখা হচ্ছে।’
গতকাল শুক্রবার ছিল ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার সাপ্তাহিক হাটের দিন। সরেজমিন দেখা গেছে, তীব্র শীত থেকে বাঁচতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মোড়ে মোড়ে টায়ার এবং কাঠ জ্বালিয়ে তাপ নিচ্ছেন। শীতের তীব্রতায় মুদিদোকান, তরিতরকারির দোকানসহ নিত্যপণ্যের দোকানে ক্রেতার উপস্থিতি একেবারেই কম। তবে কিছুটা ভিড় ছিল শীতের পুরোনো কাপড়ের দোকানগুলোতে।
মুদিদোকানদার তফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘শীতে বাজারো তো মানুষেই নাই। বেচাকেনা কার কাছে করবাম?’ সবজি দোকানদার সুমন মিয়া বলেন, ‘বেচাকেনা খুব খারাপ। এর চেয়ে অবাজারেই (হাটের দিন ছাড়া) ভালা বেচতাম।’
পৌর এলাকায় মহাসড়কের পাশে ডালায় কলা সাজিয়ে ক্রেতার অপেক্ষা করছিলেন ষাটোর্ধ্ব হারেছ মিয়া। জানতে চাইলে হারেছ বলেন, ‘শীতো মাইনষে এমনিতোই কলা কম খায়। এর মধ্যে কয়দিন ধইরা শীত বাড়নে বেচাকেনা এক্কেবারেই নাই। খুব খারাপ অবস্থায় আছি!’
এদিকে শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে হাসপাতালেও বাড়ছে শীতজনিত রোগের আক্রান্ত রোগীর ভিড়। বিশেষ করে বয়স্কদের শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি এবং শিশুদের সর্দি, কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েই চলেছে।
আজ ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে কথা হয়, ১৬ মাস বয়সী এক শিশুর মা সুমাইয়া আক্তারের সঙ্গে। সুমাইয়া বলেন, ‘বাচ্চার প্রচুর কাশি, সাথে শ্বাসকষ্টও আছে। গত মঙ্গলবার থেকে এখানে ভর্তি আছি। দিনে তিনবার করে হাসপাতাল থেকে অক্সিজেন দিচ্ছে। এখন আগের চেয়ে কিছুটা ভালো।’
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লোপা চৌধুরী বলেন, ‘কদিন ধরে হাসপাতালে শীতজনিত রোগীরা বেশি আসছেন বিশেষ করে বয়স্ক এবং শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি। আমরা প্রয়োজন অনুসারে তাদের সেবা দিচ্ছি।’
উল্লেখ্য, আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে উত্তরের জেলা নওগাঁয়, ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর তিন ঘণ্টা পর সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও কমেছে। এ সময় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে দিনাজপুরে, ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গতকাল সন্ধ্যায় পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, দেশের চার জেলা—কিশোরগঞ্জ, পাবনা, দিনাজপুর ও চুয়াডাঙ্গায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ (৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা) বইছে। তা অব্যাহত থাকতে পারে।
দুপুর প্রায় ১২টা বাজে। তখনো দেখা নেই সূর্যের। কনকনে শীত। হাত-পায়ে মোজা আর গায়ে চাদর মুড়িয়ে বেঞ্চের ওপর জবুথবু হয়ে বসে আছেন রিকশাচালক ফরিদ মিয়া। পাশেই রিকশাটি দাঁড় করানো। কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
রাস্তাঘাটে তো তেমন মানুষ নেই। খুব জরুরি ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না, বেশি দূরত্বে যাচ্ছেন না। এর মধ্যে কেন রিকশা নিয়ে বেরিয়েছেন—জানতে চাইলে ফরিদ মিয়া বলেন, ‘এমুন শীত আর ঠান্ডা! বাতাসের লগে মনে অয় বরফ মিশাইল। মানুষজন তো ঘরতোই বাইর অয়না। দুপুর অইয়া যাইতাছে অহনও উষ (কুয়াশা) পড়তেই আছে। হাইনয্যার (সন্ধ্যা) পরে তো দুই আত (হাত) রাস্তাও দেহা যায় না। তয় কী করবাম! পেট কি আর শীত মানে!’
টানা কয়েক দিন ধরেই ময়মনসিংহ অঞ্চলে বেড়েছে শীত ও কুয়াশার তীব্রতা। ঈশ্বরগঞ্জে দিনের বেশির ভাগ সময় পথ-ঘাট-মাঠ কুয়াশাচ্ছন্ন থাকছে। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা, বিপাকে পড়েছেন দিনমজুরসহ খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
আজ শনিবার সকালে পৌর এলাকার দত্তপাড়া গ্রামে বোরো ধানের চারা রোপণ করতে এসেছিলেন দিনমজুর বাদশা মিয়া। সকাল সকাল বীজতলা থেকে চারা তোলা শুরু করেন বাদশা। কিন্তু তীব্র ঠান্ডায় বেশিক্ষণ টিকতে না পেরে একটু পর বাড়ির পথে হাঁটা ধরেন। আলাপকালে বাদশা বলেন, ‘এমুন শীত! কামই করতে পারতাছি না। ঠান্ডায় আত-পাও টোন্ডা (অবশ) অইয়া আইতাছে।’
একই এলাকার আরেক দিনমজুর হবি মিয়া, বোরোখেতে পানি দেওয়ার জন্য কোদাল দিয়ে নালা কাটতে এসেছিলেন। হবি মিয়া বলেন, ‘বাঁইচ্চ্যা থাকলে কাম করতারবাম। ইস! যে ঠান্ডা! কোদালই ধরতে পারি না। আর কতক্ষণ থাকলে মরণ ছাড়া গতি নাই!’ এ কথা বলেই বাড়ির দিকে হাঁটা ধরেন তিনি।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের ওপর দেখা যায় বাস। হেডলাইট জ্বালিয়ে সাবধানে চলছে ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন। এ সময় কথা হয় বিআরটিসি বাসের চালক মো. উজ্জ্বল মিয়ার সঙ্গে। উজ্জ্বল বলেন, ‘রাতের বেলায় প্রচণ্ড কুয়াশা পড়ে। গত দুই-তিন দিন যাবৎ দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা কাটে না। এ অবস্থায় কোনো ধরনের দুর্ঘটনা যেন না ঘটে, তাই লাইট জ্বালিয়ে রাখা হচ্ছে।’
গতকাল শুক্রবার ছিল ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার সাপ্তাহিক হাটের দিন। সরেজমিন দেখা গেছে, তীব্র শীত থেকে বাঁচতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মোড়ে মোড়ে টায়ার এবং কাঠ জ্বালিয়ে তাপ নিচ্ছেন। শীতের তীব্রতায় মুদিদোকান, তরিতরকারির দোকানসহ নিত্যপণ্যের দোকানে ক্রেতার উপস্থিতি একেবারেই কম। তবে কিছুটা ভিড় ছিল শীতের পুরোনো কাপড়ের দোকানগুলোতে।
মুদিদোকানদার তফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘শীতে বাজারো তো মানুষেই নাই। বেচাকেনা কার কাছে করবাম?’ সবজি দোকানদার সুমন মিয়া বলেন, ‘বেচাকেনা খুব খারাপ। এর চেয়ে অবাজারেই (হাটের দিন ছাড়া) ভালা বেচতাম।’
পৌর এলাকায় মহাসড়কের পাশে ডালায় কলা সাজিয়ে ক্রেতার অপেক্ষা করছিলেন ষাটোর্ধ্ব হারেছ মিয়া। জানতে চাইলে হারেছ বলেন, ‘শীতো মাইনষে এমনিতোই কলা কম খায়। এর মধ্যে কয়দিন ধইরা শীত বাড়নে বেচাকেনা এক্কেবারেই নাই। খুব খারাপ অবস্থায় আছি!’
এদিকে শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে হাসপাতালেও বাড়ছে শীতজনিত রোগের আক্রান্ত রোগীর ভিড়। বিশেষ করে বয়স্কদের শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি এবং শিশুদের সর্দি, কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েই চলেছে।
আজ ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে কথা হয়, ১৬ মাস বয়সী এক শিশুর মা সুমাইয়া আক্তারের সঙ্গে। সুমাইয়া বলেন, ‘বাচ্চার প্রচুর কাশি, সাথে শ্বাসকষ্টও আছে। গত মঙ্গলবার থেকে এখানে ভর্তি আছি। দিনে তিনবার করে হাসপাতাল থেকে অক্সিজেন দিচ্ছে। এখন আগের চেয়ে কিছুটা ভালো।’
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লোপা চৌধুরী বলেন, ‘কদিন ধরে হাসপাতালে শীতজনিত রোগীরা বেশি আসছেন বিশেষ করে বয়স্ক এবং শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি। আমরা প্রয়োজন অনুসারে তাদের সেবা দিচ্ছি।’
উল্লেখ্য, আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে উত্তরের জেলা নওগাঁয়, ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর তিন ঘণ্টা পর সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও কমেছে। এ সময় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে দিনাজপুরে, ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গতকাল সন্ধ্যায় পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, দেশের চার জেলা—কিশোরগঞ্জ, পাবনা, দিনাজপুর ও চুয়াডাঙ্গায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ (৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা) বইছে। তা অব্যাহত থাকতে পারে।
ডেমরায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) খালের ওপর নির্মিত হাজীনগর সেতু প্রয়োজনের তুলনায় কম প্রশস্ত হওয়ায় পারাপারে দুর্ভোগে পড়েছে এলাকার বহু মানুষ। স্টাফ কোয়ার্টার-হাজীনগর এলাকার এই গার্ডার সেতু প্রায় দেড় দশক আগে নির্মিত।
৪ ঘণ্টা আগেসাতক্ষীরার আশাশুনিতে নদী খননের কারণে ৫ কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি স্থাপনা (সেতু ও কালভার্ট) ধসে পড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন আশাশুনিসহ আশপাশের কয়েক লাখ মানুষ। ধসে পড়া সেতুর ওর নির্মিত সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন মানুষ। দীর্ঘদিন এই অবস্থা চললেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।
৪ ঘণ্টা আগেপানির ৫৭টি পরীক্ষার মাধ্যমে নিরাপদ পানি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ঠাকুরগাঁও আঞ্চলিক পানি পরীক্ষাগার। কিন্তু প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে উদ্বোধনের চার বছর পরও জেলার একমাত্র পানি পরীক্ষাগারটি চালু করা যায়নি।
৪ ঘণ্টা আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি মেঘমল্লার বসুর নামে রাজধানীর শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) যুবাইর বিন নেছারী নামের এক শিক্ষার্থী এ জিডি করেন।
৪ ঘণ্টা আগে