‘সুখবরের’ নামে উচ্চ শব্দে মাইক বাজিয়ে পণ্য প্রচার, অতিষ্ঠ এলাকাবাসী 

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি
Thumbnail image

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মানুষের প্রতিদিন ঘুম ভাঙে বিভিন্ন পণ্য প্রচারে ব্যবহার করা মাইকের উচ্চ শব্দের আওয়াজে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিভিন্ন যানে মাইক বেঁধে পোলট্রি মুরগির দাম হ্রাস থেকে শুরু করে ধানের বীজ নিয়ে প্রচার চালানো হয়। কোনো নিয়মনীতি না মেনে ‘সুখবর’–এর নামে মাইকের আওয়াজে অতিষ্ঠ পৌর শহরের বাসিন্দারা। 

সচেতন নাগরিক ও শিক্ষার্থীরা এর প্রতিকার চেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ অবস্থায় মাইকিং এর বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

চিকিৎসকেরা বলছেন, মানুষের শ্রবণের জন্য শব্দের ৪৫ ডেসিবেল হচ্ছে সহনীয় মাত্রা। তবে সেটা ৭০ ডেসিবেল অতিক্রম করলে তা ক্ষতিকর। পৌর শহরে যে হারে প্রতিনিয়ত মাইকিং করা হয়, এর ফলে অনেক সময় শব্দের মাত্রা ৭০ ডেসিবেলের কাছাকাছি চলে যায়। বিশেষ করে শিশুদের জন্য এটা খুবই ক্ষতিকর। 

শব্দ দূষণের বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তানভীর ইবনে কাদের বলেন, উচ্চ শব্দে মাইকিং চলতে থাকলে পর্যায়ক্রমে পৌরবাসীর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে শ্রবণ সমস্যায় ভুগতে হবে। 
 
অটোরিকশায় মাইক বেঁধে প্রচার চালানো হচ্ছেপৌরসভার কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, প্রতিদিন বিভিন্ন পণ্য ও সেবার সুযোগ-সুবিধা নিয়ে মাইকিংয়ে নামে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান শব্দ দূষণ করছে। এ সবের মধ্যে রয়েছে পোলট্রি মুরগির দাম হ্রাস, নতুন ধান, শাকসবজির বীজ, বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রচারণা, কম মূল্যে লাইট বিক্রি, বিশাল গরু-মহিষ জবাই, ঢাকাগামী পরিবহনের স্পেশাল সার্ভিস, মোটরসাইকেলের অফার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ও কোচিংয়ের প্রচারণা। এটা চলে দিন থেকে রাত পর্যন্ত। 

বাসিন্দারা বলছেন, এলাকায় একটি প্রচারণা আসার সঙ্গে সঙ্গে আরেকটি প্রচারণা শুরু হতে থাকে। মাইকিংয়ের ক্ষেত্রে হাসপাতাল, ক্লিনিক, সরকারি অফিস, স্কুল-কলেজের পরিবেশের কিছুই মানা হচ্ছে না। এতে পৌরবাসীর জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। 

মাইক লাগিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছেপৌর শহরের তারাগঞ্জ উত্তর বাজারের ব্যবসায়ী অখিল সাহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শহরে মাইকের শব্দে দোকানে বসে থাকাটাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। মাইকের শব্দে বেচাকেনা করাও কঠিন। কাস্টমারের কথাও ঠিক করে শুনতে পারি না।’ 

শিক্ষার্থী রাজীব সরকার পাবেল বলেন, ‘নির্দিষ্ট কোনো সময় না মেনে শহরে প্রতিদিন সুখবরের নামে উচ্চ শব্দে মাইকিং করা হয়। প্রতিদিন সুখবর, সুখবর শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে গেছে। এতে আমাদের পড়াশোনায় সমস্যা হয়। প্রশাসনের এতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।’ 

পৌরসভার মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিক বাক্কার বলেন, ‘দিন-রাত উচ্চ শব্দে এমন মাইকিংয়ে আমি নিজেও অতিষ্ঠ। এ বিষয়ে অনেকেই অভিযোগ ও জানিয়েছেন।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইলিশায় রিছিল বলেন, একটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যেন মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হয় এর জন্য পৌরসভার মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত