সিলেটে ১৫ লাখ মানুষ পানিবন্দী

সিলেট প্রতিনিধি
Thumbnail image

জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলা প্রশাসনের গত বৃহস্পতিবারের রাতের তথ্য অনুযায়ী, জেলার ১৩ উপজেলার মধ্যে ১০ উপজেলার ৮৬ ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী অবস্থায় আছেন ১৫ লাখ মানুষ।

নগরীর বন্যা পরিস্থিতিও অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল নগরীতে নতুন কোনো এলাকা প্লাবিত হয়নি। তবে বন্যাকবলিত এলাকায় পানি কমেওনি। বন্যা দীর্ঘায়িত হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।    

এদিকে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে পাহাড়ি ঢলে সুরমা ও কুশিয়ারার উৎসস্থলের একটি ডাইক ভেঙে জকিগঞ্জ উপজেলার চারটি ইউনিয়ন তলিয়ে যায়। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন আরও লক্ষাধিক মানুষ। ভারতের আসাম থেকে বরাক নদী জকিগঞ্জের অমলসিদে এসে দুই ভাগ হয়ে সুরমা ও কুশিয়ারায় পরিণত হয়েছে। তিন নদীর এই মোহনায় ভাঙনের ফলে সুরমা-কুশিয়ারার তীরবর্তী জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, কানাইঘাট, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও নগরের পানি আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নগরীতে বন্যাদুর্গত এলাকায় দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বিশুদ্ধ পানি, খাবার ও স্যানিটেশন সংকট প্রবল আকার ধারণ করেছে। সঙ্গে বিদ্যুৎ, গ্যাসের ভোগান্তি তো রয়েছেই। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে ১৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আরও কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হচ্ছে বলে বলে জানিয়েছে সিসিক। নগরীর ১০ নম্বর ওয়ার্ড পুরোটাই সুরমা নদী তীরবর্তী। এই ওয়ার্ডে তিনটি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে সিসিক। আশ্রয়কেন্দ্রের বাইরে এই ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় কয়েক হাজার মানুষ চার দিন ধরে পানিবন্দী রয়েছেন। একই অবস্থা নগরীর অন্য বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতেও।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে গতকাল শুক্রবার বিকেল তিনটায় ছিল ১৩.৬৯ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে পানির ডেন্জার লেভেল ১২.৭৫ সেন্টিমিটার। সিলেট পয়েন্টে সুরমার পানি বিকেল তিনটায় ছিল ১১.১২ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে পানির ডেন্জার লেভেল ১০.৮০ সেন্টিমিটার। কুশিয়ারা নদীর পানি বিকেল তিনটায় ছিল ১৭.০৭। এই পয়েন্টে পানির ডেন্জার লেভেল ১৫.৪০ সেন্টিমিটার। কুশিয়ারা নদীর পানি শেওলা পয়েন্টে দুপুর ১২টায় ছিল ১৩.৬৩ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে পানির ডেন্জার লেভেল ১৩.০৫ সেন্টিমিটার। কুশিয়ারা নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিকেল তিনটায় ছিল  ৯.৭২ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে পানির ডেন্জার লেভেল হচ্ছে ৯.৪৫ সেন্টিমিটার। 
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের উপসহকারী প্রকৌশলী নিলয় পাশা বলেন, জকিগঞ্জে তিন নদীর মোহনার বাঁধ ভাঙায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। এখন পর্যন্ত ৩০-৩৫টি জায়গায় বাঁধ ভেঙে গেছে। যে বেগে পানি ঢুকছে, তাতে সবগুলো বাঁধই ঝুঁকিতে রয়েছে। পানি না কমলে এগুলো সংস্কার করাও যাবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত