Ajker Patrika

‘ঘুমাতে গেলে কানে আওয়াজ বাজে, মা আমাকে বাঁচাও’

বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি 
রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপি নেতা লাভলু মিয়া হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপি নেতা লাভলু মিয়া হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপি নেতা লাভলু মিয়াকে (৫০) হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১টার দিকে উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের পাকের মাথা এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়।

এলাকাবাসীর আয়োজনে ঘণ্টাব্যাপী চলা ওই মানববন্ধনের নেতৃত্ব দেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সরকার। বক্তব্য দেন নিহত লাভলু মিয়ার স্ত্রী রায়হানা, ছেলে রায়হান মিয়া, মেয়ে লাবনী, সাবেক বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির মানিক, আবুজার গফফারী, এনামুল হক প্রমুখ। মানববন্ধনে পাঁচ শতাধিক এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন। লাভলু মিয়া উপজেলার মধুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সমাজকল্যাণ সম্পাদক ছিলেন।

মানববন্ধনে লাভলুর স্ত্রী রায়হানা বলেন, ৫ এপ্রিল দিনদুপুরে প্রকাশ্যে কুকুরের মতো পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে।

লাভলুর ছেলে মামলার বাদী রায়হান মিয়া বলেন, ‘আমার বাবাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ছয় দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ প্রশাসন এখন পর্যন্ত মূল আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। পুলিশ চাইলে এত দিন লাগত না বাবার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে। কিন্তু আসামিপক্ষের টাকার কাছে পুলিশ প্রশাসন বিক্রি হয়ে গেছে। এ কারণে পুলিশ মূল আসামিদের ধরছে না।’

লাভলুর মেয়ে লাবনী বলেন, ‘বাবা আমাদের বটগাছ ছিলেন। কী অপরাধ করেছিলেন আমার বাবা? তাঁকে কেন এভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হলো? এভাবে তো কেউ কুকুরকেও মারে না।’ লাবনী বলেন, ‘আজ সাত দিন ধরে রাতে ঘুমাতে পারছি না। ঘুমাতে গেলে কানে আওয়াজ বাজে, মা আমাকে বাঁচাও।’

ওই মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেওয়া মোশারফ হোসেন সরকার বলেন, লাভলুকে নৃশংসভাবে যাঁরা হত্যা করেছেন, তাঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। তা না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপি নেতা লাভলু মিয়া হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপি নেতা লাভলু মিয়া হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক বিএনপি নেতা এনামুল হক বলেন, ‘মানিক চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে লাভলুসহ কয়েকজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। এতে লাভলু মারা যায়। আমরা লাভলুর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে ফাঁসি দাবি করছি।’

বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, এজাহারভুক্ত একজনসহ ওই ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

জানতে চাইলে আসামিপক্ষের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন ওসি।

৫ এপ্রিল দুপুরে বদরগঞ্জে একটি দোকানের ভাড়া দেওয়া–নেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত লাভলু মিয়া নিহত হন। ৭ এপ্রিল বদরগঞ্জ থানায় নিহত লাভলুর ছেলে রায়হান মিয়া বাদী হয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক (৫০), তাঁর ছেলে তানভীর আহম্মেদ তমাল (৩২), বদরগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি সারোয়ার জাহান মানিকসহ (৫৫) ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০০-১৫০ জনকে আসামি করে বদরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত