ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বিভিন্ন কার্যালয়ে আসছেন না গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ ও বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা। এসব দপ্তরে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না নাগরিকেরা। 

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানরা গাইবান্ধা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপনের অনুসারী ছিলেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর মাহমুদ হাসান পালিয়ে আমেরিকায় শ্বশুরের কাছে চলে গেছেন বলে জানা গেছে। তবে, জনপ্রতিনিধিরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। 

সরেজমিনে জানা গেছে, ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই পালিয়েছেন। ১০ দিন ধরে কার্যালয়ে আসছেন না তিনি। এতে সেবার কার্যক্রম নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। ভোগান্তিতে পড়েছেন নাগরিকেরা। তাঁর সঙ্গে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান রাসেল বিন ওয়াহেদ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদা বেগমও আত্মগোপনে আছেন। 

ফুলছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আজাহারুল হান্নান, উদাখালী ইউপির মো. আল আমিন, কঞ্চিপাড়ার মো. সোহেল রানা শালু, উড়িয়ার মো. গোলাম মোস্তফা কামাল পাশা, ফজলুপুরের মো. আনছার আলী মণ্ডল, এরেন্ডাবাড়ীর আব্দুল মান্নান আকন্দ, গজারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. খোরশেদ আলী খান আত্মগোপনে আছেন। 

জনপ্রতিনিধিরা আত্মগোপনে থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নাগরিকেরা। তাঁরা উত্তরাধিকার সনদ, জন্ম ও মৃত্যুসনদসহ সংশোধিত জন্মনিবন্ধন পেতে বিভিন্ন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অনেকেই এসব সেবার জন্য উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। 

এ বিষয়ে ফুলছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জগৎবন্ধু মণ্ডল বলেন, ‘আমি এ রকম কিছু জানি না। আমার জানামতে সবাই অফিস করছেন।’ 

ফুলছড়ি উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সৈকত জামান প্রিন্স আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপজেলার সব জনপ্রতিনিধি পালাতক রয়েছেন। গত ১০ দিন থেকে আমরা জনপ্রতিনিধিদের কাউকে দেখিনি। নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান রিপনের লোক। হয়তো ওনাকে রিপন ফোন দিয়ে পলাতক থাকা অবস্থায় উপস্থিতি দেখাচ্ছেন। আমাদের কাছে নাগরিকেরা অভিযোগ করে বলছেন, ফুলছড়ি উপজেলার কোনো জনপ্রতিনিধিকে অফিসে গিয়ে পাচ্ছেন না। আর নির্বাহী অফিসার বলছেন সবাই উপস্থিত। এই নির্বাহী অফিসারের পদত্যাগ চাই।’