নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রাণসংকটে থাকা মানুষকে রক্ত দিয়ে বাঁচাতে বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে যেতেন ওমর ফারুক (২৪)। সে জন্য পরিচিত ও বন্ধুদের নিয়ে খুলেছিলেন ব্লাড ডোনার সোসাইটি নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সেই সংগঠনের প্রধান ছিলেন ওমর ফারুক। হাজারো সংকটাপন্ন মানুষকে রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন এই সংগঠনের সদস্যরা। কিন্তু সেই ওমরের রক্তেই ভিজল রাজপথ।
গত ১৯ জুলাই (শুক্রবার) দুপুরে কোটাবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে রাজধানীর লক্ষ্মীবাজার এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন ওমর ফারুক। তাঁর বুকে তিনটি গুলি বিদ্ধ হয়। তিন দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ২১ জুলাই (রোববার) সকালে ওমরের লাশ তাঁর গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়নের সিংহা গ্রামে নেওয়া হয়। সেখানে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
ওমর ফারুক নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সিংহা গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে। তিনি রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ওই দিন আন্দোলনে গুলিতে ওমর ফারুকের আরও তিন সহপাঠী নিহত হন বলে জানা গেছে।
দুর্গাপুর ব্লাড ডোনার সোসাইটি নামে একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ছিলেন ওমর। এলাকায় থাকা অবস্থায় সংকটে পড়া মানুষকে রক্তদানে সহায়তার উদ্দেশ্যে সংগঠনটি তৈরি করেছিলেন তিনি। ঢাকায় চলে গেলেও সংগঠনের কাজ চলমান রেখেছেন নিয়মিত।
দুই ভাইয়ের মধ্যে ওমর ফারুক বড়। তাঁর ছোট ভাই আবদুল্লাহ অনিক উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। ওমর ফারুকের বাবা সংযুক্ত আরব আমিরাতপ্রবাসী। ছেলের শরীরে গুলি লাগার খবর পেয়ে পরদিনই দেশে চলে আসেন তিনি।
ওমর ফারুকের ছোট ভাই ২১ বছরের তরুণ আবদুল্লাহ অনিক বলেন, ‘শুক্রবার বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেছে ভাইয়া। পরে বন্ধুদের সঙ্গে কোটা সংশোধন আন্দোলনে বের হয়। কিন্তু লক্ষ্মীবাজার এলাকায় তাদের মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে ভাইয়ার বুকে তিনটি গুলি লাগে। বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করে পরে ঢামেকে নিয়ে যায়। ততক্ষণে তার মৃত্যু হয়। ওই মিছিলে ভাইয়ার আরও তিন বন্ধু গুলিতে নিহত হয়েছে বলে শুনেছি।’
আবদুল্লাহ অনিক বলেন, ‘খবর পেয়ে ঢাকায় রওনা হই। রাত ৯-১০টার দিকে ঢাকায় গিয়ে পৌঁছাই। ঢামেকে গিয়ে লাশ খুঁজতে চাইলে তারা ভেতরে ঢুকতে দেয়নি, বলে থানা-পুলিশের অনুমতি লাগবে। পরে শাহবাগ থানায় গেলে পুলিশ জানায়, ওমর ফারুক নামে কারও লাশ ওখানে নেই, তারা অনুমতি দেয়নি। সারা রাত ঢামেক আর থানায় দৌড়াদৌড়ি করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। পরদিন আধা বেলা ঢামেক আর থানায় ছুটেছি, কোনো কূল-কিনারা হয়নি।’
‘আমাদের স্থানীয় এমপি মোশতাক আহমেদ রুহী সাহেবকে ফোনে বিষয়টি জানালে তিনি শাহবাগ থানায় কথা বলে দেন। পরে পুলিশ অনুমতি দেয় ঢামেকে গিয়ে লাশ খোঁজ করার। বিকেলে ঢামেকে গিয়ে দেখি ফ্যানবিহীন সাদাসিধা একটা কক্ষে অর্ধশতের বেশি লাশ পড়ে আছে। সেখানে উঁকি দিয়ে কিছুটা ওপরের দিকে আমার ভাইয়ার লাশটা দেখতে পাই। পরে পোস্টমর্টেমসহ নানা আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে রাতে লাশ নিয়ে একটা পিকআপে করে বাড়ির দিকে রওনা হই।’ যুক্ত করেন আবদুল্লাহ অনিক।
আবদুল্লাহ অনিক আরও বলেন, ‘তবে লাশ বের করতে সহায়তায় এসেছিল ভাইয়ার কলেজের দুই সহপাঠী, তাদের সেখান থেকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। রোববার সকাল ১০টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।’
আবদুল্লাহ অনিক আরও জানান, ‘আমার ভাইয়া খুবই পরোপকারী মানুষ। তার জানাজায় হাজার হাজার মানুষ এসেছে। মানুষের বিপদ শুনলেই সবার আগে সহায়তার জন্য ছুটে গেছে। যে ক্ষতি হয়েছে, তা কোনো কিছুতেই পূরণ হওয়ার নয়। জীবন তো আর ফেরানো যাবে না। বিচার চেয়ে আর কী হবে!’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ওমর ফারুকের বাবা আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমার ছেলে রক্ত দিয়ে মানুষের জীবন বাঁচাত। গুলিতে তার জীবনপ্রদীপ নিভে গেল। গুলিতে বুক ঝাঁজরা হয়ে সেই পরোপকারী ছেলের রক্তে রাজপথ ভিজেছে। এখন সে দুনিয়াতে নাই। আমি সবার কাছে দোয়া চাই আমার ছেলের জন্য।’
ওমর ফারুকের চাচা আব্দুল কাদির বলেন, একটা তরতাজা জীবন ঝড়ে গেল। এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।
স্থানীয় সংবাদকর্মী মেহেদী আকন্দ বলেন, বিপদগ্রস্ত কোনো রোগীর রক্ত লাগলে ওমর ফারুকের সংগঠনের কাউকে জানালেই কাজ হয়ে যেত। তারা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোন হাসপাতালে রক্ত লাগবে, সেখানে গিয়ে রক্ত দিয়ে আসত। এমন মৃত্যু বেদনাদায়ক। ওমর ফারুকের মৃত্যুতে এলাকায় শোক নেমে এসেছে।
প্রাণসংকটে থাকা মানুষকে রক্ত দিয়ে বাঁচাতে বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে যেতেন ওমর ফারুক (২৪)। সে জন্য পরিচিত ও বন্ধুদের নিয়ে খুলেছিলেন ব্লাড ডোনার সোসাইটি নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সেই সংগঠনের প্রধান ছিলেন ওমর ফারুক। হাজারো সংকটাপন্ন মানুষকে রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন এই সংগঠনের সদস্যরা। কিন্তু সেই ওমরের রক্তেই ভিজল রাজপথ।
গত ১৯ জুলাই (শুক্রবার) দুপুরে কোটাবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে রাজধানীর লক্ষ্মীবাজার এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন ওমর ফারুক। তাঁর বুকে তিনটি গুলি বিদ্ধ হয়। তিন দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ২১ জুলাই (রোববার) সকালে ওমরের লাশ তাঁর গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়নের সিংহা গ্রামে নেওয়া হয়। সেখানে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
ওমর ফারুক নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সিংহা গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে। তিনি রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ওই দিন আন্দোলনে গুলিতে ওমর ফারুকের আরও তিন সহপাঠী নিহত হন বলে জানা গেছে।
দুর্গাপুর ব্লাড ডোনার সোসাইটি নামে একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ছিলেন ওমর। এলাকায় থাকা অবস্থায় সংকটে পড়া মানুষকে রক্তদানে সহায়তার উদ্দেশ্যে সংগঠনটি তৈরি করেছিলেন তিনি। ঢাকায় চলে গেলেও সংগঠনের কাজ চলমান রেখেছেন নিয়মিত।
দুই ভাইয়ের মধ্যে ওমর ফারুক বড়। তাঁর ছোট ভাই আবদুল্লাহ অনিক উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। ওমর ফারুকের বাবা সংযুক্ত আরব আমিরাতপ্রবাসী। ছেলের শরীরে গুলি লাগার খবর পেয়ে পরদিনই দেশে চলে আসেন তিনি।
ওমর ফারুকের ছোট ভাই ২১ বছরের তরুণ আবদুল্লাহ অনিক বলেন, ‘শুক্রবার বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেছে ভাইয়া। পরে বন্ধুদের সঙ্গে কোটা সংশোধন আন্দোলনে বের হয়। কিন্তু লক্ষ্মীবাজার এলাকায় তাদের মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে ভাইয়ার বুকে তিনটি গুলি লাগে। বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করে পরে ঢামেকে নিয়ে যায়। ততক্ষণে তার মৃত্যু হয়। ওই মিছিলে ভাইয়ার আরও তিন বন্ধু গুলিতে নিহত হয়েছে বলে শুনেছি।’
আবদুল্লাহ অনিক বলেন, ‘খবর পেয়ে ঢাকায় রওনা হই। রাত ৯-১০টার দিকে ঢাকায় গিয়ে পৌঁছাই। ঢামেকে গিয়ে লাশ খুঁজতে চাইলে তারা ভেতরে ঢুকতে দেয়নি, বলে থানা-পুলিশের অনুমতি লাগবে। পরে শাহবাগ থানায় গেলে পুলিশ জানায়, ওমর ফারুক নামে কারও লাশ ওখানে নেই, তারা অনুমতি দেয়নি। সারা রাত ঢামেক আর থানায় দৌড়াদৌড়ি করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। পরদিন আধা বেলা ঢামেক আর থানায় ছুটেছি, কোনো কূল-কিনারা হয়নি।’
‘আমাদের স্থানীয় এমপি মোশতাক আহমেদ রুহী সাহেবকে ফোনে বিষয়টি জানালে তিনি শাহবাগ থানায় কথা বলে দেন। পরে পুলিশ অনুমতি দেয় ঢামেকে গিয়ে লাশ খোঁজ করার। বিকেলে ঢামেকে গিয়ে দেখি ফ্যানবিহীন সাদাসিধা একটা কক্ষে অর্ধশতের বেশি লাশ পড়ে আছে। সেখানে উঁকি দিয়ে কিছুটা ওপরের দিকে আমার ভাইয়ার লাশটা দেখতে পাই। পরে পোস্টমর্টেমসহ নানা আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে রাতে লাশ নিয়ে একটা পিকআপে করে বাড়ির দিকে রওনা হই।’ যুক্ত করেন আবদুল্লাহ অনিক।
আবদুল্লাহ অনিক আরও বলেন, ‘তবে লাশ বের করতে সহায়তায় এসেছিল ভাইয়ার কলেজের দুই সহপাঠী, তাদের সেখান থেকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। রোববার সকাল ১০টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।’
আবদুল্লাহ অনিক আরও জানান, ‘আমার ভাইয়া খুবই পরোপকারী মানুষ। তার জানাজায় হাজার হাজার মানুষ এসেছে। মানুষের বিপদ শুনলেই সবার আগে সহায়তার জন্য ছুটে গেছে। যে ক্ষতি হয়েছে, তা কোনো কিছুতেই পূরণ হওয়ার নয়। জীবন তো আর ফেরানো যাবে না। বিচার চেয়ে আর কী হবে!’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ওমর ফারুকের বাবা আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমার ছেলে রক্ত দিয়ে মানুষের জীবন বাঁচাত। গুলিতে তার জীবনপ্রদীপ নিভে গেল। গুলিতে বুক ঝাঁজরা হয়ে সেই পরোপকারী ছেলের রক্তে রাজপথ ভিজেছে। এখন সে দুনিয়াতে নাই। আমি সবার কাছে দোয়া চাই আমার ছেলের জন্য।’
ওমর ফারুকের চাচা আব্দুল কাদির বলেন, একটা তরতাজা জীবন ঝড়ে গেল। এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।
স্থানীয় সংবাদকর্মী মেহেদী আকন্দ বলেন, বিপদগ্রস্ত কোনো রোগীর রক্ত লাগলে ওমর ফারুকের সংগঠনের কাউকে জানালেই কাজ হয়ে যেত। তারা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোন হাসপাতালে রক্ত লাগবে, সেখানে গিয়ে রক্ত দিয়ে আসত। এমন মৃত্যু বেদনাদায়ক। ওমর ফারুকের মৃত্যুতে এলাকায় শোক নেমে এসেছে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় লিটন হোসেন (৩০) নামের এক বাংলাদেশি যুবককে আটকের পর বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ। বিজিবি গতকাল বুধবার বিকেলে থানায় সোপর্দ করলে তাঁকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
১২ মিনিট আগেচট্টগ্রাম বন্দরে কাজের গতি বাড়াতে ২২ বছরের জন্য পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সৌদি আরবের ‘রাজকীয়’ অপারেটর রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনালকে (আরএসজিটিআই)।
২৫ মিনিট আগেনারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গ্যাস লাইন লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে একই পরিবারের ছয়জন দগ্ধের ঘটনায় দুই ভাই ও বোনের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবা বাবুল মিয়া (৪০) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা গেছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজন মারা গেলেন।
১ ঘণ্টা আগেনিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শরীয়তপুরের পদ্মা নদীতে ইলিশ শিকারের অপরাধে ২৬ জেলেকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া চারটি মাছ ধরার নৌকা ও ২ লাখ মিটার অবৈধ জাল জব্দ করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে