রাত পোহালেই কোরবানির ঈদ, দম ফেলার ফুরসত নেই গাংনীর কামারদের

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৪, ১০: ৫৫
আপডেট : ১৬ জুন ২০২৪, ১১: ৩১

রাত পোহালেই মুসলমানদের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। আর ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কামারেরা। ব্যস্ততা এতই বেড়েছে যে, দম ফেলার ফুরসত নেই। দিন-রাত সমানতালে চলছে লোহার টুংটাং শব্দ। উপজেলার বিভিন্ন কামারপাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, কোরবানি সামনে রেখে কামারেরা দা, বঁটি, ছুরি, ডাসা, চাপাতি, হাঁসুয়াসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। 

উপজেলার বামনদী, জোড়পুকুরিয়া, তেরাইল, সাহারবাটি, করমদী, দেবীপুরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে কামারেরা তৈরি করছেন এসব সরঞ্জাম। কেউ আসছে নতুন করে শান দেওয়ার জন্য, কেউ নতুন করে তৈরি করার জন্য, আবার কেউ কিনে নিচ্ছেন। অনেক ব্যবসায়ী পাইকারি বাজারে এগুলো বিক্রি করছেন বিভিন্ন দামে। 

ছুরি শাণ দিতে আসা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আগামীকাল কোরবানির ঈদ। তাই কোরবানির পশু জবাই করার জন্য ছুরি শাণ দিতে এসেছি। ছুরিতে শাণ দেওয়া মাপ অনুযায়ী ৫০ থকে ১০০ টাকা করে নিচ্ছে।’ 

শাণ দিতে আসা অপর এক ব্যক্তি মো. হকমান আলী বলেন, ‘আমি বড় ছুরি, হাঁসুয়াসহ কয়েকটা জিনিস শাণ দিতে এসেছি। অতিরিক্ত ভিড়। আর এখন লোহার দাম বেশি, তাই ছুরি, চাপাতি, ডাসাসহ সবকিছুর দাম বেড়েছে।’ 

বামনদী বাজারে ছুরি ও ডাসা কিনতে আসা মো. জামরুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে লোহা ওজন করে বিক্রি হচ্ছে। লোহা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রয় করছে। আমি একটি ছোট ডাসা কিনেছি ৪৫০ টাকা দিয়ে আর একটি ছোট ছুরি কিনেছি ১৫০ টাকা দিয়ে। বাজারে জিনিসপাতির অনেক দাম।’ 

ব্যবসায়ী বাদল কর্মকার বলেন, ‘ডাসা বিক্রয় হচ্ছে ওজন বুঝে—৬০০ থেকে ১২০০ টাকা। ছুরি ১৫০ থেকে ৬০০ টাকা। কোরবানি সামনে রেখে চাহিদা বেড়েছে। লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’ 

কামার মো. আশাদুল ইসলাম বলেন, ‘আধুনিক যন্ত্রপাতি তৈরি হচ্ছে, এ কারণে আমাদের চাহিদাও কমে যাচ্ছে। মানুষ আধুনিক যন্ত্রপাতির দিকে বেশি ঝুঁকছে। একসময় হয়তো এই পেশা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তবে কোরবানি এলে আমরা একটু আশাবাদী থাকি। কোরবানি ছাড়া এসব কাজ আর আমাদের কাছে তেমন হয় না।’ 

তাদের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের দাম প্রসঙ্গে বলেন, ‘ঈদ সামনে রেখে ছুরি পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে, ডাসা ৬০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে, চাপাতি ৮০০ থেকে ১৩০০ টাকা করে বেচাকেনা হচ্ছে। লোহার দাম ও শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় যন্ত্রপাতির দাম বেড়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন এ পেশায় আছি। কাজ ভালো হলে প্রতিদিন আরো শ থেকে পনেরো শ টাকা আয় হয়।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত