গুলিতে উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা বিপ্লবের পরিবার

আরিফ আহম্মেদ, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) 
প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৪, ১৬: ৩৮

দরিদ্র পরিবারের সন্তান বিপ্লব হাসান (১৯)। বাবা বাবুল মিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থ থাকায় স্থানীয় একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করে পরিবারের হাল ধরেন। দুই বোনের একজন অষ্টম ও অন্যজন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। কোটা সংস্কার আন্দোলনে গত ২০ জুলাই ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার কলতাপাড়া বাজারে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি। 

উপার্জনক্ষম একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা-বাবা। পুত্রশোক আর আর্থিক কষ্টে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তাঁরা। 

কলতাপাড়া মোজাফফর আলী উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন বিপ্লব। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। 

নিহত বিপ্লব হাসান। ছবি: সংগৃহীতছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর স্থানীয় ইউএনও ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিপ্লবের কবর জিয়ারত করেছেন, অনেকে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও আজও কোনো সহযোগিতা পায়নি পরিবারটি। 

বিপ্লবের মা বিলকিস আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থ। লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি কারখানায় চাকরি করে পরিবারের হাল ধরেছিল বিপ্লব। আমার দুই মেয়ে লেখাপড়া করছে, এখন সংসার ও তাদের লেখাপড়ার খরচ চালানো কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।’ 

বাবুল মিয়া বলেন, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ হার্টের সমস্যায় ভুগছেন। কাজ করলে বুকে ব্যথা হয়। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। সরকারের সহযোগিতা চান তিনি। যারা তাঁর সন্তানকে গুলি করে মেরেছে, তাদের শাস্তির দাবি করেন তিনি। 

বাড়ির পাশের কবরে বিপ্লব হাসানকে সমাহিত করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা এদিন তাঁর সঙ্গে দামগাঁও গ্রামের নূরে আলম সিদ্দিকী রাকিব (২১) ও কাউরাট গ্রামের জোবায়ের (২৮) নামের আরও দুজন শহীদ হয়েছিলেন। 

গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাকিল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত ২০ জুলাই গৌরীপুর কলতাপাড়া বাজারে নিহত তিনজনের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তালিকা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই তাঁদের পরিবার আর্থিক সহযোগিতা পাবেন।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত