বাগাতিপাড়ায় কেটে ফেলা হলো কম উৎপাদনশীল জাতের ৭৫০ বিঘা আমবাগান

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০: ৫৪
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১: ০৯
Thumbnail image

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় কয়েক বছর ধরে ক্রমাগত আমের দাম কমে যাওয়ায় লোকসানে প্রায় ৭৫০ বিঘা জমির পুরোনো ও কম উৎপাদনশীল জাতের আমবাগান কেটে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় কৃষকদের দাবি, আমবাগান কেটে ফেলা জমির পরিমাণ হাজার বিঘা ছাড়িয়ে যাবে।

স্থানীয় কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট ৯ হাজার ২০০ বিঘা আমবাগান রয়েছে। এর মধ্যে চলতি বছর পুরোনো ও কম উৎপাদনশীল জাতের প্রায় ৭৫০ বিঘা আমবাগান কাটা হয়েছে। তার বিপরীতে ৩৬৫ বিঘা জমিতে আধুনিক ও উচ্চ ফলনশীল জাতের আমগাছ লাগানো হয়েছে। আর বাকি জমিতে কুল, পেয়ারা, কলা, ড্রাগন ও সবজি চাষ করা হয়েছে।

উপজেলার পাকা ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি আমবাগান কাটা হয়েছে। এ ছাড়া জামনগর, বাগাতিপাড়া সদর, দয়ারামপুর, ফাগুয়াড়দিয়াড় ইউনিয়ন ও পৌরসভায়ও কম-বেশি আমবাগান কাটা হয়েছে। এর মধ্যে লক্ষণভোগ, ফজলি ও লেংড়া জাতের আমগাছ বেশি টাকা হচ্ছে।

স্থানীয় আমচাষিরা জানিয়েছেন, কয়েক বছরে সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাগানের পরিচর্যা খরচ বেড়েছে। অন্যদিকে কমেছে আমের দাম। ১৪-১৫ বছর আগে যে আম হাজার-বারো শ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে, কয়েক বছর ধরে সেই আম বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়। তাই সেই জমিতে অন্য ফসল চাষ করা হচ্ছে।

শালাইনগর গ্রামের মেহেদি হাসান বলেন, কয়েক বছর ধরে ক্রমাগত আমের দাম কমতে থাকায় লোকসানে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাই বাধ্য হয়ে সম্প্রতি সাড়ে ১১ বিঘা জমির আমবাগান কেটে বিভিন্ন জাতের ফসল চাষ করেছেন। মেহেদি হাসান আরও বলেন, তাঁদের পাকা ইউনিয়নেই চলতি বছর প্রায় ৩০০ বিঘার বেশি জমির আমবাগান কেটেছেন চাষিরা।

কাটা আমগাছ ট্রাকে করে সরিয়ে নেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকাচকগোয়াস এলাকার লিটন আলী বলেন, আমবাগানের পরিচর্যা খরচ দিনে দিনে বেড়েছে। পক্ষান্তরে আমের দাম কমেছে। ফলে বাগানের চেয়ে অন্য যেকোনো ফসল চাষ লাভজনক। তাই তিনি চার বিঘা জমির আমবাগান কেটে ২৭ হাজার টাকা বিঘা হারে লিজ দিয়েছেন।

তমালতলা এলাকার বাণিজ্যিক ফলচাষি আব্দুল বারি বলেন, চলতি বছর তিনি ড্রাগন, পেয়ারা, কুল, কলাসহ উচ্চফলনশীল ফল চাষের জন্য পাকা ইউনিয়নের চকতকিনগর মাঠে সদ্য আমবাগান কাটা প্রায় ২৪ বিঘা জমি লিজ নিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ভবসিন্ধু রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, মূলত অনেক পুরোনো ও কম উৎপাদনশীল জাতের আমবাগানে চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান না হওয়ায় সেগুলো কেটে ফেলছেন। পক্ষান্তরে ওই সব জমিতেই ড্রাগন, পেয়ারা, কুলসহ উচ্চফলনশীল এবং বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক ফল চাষ করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত