Ajker Patrika

বৃষ্টির আশায় নেচে–গেয়ে ব্যাঙের বিয়ে

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯: ০৮
বৃষ্টির আশায় নেচে–গেয়ে ব্যাঙের বিয়ে

কয়েক দিনের তীব্র রোদ আর ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। চলমান এ তাপপ্রবাহ থেকে স্বস্তি পেতে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ের দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার উপজেলার এলুয়াড়ী ইউনিয়নের পানিকাটা গ্রামে ঐতিহ্যবাহী এ বিয়ের আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন গ্রামবাসী। 

দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ অনুষ্ঠানে নানা বয়সের শতাধিক গ্রামবাসী অংশ নেন। তাঁরা একটি পুরুষ ব্যাঙ ও একটি স্ত্রী ব্যাঙ ধরে এনে বিয়ে দেন। 

গ্রামবাসীরা বিয়ের পুরো সময় ‘আল্লাহ মেঘ দে পানি দে, ছায়া দে রে তুই’ গানসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক বিয়ের গান গেয়ে–নেচে বিয়ের উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় রং খেলাতেও মাতেন তাঁরা। 

বিকেলে তাঁরা বিবাহিত ব্যাঙগুলোকে ঢোঙ্গার ওপর নিয়ে পুরো গ্রামে ঘুরে বেড়ান। এ সময় গ্রামবাসীদের কাছ থেকে চাল, ডাল, মুরগি ও মসলার টাকা সংগ্রহ করে রাতের খাবারের আয়োজন করা হয়। 

ব্যাঙের বিয়ের অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক ছিলেন, স্থানীয় ৭৫ বছরের বৃদ্ধা আহেতুন বেওয়া এবং তাঁকে সহযোগিতা করেন তাঁর পরিবারের সদস্যরাসহ গ্রামের অন্যান্য নারীরা। 

আহেতুন বেওয়া বলেন, প্রচণ্ড গরমে আমরা পরিবারের সদস্যরা আগেকার দিনের একটি ঘটনার কথা স্মরণ করছিলাম। সে বছরগুলোতে গ্রামবাসীরা বৃষ্টির আসায় ব্যাঙের বিয়ে দিয়েছিল এবং পরেদিন বৃষ্টি হয়েছিল। তাই আমার নাতি বউয়েরাসহ গ্রামের সকলে মিলে বৃষ্টির জন্য ব্যাঙের বিয়ের আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেই। 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অনুষ্ঠান করার পর এখনো বৃষ্টি হয়নি। তবে এলাকার আকাশে মেঘ জমেছে।’ 

আহেতুনের নাতি সোহেল রানা বলেন, ‘অতিরিক্ত গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় গ্রামবাসীর আমন ধানের জমি শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে। সেচের পানি জোগাড় করতে কষ্ট হচ্ছে, খাল-বিল, পুকুরও শুকিয়ে গেছে। বৃষ্টি হবে কি না, জানি না। কিন্তু আমরা সারা দেশের বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছি। আমাদের পূর্বপুরুষেরাও একই কাজ করতেন এবং আমরাও তাদের অনুসরণ করলাম।’ 

দিনাজপুরের আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানান, আজ দিনাজপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৭৮ শতাংশ। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি হওয়ার কারণে অতিরিক্ত গরম অনুভূত হচ্ছে। 

তিনি বলেন, এ জেলায় সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বৃষ্টি হয়েছে ১০৬, দ্বিতীয় সপ্তাহে ৯ ও তৃতীয় সপ্তাহে ১৬ মিলিমিটার। ২ সেপ্টেম্বর থেকে এ অঞ্চলে তীব্র ও মাঝারি তাপপ্রবাহ চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত