Ajker Patrika

চীনপ্রবাসী ছেলের সঙ্গে অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ, স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ইউএনওর কাছে অভিযোগ 

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ মে ২০২৪, ২১: ১৪
Thumbnail image

ব্যবসায়িক সম্পর্ক থেকে তাঁদের পরিচয়। সেই সূত্র ধরে চীনা পণ্য এনে দিতে ব্যাংকের মাধ্যমে কয়েক দফায় অর্ধকোটি দেন তাঁরা। কিন্তু টাকা পাওয়ার পর ওপার থেকে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর দেশ থেকে বিষয়টি পরিচালনা করেন ওই ব্যবসায়ীর মা। ছেলে ও মায়ের নামে টাকা আত্মসাতের এ অভিযোগে থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন দুই ব্যক্তি।

ঘটনাটি ঘটেছে জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে। এ ঘটনায় চলতি বছর ৩ মার্চ ও ২০ মে ইউএনও বরাবর ও থানায় পৃথক অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন সামিউল নাসিম সোনা (২৯)। তিনি বিদেশে বসে পণ্য সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে হাতিয়ে নেন টাকা। অপরদিকে তাঁর মা সামছুন নাহার দেশে থেকে সেটি পরিচালনা করেন। সামছুন নাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে কর্মরত রয়েছেন। তাঁদের বাড়ি উপজেলার জাফরপুর গ্রামে। 

ভুক্তভোগী যশোর জেলার শফিকুল ইসলাম তাঁর অভিযোগে উল্লেখ করেন, সামছুন নাহারের ছেলে সামিউল নাসিম সোনা (২৯) দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। তিনি ইন্টারনেটের কাজে ব্যবহৃত চীনা মালামাল দেওয়ার কথা বলে ব্যাংকের মাধ্যমে ২৪ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকা নিয়েছিলেন সামিউল ইসলাম। টাকা পাওয়ার পর তিনি সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। 

অপরদিকে ফরিদপুর জেলার রাকিব হোসেন নামের আরও এক ব্যক্তির কাছ থেকেও ২৬ লাখ ২৪ হাজার টাকার মালামাল দেওয়ার কথা বলে ওই টাকা আত্মসাৎ করেন এবং তাঁর সঙ্গেও যোগাযোগ বন্ধ করে দেন সামিউল ইসলাম। এ ঘটনায় রাকিব হোসেনও আক্কেলপুর থানায় সামিউল ইসলামের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। 

ইউএনও কার্যালয় ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের প্রবাসী ছেলে সামিউল নাসিম সোনার সঙ্গে ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম ও রাকিব হোসেনের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। তাঁরা সামিউল ইসলামের মাধ্যমে চীন থেকে পণ্য বাংলাদেশে আনতেন। গত ১৬ মে পণ্য ক্রয়ের জন্য শফিকুল ইসলাম সিটি ব্যাংকের ঢাকা গুলশান শাখায় নাসিম করপোরেশন নামের হিসাব নম্বরে ২৪ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকা জমা দেন সামিউল ইসলাম সোনার অ্যাকাউন্টে। 

টাকা পাওয়ার পর সামিউল ইসলাম যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। একইভাবে রাকিব হোসেনের সঙ্গেও ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপন করে কয়েক দফায় ২৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা নিয়ে তাঁর সঙ্গেও যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। 

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আমার পাওনা টাকার বিষয়ে সোনার বাড়িতে গিয়ে কোনো প্রকার প্রতিকার না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আজ তাঁর মা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ করবেন বলে ১০০ টাকার তিনটি স্ট্যাম্পে লিখিত এবং একটি চেক প্রদান করেছেন। এসব ইউএনওর কাছে জমা আছে।’ 

ওই স্ট্যাম্পে উল্লেখ করা হয়, আগামী ৬ জুনের মধ্য চেকে উল্লেখিত টাকা সামিউল নাসিম সোনা পরিশোধ করবেন। ওই তারিখে সামিউল নাসিম সোনা টাকা না পরিশোধ করলে তাঁর মা সামছুন নাহার আগামী ২৩ জুন যেকোনো ব্যাংকের মাধ্যমে ওই টাকা পরিশোধ করবেন। যদি মা–ছেলে দুজনেই ওই টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে প্রথম পক্ষ দ্বিতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে যেকোনো সংস্থা থেকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। 

অপর ভুক্তভোগী রাকিব হোসেন বলেন, অভিযুক্ত সামিউল ইসলাম সোনা চীন থেকে পণ্য বাংলাদেশে দেওয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। টাকাগুলো নেওয়ার জন্য তাঁর মায়ের কাছে গেলে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেবেন বলে হুমকি দেয়। টাকার বিষয়ে থানায় লিখিত দেওয়া আছে। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সোনার মা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর সামছুন নাহার জানান, যেহেতু তিনি সরকারি চাকরি করেন তাই তিনি ইউএনওর কথায় স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও টাকা উল্লেখ করে একটি চেক জমা দেন। ছেলের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে তিনি জানতেন না। 

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নয়ন হোসেন বলেন, তাদের বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুরুল আলম বলেন, ‘তাদের মা-ছেলের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তারা টাকাগুলো ফেরত দেবেন মর্মে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী সহকর্মীর সঙ্গে রাতযাপন: হাইটেক পার্কের ডিডি আতিক বরখাস্ত

বাংলাদেশসহ ৩ দেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত সুইজারল্যান্ডের

পদ্মা সেতু ও ড. ইউনূসকে নিয়ে ভারত থেকে শেখ হাসিনার ভাষণ! ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা জানুন

বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের পদত্যাগ

২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন কর্মসূচি শুরু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত