রাজশাহীর চারঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সরঞ্জাম নির্বীজন (জীবাণুশূন্যকরণ) করার জন্য ২০০৫ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়েছিল একটি শক্তিশালী অটোক্লেভ মেশিন। প্রায় ২৬ লাখ টাকা দামের জীবাণুমুক্তকারী মেশিনটি এত দিনেও কাজে লাগানো হয়নি। যন্ত্রটির কার্যকারিতা এখন আর নেই বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা। 

এই যন্ত্রের বিক্রয়োত্তর সেবার মেয়াদও ফুরিয়ে গেছে বেশ আগেই। যন্ত্রটি সরিয়ে ফেলার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ে বেশ কয়েকবার চিঠি পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের কর্মকর্তারা বলছেন, এই যন্ত্র স্থাপনের জন্য যে ধরনের অবকাঠামো প্রয়োজন, তা এখানে নেই। তা ছাড়া এটা পরিচালনার মতো দক্ষ জনবলও নেই। 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের পশ্চিম পাশে বহির্বিভাগের পূর্ব গেটের সামনে পড়ে আছে অটোক্লেভ মেশিনটি। অযত্নে অবহেলায় মেশিনের পেছনের অংশে মরিচা ধরেছে, মাকড়সা বাসা বেঁধেছে। বছরের পর বছর ধরে এখানেই পড়ে আছে মেশিনটি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের শেষের দিকে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ট্রাকে করে অটোক্লেভ মেশিনটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। তারা ট্রাক থেকে মেশিনটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের সামনে নামিয়ে রেখে চলে যায়। পরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার জানালেও মেশিনটি স্থাপনে কর্তৃপক্ষের কেউ আসেননি। বছরখানেক পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের লোকজন মেশিনটি ধরাধরি করে মূল ভবনের ভেতরের বারান্দায় রাখেন। এরপর থেকে ১৫ বছর ধরে বারান্দাতেই আছে অটোক্লেভ মেশিনটি। এক দিনের জন্যও সেটা ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শহীদুল ইসলাম রবিন বলেন, চিকিৎসা সরঞ্জাম ব্যবহারের আগে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে জীবাণুমুক্ত করা প্রয়োজন। অটোক্লেভ এমন একটি ডিভাইস, যা চিকিৎসা সরঞ্জাম নির্বীজন করে। মেশিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে মেশিনটি ব্যবহারের জন্য যে ব্যবস্থাপনা দরকার, সেটি আমাদের হাসপাতালে নেই। এ জন্য অটোক্লেভ মেশিনটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে।

চারঘাট স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশিকুর রহমান বলেন, `আমি দায়িত্ব গ্রহণেরও অনেক আগে থেকে অটোক্লেভ মেশিনটি ওখানে রাখা আছে। যেহেতু মেশিনটি ব্যবহার হয় না, এ জন্য আমরা তা ফেরত পাঠানোর জন্য চেষ্টা করছি।'