৬ লেন জাতীয় সড়ক
আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সম্প্রসারিত ছয় লেন জাতীয় মহাসড়কের ভূমি অধিগ্রহণে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জমির শ্রেণি পরিবর্তন, স্থাপনার জন্য ক্ষতিপূরণসহ নানা কাজে ঘুষ-বাণিজ্যের মহোৎসব চলছে। এতে ব্যক্তি লাভবান হলেও সরকারের কোটি কোটি টাকা গচ্চা যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কতিপয় কর্মকর্তা, কানুনগো, সার্ভেয়ার এবং অফিস সহকারীদের যোগসাজশে চলছে এই দুর্নীতি।
আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে কমিশন-বাণিজ্য, ভুয়া পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিয়ে একজনের ক্ষতিপূরণ অন্য ব্যক্তিকে দিয়ে দেওয়া, প্রকৃত মালিকদের মামলা-মোকদ্দমার ফাঁদে আটকে ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মসাৎ করাসহ নানা দুর্নীতি-অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছে।
অনিয়মের ক্ষেত্রে শুধু ঊর্ধ্বতনেরাই নন, বরং সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীই জড়িত। তাঁদের মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পিয়ন হাবিব ও নজরুল ইসলাম, সার্ভেয়ার আল আমিন, কামরুজ্জামান, কানুনগো তাইজুল ইসলাম, ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জহির ইমামের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেবনাথ সাহা নামের একজনের মালিকানাধীন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বোয়ালিয়া মৌজার এসএ ৭৩৮ ও ৮২২ দাগের ০.০০৯০ একর জমি বাণিজ্যিক ছিল না। কিন্তু জমিটির ওপর সামান্য স্থাপনা নির্মাণ করে বাণিজ্যিক হিসেবে দেখানোর কারণে প্রায় ১১ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। আতাউর রহমান সরকারের ৭৯০,৭৯১ ও ৭৯২ দাগে কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছিলই না। কিন্তু ২৪ শতাংশ ঘুষ দিয়ে ডাঙার ভূমি বাণিজ্যিক দেখিয়ে প্রায় ১২ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। একই মৌজায় বাবু লাল চৌধুরী ও সোহেল নওরোজ ২০১৭ ও ২০১৮ দাগে প্রায় ছয় কোটি টাকা নিয়েছেন। ওই মৌজার ৮২৯ নম্বর দাগে ছোট বাউন্ডারির ভেতর কলার চাষ করতেন এ টি এম আমিনুল ইসলাম। সেখানে ০.০৪১৮ একর জমিতে টিনশেড অবকাঠামো করে বাণিজ্যিক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া হয়। নুর মোহাম্মদ খায়রুল বাশার নয়ন ৭৮০ দাগের ফাঁকা জায়গায় ২৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৩ ফুট প্রস্থের একটি ঘর নির্মাণ করে। পরে তা বাণিজ্যিক দেখানো হয়েছে।
একইভাবে মোস্তফা মাহদি আল ফেরদৌসের ৮২১ দাগে ০.০১২৫ একর জমি বাড়ি শ্রেণি থেকে বাণিজ্যিক করা হয়েছে। এ ছাড়া অসদুপায়ে পান্থাপাড়া মৌজায় ৪৫৫ দাগে খোদেজা বেগম নামের এক নারী ২ কোটি ১০ লাখ টাকা নিয়েছেন। এভাবে অনেক জমির মালিক অসদুপায় অবলম্বন করে ক্ষতিপূরণ হিসেবে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল থেকে রংপুর পর্যন্ত ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ টাকা দেওয়া হয়েছে গোবিন্দগঞ্জের বোয়ালিয়া, বুজরুক বোয়ালিয়া ও পান্থাপাড়া মৌজায়। এখানে প্রতি শতক জমির মূল্য ধরা হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা।
জানা গেছে, বোয়ালিয়া, বুজরুক বোয়ালিয়া ও পান্থাপাড়া মৌজার শহর এলাকার রাস্তার দুপাশের প্রায় ১০ দশমিক ৮২ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। এ ভূমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করে দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়া অবকাঠামোর ক্ষেত্রে সঠিকভাবে পরিমাপ না করে ঘুষ নিয়ে অবকাঠামোর ক্ষতিপূরণ ৩-৪ গুণ বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মুকিতুর রহমান রাফি বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু প্রতিকার মেলেনি।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, পান্থাপাড়া, বোয়ালিয়া ও বুজরুক বোয়ালিয়া মৌজায় ১৩০টি প্লটের ৩৬০ জন ভূমিমালিকের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এতে জমি ও অবকাঠামো বাবদ সরকারের খরচ হবে ৭৩০ কোটি টাকা।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে অবকাঠামো ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়া হয়েছে। মামলা রয়েছে শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। চেক প্রদানের ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট পরিমাণ ঘুষ নেওয়া হচ্ছে। ঘুষ না দিলে চেক প্রদানে গড়িমসি করা হচ্ছে। যাঁরা চাহিদা মোতাবেক ঘুষ দিচ্ছেন, তাঁরা কোনোরকম হয়রানি ছাড়াই চেক পাচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভূমিমালিক বলেন, তাঁদের কাছ থেকে লাখে পাঁচ হাজার করে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে। না দিলে বিভিন্ন অজুহাতে চেক আটকে দেওয়া হচ্ছে।
এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পিয়ন হাবিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি আগের কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। পরে অন্য কে টাকা নিচ্ছে, তা আমি জানি না।’ পিয়ন নজরুল ইসলাম বলেন, ‘লোকবল কম থাকায় প্রায় সব কাজই আমাদের করতে হয়। সে ক্ষেত্রে কিছু খরচ নেওয়া হয়।’
সার্ভেয়ার আল আমিন ও কামরুজ্জামান দাবি করেন, এসব ঘটনা তাঁরা যোগদানের আগে ঘটতে পারেন। তাঁদের সময়ে এসব হয়নি। তবে তাঁরা ২০২২ সালে যোগদানের পর থেকে ভূমিমালিকের টাকা ও অবকাঠামোর টাকা দেওয়া হচ্ছে। ভূমি অধিগ্রহণ তদন্তে এই দুই সার্ভেয়ারের স্বাক্ষরিত ডকুমেন্ট এই প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
এ বিষয়ে জমিমালিক দেবনাথ সাহা বলেন, তিনি জমি ব্যাংকে বন্ধক রেখেছিলেন। যে টাকা তিনি পেয়েছেন, তা ব্যাংক কেটে নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘কাগজপত্র যাচাই না করে কি তাঁরা (অফিস) আমাদের টাকা দিয়েছেন। কিছু বলার থাকলে ডিসি অফিসে যান।’ অপর দিকে এ টি এম আমিনুল ইসলাম নামের আরেক জমিমালিক বলেন, ‘কেউ কোনোভাবে টাকা পেলে আপনাদের সমস্যা কোথায়? বৈধ কাগজপত্র ছাড়া কি অফিস টাকা দেবে?’
ভূমিমালিক সোহেল নওরোজ ও বাবু লাল চৌধুরী দাবি করেন, তাঁদের ব্যবসা থাকায় বাণিজ্যিক হিসেবে ভূমির টাকা পেয়েছেন। কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট অফিসে কথা বলার পরামর্শ দেন তাঁরা।
আতাউর রহমান সরকার নামের একজন বলেন, তাঁর ভূমি বাণিজ্যিক না হলেও ওই জমির ওপর দিয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। সে জন্য তিনি বাণিজ্যিক সুবিধা নিতেই পারেন।
ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন জানান, তিনি যোগদানের আগে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। আগের কর্মকর্তারা যেভাবে রিপোর্ট দিয়ে গেছেন, সেভাবেই ভূমিমালিকদের অর্থ দেওয়া হচ্ছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জহির ইমাম বলেন, ‘আগে কী হয়েছে জানি না; এখন সব যাচাই-বাছাই করার পর টাকা দেওয়া হচ্ছে। তবে কেউ কোনোভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কিংবা অর্থ হাতিয়ে নিলে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ জানালে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সম্প্রসারিত ছয় লেন জাতীয় মহাসড়কের ভূমি অধিগ্রহণে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জমির শ্রেণি পরিবর্তন, স্থাপনার জন্য ক্ষতিপূরণসহ নানা কাজে ঘুষ-বাণিজ্যের মহোৎসব চলছে। এতে ব্যক্তি লাভবান হলেও সরকারের কোটি কোটি টাকা গচ্চা যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কতিপয় কর্মকর্তা, কানুনগো, সার্ভেয়ার এবং অফিস সহকারীদের যোগসাজশে চলছে এই দুর্নীতি।
আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে কমিশন-বাণিজ্য, ভুয়া পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিয়ে একজনের ক্ষতিপূরণ অন্য ব্যক্তিকে দিয়ে দেওয়া, প্রকৃত মালিকদের মামলা-মোকদ্দমার ফাঁদে আটকে ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মসাৎ করাসহ নানা দুর্নীতি-অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছে।
অনিয়মের ক্ষেত্রে শুধু ঊর্ধ্বতনেরাই নন, বরং সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীই জড়িত। তাঁদের মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পিয়ন হাবিব ও নজরুল ইসলাম, সার্ভেয়ার আল আমিন, কামরুজ্জামান, কানুনগো তাইজুল ইসলাম, ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জহির ইমামের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেবনাথ সাহা নামের একজনের মালিকানাধীন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বোয়ালিয়া মৌজার এসএ ৭৩৮ ও ৮২২ দাগের ০.০০৯০ একর জমি বাণিজ্যিক ছিল না। কিন্তু জমিটির ওপর সামান্য স্থাপনা নির্মাণ করে বাণিজ্যিক হিসেবে দেখানোর কারণে প্রায় ১১ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। আতাউর রহমান সরকারের ৭৯০,৭৯১ ও ৭৯২ দাগে কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছিলই না। কিন্তু ২৪ শতাংশ ঘুষ দিয়ে ডাঙার ভূমি বাণিজ্যিক দেখিয়ে প্রায় ১২ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। একই মৌজায় বাবু লাল চৌধুরী ও সোহেল নওরোজ ২০১৭ ও ২০১৮ দাগে প্রায় ছয় কোটি টাকা নিয়েছেন। ওই মৌজার ৮২৯ নম্বর দাগে ছোট বাউন্ডারির ভেতর কলার চাষ করতেন এ টি এম আমিনুল ইসলাম। সেখানে ০.০৪১৮ একর জমিতে টিনশেড অবকাঠামো করে বাণিজ্যিক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া হয়। নুর মোহাম্মদ খায়রুল বাশার নয়ন ৭৮০ দাগের ফাঁকা জায়গায় ২৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৩ ফুট প্রস্থের একটি ঘর নির্মাণ করে। পরে তা বাণিজ্যিক দেখানো হয়েছে।
একইভাবে মোস্তফা মাহদি আল ফেরদৌসের ৮২১ দাগে ০.০১২৫ একর জমি বাড়ি শ্রেণি থেকে বাণিজ্যিক করা হয়েছে। এ ছাড়া অসদুপায়ে পান্থাপাড়া মৌজায় ৪৫৫ দাগে খোদেজা বেগম নামের এক নারী ২ কোটি ১০ লাখ টাকা নিয়েছেন। এভাবে অনেক জমির মালিক অসদুপায় অবলম্বন করে ক্ষতিপূরণ হিসেবে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল থেকে রংপুর পর্যন্ত ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ টাকা দেওয়া হয়েছে গোবিন্দগঞ্জের বোয়ালিয়া, বুজরুক বোয়ালিয়া ও পান্থাপাড়া মৌজায়। এখানে প্রতি শতক জমির মূল্য ধরা হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা।
জানা গেছে, বোয়ালিয়া, বুজরুক বোয়ালিয়া ও পান্থাপাড়া মৌজার শহর এলাকার রাস্তার দুপাশের প্রায় ১০ দশমিক ৮২ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। এ ভূমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করে দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়া অবকাঠামোর ক্ষেত্রে সঠিকভাবে পরিমাপ না করে ঘুষ নিয়ে অবকাঠামোর ক্ষতিপূরণ ৩-৪ গুণ বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মুকিতুর রহমান রাফি বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু প্রতিকার মেলেনি।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, পান্থাপাড়া, বোয়ালিয়া ও বুজরুক বোয়ালিয়া মৌজায় ১৩০টি প্লটের ৩৬০ জন ভূমিমালিকের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এতে জমি ও অবকাঠামো বাবদ সরকারের খরচ হবে ৭৩০ কোটি টাকা।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে অবকাঠামো ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়া হয়েছে। মামলা রয়েছে শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। চেক প্রদানের ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট পরিমাণ ঘুষ নেওয়া হচ্ছে। ঘুষ না দিলে চেক প্রদানে গড়িমসি করা হচ্ছে। যাঁরা চাহিদা মোতাবেক ঘুষ দিচ্ছেন, তাঁরা কোনোরকম হয়রানি ছাড়াই চেক পাচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভূমিমালিক বলেন, তাঁদের কাছ থেকে লাখে পাঁচ হাজার করে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে। না দিলে বিভিন্ন অজুহাতে চেক আটকে দেওয়া হচ্ছে।
এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পিয়ন হাবিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি আগের কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। পরে অন্য কে টাকা নিচ্ছে, তা আমি জানি না।’ পিয়ন নজরুল ইসলাম বলেন, ‘লোকবল কম থাকায় প্রায় সব কাজই আমাদের করতে হয়। সে ক্ষেত্রে কিছু খরচ নেওয়া হয়।’
সার্ভেয়ার আল আমিন ও কামরুজ্জামান দাবি করেন, এসব ঘটনা তাঁরা যোগদানের আগে ঘটতে পারেন। তাঁদের সময়ে এসব হয়নি। তবে তাঁরা ২০২২ সালে যোগদানের পর থেকে ভূমিমালিকের টাকা ও অবকাঠামোর টাকা দেওয়া হচ্ছে। ভূমি অধিগ্রহণ তদন্তে এই দুই সার্ভেয়ারের স্বাক্ষরিত ডকুমেন্ট এই প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
এ বিষয়ে জমিমালিক দেবনাথ সাহা বলেন, তিনি জমি ব্যাংকে বন্ধক রেখেছিলেন। যে টাকা তিনি পেয়েছেন, তা ব্যাংক কেটে নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘কাগজপত্র যাচাই না করে কি তাঁরা (অফিস) আমাদের টাকা দিয়েছেন। কিছু বলার থাকলে ডিসি অফিসে যান।’ অপর দিকে এ টি এম আমিনুল ইসলাম নামের আরেক জমিমালিক বলেন, ‘কেউ কোনোভাবে টাকা পেলে আপনাদের সমস্যা কোথায়? বৈধ কাগজপত্র ছাড়া কি অফিস টাকা দেবে?’
ভূমিমালিক সোহেল নওরোজ ও বাবু লাল চৌধুরী দাবি করেন, তাঁদের ব্যবসা থাকায় বাণিজ্যিক হিসেবে ভূমির টাকা পেয়েছেন। কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট অফিসে কথা বলার পরামর্শ দেন তাঁরা।
আতাউর রহমান সরকার নামের একজন বলেন, তাঁর ভূমি বাণিজ্যিক না হলেও ওই জমির ওপর দিয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। সে জন্য তিনি বাণিজ্যিক সুবিধা নিতেই পারেন।
ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন জানান, তিনি যোগদানের আগে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। আগের কর্মকর্তারা যেভাবে রিপোর্ট দিয়ে গেছেন, সেভাবেই ভূমিমালিকদের অর্থ দেওয়া হচ্ছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জহির ইমাম বলেন, ‘আগে কী হয়েছে জানি না; এখন সব যাচাই-বাছাই করার পর টাকা দেওয়া হচ্ছে। তবে কেউ কোনোভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কিংবা অর্থ হাতিয়ে নিলে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ জানালে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ঢাকার সাভারে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএলআরআই) ১১টি অকেজো গাড়ি বছরের পর বছর ধরে খোলা জায়গায় পড়ে রয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়ন ও গবেষণা প্রকল্পের জন্য কেনা এসব যান এখন মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। চুরি হচ্ছে যন্ত্রাংশ। গাড়িগুলো এভাবে ফেলে না রেখে নিলামে বিক্রি করা হলে সরকারের এ খাত থেকে আয় হতো ব
৪ ঘণ্টা আগেঘটনাস্থলে উপস্থিত শাখা ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শাখা ছাত্রদলের সাবেক নেতা–কর্মীদের একটি মতবিনিময় সভা উপলক্ষে গেরুয়া বাজারে একটি দোকানে খাবার খাচ্ছিলেন শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব ওয়াসিম আহমেদ অনীক ও সাবেক সহসভাপতি নবীনুর রহমান নবীনসহ কয়েকজন নেতা-কর্মী।
৪ ঘণ্টা আগেরাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করেছে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। এতে ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ডিএমপির মতিঝিল থানায় এ মামলা করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ঢাকা মহানগরের সভাপতি জগদীশ চাকমা।
৫ ঘণ্টা আগেজুলাই গণ-আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরার ডেল্টা হেলথকেয়ার হাসপাতালের সামনে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে পড়ে ছিলেন রিকশাচালক ইসমাইল আলী। হামাগুড়ি দিয়ে নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য সাহায্যের আকুতি জানান তিনি। কিন্তু হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরা দরজা খোলেননি। চিকিৎসাও দেননি। পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে সিঁড়ির
৫ ঘণ্টা আগে