ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সিধলা ইউনিয়নের সিধলং বিলে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) একটি প্রকল্পের অধীন খনন শুরু করলে প্রতিবাদ জানায় এলাকাবাসী। পরে ইউএনওর নির্দেশে খনন বন্ধ করে পাউবো। বিলের অবস্থান ও মালিকানার বিষয়ে ভুল তথ্যের কারণে এমন জটিলতা তৈরি হয়েছে বলে দাবি করছে নেত্রকোনা পাউবো। 

জানা যায়, নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার সেচ নিষ্কাশন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে সিধলং বিলটি খনন করা হচ্ছে। কাগজপত্রে এ বিলের নাম ও অবস্থান পূর্বধলা উপজেলার গোয়ালাকান্দা ইউনিয়নের সিদাল বিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এ বিলটির বেশির ভাগ অংশ ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার সিধলা ইউনিয়নে। যৌথভাবে এ বিল খননের ঠিকাদারি পেয়েছে ফাস্ট এফএফ এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড ও মেসার্স ইব্রাহিম ট্রেডার্স। 

সিধলা একতা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আল আমিন আজকের পত্রিকাকে জানান, বাংলা ১৪২৯ থেকে ১৪৩১ সাল পর্যন্ত বাৎসরিক ২ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা (ভ্যাট ও আয়করসহ) চুক্তি মূল্যে তিন বছরের জন্য তাঁরা বিলটি ইজারা নিয়েছেন। যা ২০২২ সালের ৮ নভেম্বর ময়মনসিংহ রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত। এরই মধ্যে তিন ধাপে তাঁরা সমস্ত টাকা পরিশোধও করেছেন। 

তিনি আরও বলেন, গত সপ্তাহে হঠাৎ নেত্রকোনা পাউবো বিলে খনন শুরু করে। বিষয়টি গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানালে তিনি মোবাইল ফোনে খনন বন্ধ করার নির্দেশ দেন। 

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মো. সাইফুল ইসলাম জানান, তাঁদের ম্যাপ অনুযায়ী বিলটি নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার অন্তর্গত। নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তাঁরা বিলটি খনন কাজের ঠিকাদারি পেয়েছেন এবং সে অনুযায়ী খনন শুরু করেছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাউবো নেত্রকোনা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান আজকের পত্রিকাকে জানান, প্রকল্পটি নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার সেচ ও পানি নিষ্কাশনের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ। কিন্তু বিলটির অবস্থান ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় হওয়ায় কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। গৌরীপুর ইউএনওর নির্দেশে এখন খনন কাজ বন্ধ রয়েছে। 

গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাকিল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড সিধলং বিলটি খনন শুরু করার আগে আমাদের কিছু জানায়নি। বিষয়টি স্থানীয়দের মাধ্যমে আমি জানতে পারি। পরে খোঁজ নিয়ে জানলাম, এটি গৌরীপুরের প্রকল্প নয়। যেহেতু বিলটি তিন বছর মেয়াদি ইজারা দেওয়া, তাই কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি। এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’